অবশেষে শিকে ছিঁড়ল কলকাতা হাইকোর্টের। হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগের পড়ে থাকা ফাইলটিকে ছাড়পত্র দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
গত কয়েক মাস ধরে কলকাতার বিচারপতিদের প্যানেলে নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক চলছিল। হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট আবার সুপ্রিম কোর্ট থেকে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক, সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর দফতর পর্যন্ত ফাইলটি পৌঁছয়। তার পরে দীর্ঘ দিন ধরে নড়নচড়ন ছিল না ফাইলটির। মুম্বই বা চেন্নাইয়ের মতো একাধিক রাজ্যের হাইকোর্টের প্যানেল ছাড়পত্র পেলেও কলকাতার ভাগ্য ঝুলেই ছিল। অবশেষে শিকে ছিঁড়ল মঙ্গলবার।
এত দেরির কারণ কি?
কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক সূত্রের খবর, প্রথা অনুসারে হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগের ব্যাপারে কলেজিয়ামের মাধ্যমে কেন্দ্রের কাছে নামের তালিকা আসে। তার পর সেটি সরকারের কাছ থেকে অনুমোদিত হয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতের কাছে ফিরে যায়। সরকার কলেজিয়ামের পাঠানো নাম পরিবর্তন করতে পারে না। কিন্তু পুনর্বিবেচনার জন্য আদালতের কাছে ফেরৎ পাঠাতে পারে। আইন মন্ত্রকের একটি সূত্রের দাবি, কলকাতা হাইকোর্টের প্যানেলের দু’-তিনটি নাম নিয়ে আরএসএস তথা সঙ্ঘ পরিবার আপত্তি তোলে। তারা তাদের পছন্দের নাম ঢোকাতে চায় বলেও অভিযোগ ওঠে। এই টানাপড়েনেই বিচারপতিদের নিয়োগ ঝুলে থাকে।
বিচারপতি নিয়োগে এই বিলম্ব নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে বিক্ষোভ দেখান আইনজীবীরা। কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের কাছে অভিযোগে জানানো হয়, এই দেরির ফলে অন্য রাজ্যের বিচারপতিদের তুলনায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিরা সিনিয়রটির প্রশ্নে পিছিয়ে পড়বেন। ভবিষ্যতে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি মনোনয়নের সময় সিনিয়রিটির প্রশ্নে তাঁদের অসুবিধা হবে। এর মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিদের একটি বেঞ্চ এই দেরি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে একটি শুনানির সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দীর্ঘসূত্রিতার সমালোচনা করেন। সূত্রের খবর, এই সমালোচনায় ক্ষুব্ধ হয় প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়। আইন মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকার যে মামলায় শরিক নয় এবং যখন তার কোনও প্রতিনিধি ওই মামলায় উপস্থিত নেই, তখন কোনও বেঞ্চ আগাম নোটিস ছাড়া কেন্দ্রের সমালোচনা করতে পারে না।
তবে কেন্দ্রের এই ভূমিকা নিয়ে নিয়ে সমালোচনা চলছিলই। বিশেষ করে বিচারপতি নিয়োগে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের প্রশ্নটি নিয়েই বেশি আলোচনা হয়। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের মনে হয়, হাইকোর্টের সঙ্গে সংঘাতে না গিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে নেওয়াই ঠিক হবে। সে কারণেই প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় নিজেদের অনড় অবস্থান বদলে ফাইলটিতে ছাড়পত্র দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy