কে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে শান্তিপুর কলেজের অঙ্ক শিক্ষককে শাসিয়েছিল, এখনও তা পরিষ্কার নয়। কিন্তু দলের পান্ডা, টিএমসিপি নেতা মনোজ সরকারকে শেষমেশ গ্রেফতার করল পুলিশ। ধরা হয়েছে সমীর দাস নামে তাঁর এক শাগরেদকেও।
এর আগে যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাদের মতো মনোজের বিরুদ্ধেও অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং হুমকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। শুক্রবার রানাঘাট আদালতে তোলা দু’জনকেই পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মনোজ যে গ্রেফতার হতে পারেন তার আঁচ মিলেছিল বুধবারই, যে দিন টিএমসিপির শান্তিপুর শহর সভাপতি পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। গোলমালে জড়ানোর কারণেই তাঁকে সরানো হয়েছে বলে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। পুলিশের দাবি, বৃহস্পতিবার রাতে মনোজ বাড়ি ফেরার চেষ্টা করলে তাঁকে পাকড়াও করা হয়। যদিও পুলিশ সত্যিই তাঁকে ধরেছে, নাকি তিনিই থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেছেন, তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান।
গত ২৯ অগস্ট নদিয়ার শান্তিপুর কলেজের স্টাফরুমে ঢুকে অঙ্ক শিক্ষক অমরজিৎ কুণ্ডুকে মারধর করে এক দল যুবক। এক জন আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে খুনের হুমকিও দেয়। ওই ঘরে কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকলেও পরে অধ্যক্ষার ঘরে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে এদের বেশ কয়েক জনকে দেখা হইচই করতে দেখা যায়। তাদের মধ্যমণি ছিলেন ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মনোজ। কলেজের তরফে দায়ের করা অভিযোগে কারও নাম না দেওয়া হলেও পরের দিনই বেপাত্তা হয়ে যান মনোজ। তবে ওই সময়েই তিনি ফোনে আনন্দবাজারকে জানিয়েছিলেন, কয়েক দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে পারেন।
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য শান্তনু চক্রবর্তীর দাবি, “পুলিশ কী গল্প বলছে, জানি না। কিন্তু আমাদের কাছে নির্দিষ্ট খবর হল, মনোজ রাতে নিজেই থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে ধরা দিয়েছে।” পুলিশ যদি মনোজকে সত্যিই ধরে থাকে, কোন সূত্র ধরে তাঁর খোঁজ মিলল? জেলার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া শুধু বলেন, “তদন্তে যেমনটা উঠে এসেছে সেই মতোই পদক্ষেপ করা হয়েছে।”