Advertisement
E-Paper

দলবদলের উত্তুরে হাওয়া, অশোকের ভরসা কংগ্রেসই

ফরওয়ার্ড ব্লকের কাউন্সিলর দুর্গা সিংহ তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে এখন বোর্ড বাঁচাতে শিলিগুড়িতে কংগ্রেসই ভরসা অশোক ভট্টাচার্যদের। এবং তাঁদের এখনও ভরসাই দিচ্ছেন কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৬ ০২:১০
পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড তথা মেয়র পারিষদ দুর্গা সিংহ তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। — বিশ্বরূপ বসাক

পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড তথা মেয়র পারিষদ দুর্গা সিংহ তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। — বিশ্বরূপ বসাক

ফরওয়ার্ড ব্লকের কাউন্সিলর দুর্গা সিংহ তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে এখন বোর্ড বাঁচাতে শিলিগুড়িতে কংগ্রেসই ভরসা অশোক ভট্টাচার্যদের। এবং তাঁদের এখনও ভরসাই দিচ্ছেন কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকার। তাঁর কথার উপরে ভিত্তি করে সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকারও জানিয়েছেন, এখনই বোর্ড পতনের আশঙ্কা নেই।

তবে কংগ্রেসের মধ্যেও যে অন্য সুর নেই, তা নয়। সম্প্রতি মেয়রের সমালোচনায় খোলাখুলিই সরব হয়েছিলেন কংগ্রেস কাউন্সিলর তথা ৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সুজয় ঘটক। প্লাস্টিক-বিরোধী অভিযানের মূল মুখ সুজয়বাবু বর্তমান পুরবোর্ডের প্লাস্টিক নীতি নিয়ে খুশি নন। সে কথা রাখঢাক না করেই জানিয়েছিলেন তিনি। এ দিনও সুজয়বাবু বলেন, ‘‘বোর্ড বাঁচাতে এখন কংগ্রেসকে দরকার বামেদের। অথচ বোর্ড গড়ার সময়ে কংগ্রেসকে ডাকা হয়নি। তখন নির্দল কাউন্সিলরকে নিয়ে বোর্ড গড়েছিল বামেরা। সে সব কথা আমরা ভুলিনি। যাই হোক, আমরা দলের সিদ্ধান্ত মেনেই পা ফেলব।’’

এই অবস্থায়, বোর্ড বাঁচাতে সরাসরি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর দ্বারস্থ হয়েছেন মেয়র অশোকবাবু। শিলিগুড়ি পুরবোর্ডে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য দরকার ২৪ জন। এ দিন বামেরা কমে ২২ হয়ে গেল। অশোকবাবুর দাবি, ‘‘প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।’’ শঙ্কর মালাকারও বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসের কোনও কাউন্সিলর তৃণমূলে যাবেন না। প্রদেশ সভাপতি বলেছেন, আমরা বামেদের পুরবোর্ডকে সমর্থন করব।’’

শিলিগুড়ি পুরবোর্ডের টালমাটাল অবস্থা নিয়ে সরব সব রাজনৈতিক দলই। কংগ্রেসের জেলা নেতারা অভিযোগ করেছেন, পুরভোটে, মহকুমা পরিষদের ভোটে, বিধানসভা ভোটে শিলিগুড়িতে হারলেও তৃণমূলের ক্ষমতাসীন হতে চাওয়াটা অনেকেই মানতে পারবেন না। ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সভাপতি করুণাময় রায়চৌধুরীর অভিযোগ, তৃণমূল যে ভাবে বিরোধী দলের কাউন্সিলর, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের টানছে, তা সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি নয়। এ দিন সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী, আরএসপি’র জেলা নেতা তাপস গোস্বামীরা জানান, তাঁরা বিষয়টি নিয়ে শহর ও গ্রামে প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বামেদের বাকি কাউন্সিলররা একজোট হয়ে দাবি করেন, তাঁরা কোনও অবস্থাতেই দলত্যাগ করবেন না। যদিও তৃণমূল দাবি করেছে, বাম বোর্ডের বেশ কয়েক জনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে।

শিলিগুড়িতে পুরভোটের পরে বোর্ড গঠনের আগেও নাটক কম হয়নি। কাউন্সিলর ছিনতাই হয়ে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় সবাইকে নিয়ে অশোকবাবু অজ্ঞাতবাসে গিয়েছিলেন। যে নির্দল সদস্যের সমর্থনে বোর্ড গঠন করে বামেরা, সেই অরবিন্দ ঘোষকে নিয়েও কম টানাপড়েন হয়নি। আবার সম্প্রতি শিলিগুড়িতে বোর্ড ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও জল্পনা কম হয়নি। কিন্তু এ ভাবে পুরবোর্ড দখলের চেষ্টাকে ভাল ভাবে দেখছেন না রাজনৈতিক নেতারা। কলেজ শিক্ষক তথা সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-এর দার্জিলিং জেলা সম্পাদক অভিজিৎ মজুমদার বলেন, ‘‘কোনও একটা দলের টিকিটে নির্বাচনে জিতে সেই দল ছেড়ে যাওয়ায়া মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার সামিল। আইন করেই এই প্রবণতা বন্ধ করা দরকার।’’

এ দিন যিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, সেই দুর্গা সিংহ অবশ্য বলেন, ‘‘উন্নয়নের কাজ করতে অসুবিধে হচ্ছে। সেই কাজটা ভালভাবে করতে চাই বলেই তৃণমূলে যোগ দিলাম।’’ পুরসভায় বিরোধী দলনেতা নান্টু পালও বলেছেন, ‘‘পুরবোর্ড যাঁরা চালাচ্ছেন তাদের অনেকেই বুঝতে পারছেন, যে উন্নয়নের কাজ হচ্ছে না।’’

ashok bhattacharya TMC Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy