পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন শান্তিবাবুকে এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপদেষ্টার পদে নিয়োগ করে সরকার।
যোগেশ চৌধুরী কলেজে গণিত শেখাতেন তিনি। বঙ্গে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে সেই গণিত শিক্ষক শান্তিপ্রসাদ সিংহকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদে সচিবের পদে নিয়োগ করেছিল তৃণমূল। সেই পর্বের পরেও সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হয়নি শান্তিবাবুর। পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন শান্তিবাবুকে এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপদেষ্টার পদে নিয়োগ করে সরকার। গত ৩১ জুলাই পর্যন্ত ওই পদেই ছিলেন তিনি।
রাজ্যের শিক্ষা দফতরে কান পাতলে গণিত শিক্ষকের এমনই উত্থানের কাহিনি শোনা যায়। তিনি রাজ্য সরকারের কতটা ঘনিষ্ঠ, তা নিয়েও নানা আলোচনা চলে। শাসক-ঘনিষ্ঠতার সূত্রেই তিনি বিভিন্ন কলেজের পরিচালন সমিতিতে ঠাঁই পেতেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। আবার সেই ঘনিষ্ঠতাই শান্তিবাবুকে বর্তমানে স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিতর্কের কেন্দ্রে এনে ফেলেছে কি না, সেই বিষয়েও জল্পনা কিছু কম নয়।
শুক্রবার শান্তিবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন কেটে দিয়েছেন। মেসেজেরও উত্তর দেননি।
স্কুলশিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে শান্তিবাবুর আবির্ভাব নিয়েও বিতর্ক প্রবল। সেটা ২০১৯ সালের মার্চ। তখন কলকাতার প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন চলছিল নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের জন্য তৈরি মেধা-তালিকাভুক্ত চাকরিপ্রার্থীদের। ২৯ দিনের মাথায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতিতে অনশন ভাঙে। মুখ্যমন্ত্রী হবু শিক্ষকদের মধ্য থেকে পাঁচ জন প্রতিনিধি ঠিক করেন এবং সরকারি তরফের পাঁচ প্রতিনিধিকে নির্বাচন করে নিয়োগের বিষয়টি সমাধান করার নির্দেশ দেন। সরকারের তরফে যে-পাঁচ প্রতিনিধি সেই কমিটিতে ছিলেন, শান্তিবাবু তাঁদের অন্যতম। পদাধিকারবলে তখন তিনি স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপদেষ্টা। শান্তিবাবুকে কেন ওই কমিটিতে রাখা হল, তখনও সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের অনেকে।
চাকরিপ্রার্থীরা জানান, মেধা-তালিকার অনুক্রম না-মেনে নিয়োগের অভিযোগ উঠেছিল সেই সময়েও। পরে সেই অভিযোগই আদালতে জমা পড়ে। প্রকাশ ঘোষ নামে এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু সৎ উদ্দেশেই এই কমিটি গঠন করেছিলেন। কিন্তু আন্দোলনকারীদের সমস্যার সমাধান তো হলই না, উল্টে মেধা-তালিকার নীচে থাকা প্রার্থীরা কী ভাবে চাকরি পেলেন, তা আজও অজানা। তখনও আমরা এসএসসি-র দফতরে গিয়ে তার উত্তর জানার চেষ্টা করেছিলাম। কারণ ওই সরকারি কমিটিতে শান্তিবাবু ছিলেন এবং তিনি তখন এসএসসি-র উপদেষ্টা। কিন্তু আমরা কোনও উত্তর পাইনি।’’ ৩৮৩ দিন ধরে চাকরির দাবিতে আন্দোলন করছেন প্রকাশ এবং তাঁর বন্ধুরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy