মসিউর রহমান
স্কুলশিক্ষিকার পরে ডেঙ্গিতে এ বার এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হল দেগঙ্গায়। তাঁর নাম মসিউর রহমান (৪২)। তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গির জীবাণু এনএস১ পজিটিভের উল্লেখ করা হয়েছে। গত বছর ডেঙ্গি আর অজানা জ্বরে দেগঙ্গা-সহ উত্তর ২৪ পরগনায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এ বার যে-দেগঙ্গাকে পাইলট প্রজেক্ট করে রাজ্য সরকার দুই মন্ত্রীকে দিয়ে কয়েক দিন আগেই ডেঙ্গি প্রতিরোধ শিবির করেছে, সেখানেই ডেঙ্গিতে ফের মৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
দেগঙ্গার হাদিপুর-ঝিকরা১ পঞ্চায়েতের হাতিপাড়ার একটি কারখানার মালিক মসিউর জ্বরে পড়েন ২৭ সেপ্টেম্বর। সোমবার তাঁকে বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁর আত্মীয় রফিকুল ইসলামের অভিযোগ, ‘‘বিকেলে চিকিৎসক ছুটি দিয়ে বাড়ি নিয়ে যেতে বলেন। আমরা বলি, রোগী তো বসতেও পারছে না। কী করে ছুটি দিচ্ছেন? সন্ধ্যা নাগাদ জানানো হয়, রোগীর অবস্থা ভাল নয়।’’ আরজি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় মসিউরকে। পথে মসিউরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে বাগুইআটির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। তাঁর রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মেলে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেখানেই মারা যান মসিউর। তাঁর স্ত্রী ফতেমা বিবি বলেন, ‘‘এত বড় বড় কথা বলেও সরকারি হাসপাতাল তো ধরতেই পারল না যে, ওঁর ডেঙ্গি হয়েছে। সময়মতো চিকিৎসা পেলে ওঁকে মরতে হত না। মেয়ে দু’টোকে নিয়ে আমি যে কী করব!’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বার জার্মানি সফরে গিয়ে সেখান থেকেই দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে নির্দেশ দেন, দেগঙ্গাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ডেঙ্গি প্রতিরোধে নামতে হবে। তার পরেই বেড়াচাঁপায় বিশাল অনুষ্ঠান করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেগঙ্গায় ডেঙ্গিতে আর মৃত্যু নয়।’’ ঝাড়ু হাতে বারাসত-টাকি রোড সাফাইয়ে নামেন দুই মন্ত্রী এবং বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। মসিউরের ভাই আব্বাসউদ্দিন বলেন, ‘‘প্রচারই সার। প্রতিরোধের কাজ হয়নি। সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গির চিকিৎসা হবে না কেন?’’ বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক ছিল। তাঁকে কিছুটা সুস্থ্ করেই স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy