ইন্টারভিউ— জীবনের সব থেকে বড় পরীক্ষা। স্কুলের পরীক্ষায় থাকে শুধু ভাল ফলের আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু চাকরির প্রত্যাশায় দেওয়া ইন্টারভিউয়ের উপর নির্ভর করে রোজগার, বেঁচে থাকার পথ। সেখানে নিজের সবটা উজাড় করে দিতে চান প্রত্যেক প্রার্থীই। তবু, সমযোগ্যতা, এমনকি কম যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কোনও কোনও ব্যক্তির স্বপ্রতিভতা ছাপিয়ে যায় প্রতিদ্বন্দ্বীকে। সেখানেই বাজিমাত।
অন্য দিকে, ইন্টারভিউয়ের সময় কোথায় খামতি থেকে যাচ্ছে, তা বুঝে উঠতে পারেন না অনেকে। এই প্রতিবেদনে ইন্টারভিউয়ের সময় কোন কোন প্রধান দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন, তা আলোচনা করা হল।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ইন্টারভিউয়ের সর্বপ্রথম ধাপ সময়জ্ঞান এবং পরিচ্ছন্ন পোশাক। সঠিক সময় বা তার খানিক আগে ইন্টারভিউ স্থানে পৌঁছে গেলে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়। এ ছাড়াও থাকে কিছু বিষয়। দেখে নেওয়া যাক এক নজরে—
নিজের সম্পর্কে বলা—
বেশির ভাগ ইন্টারভিউয়ে প্রথমেই খুব সাধারণ এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়— নিজের সমন্ধে কিছু বলা। এই পর্বে অনেকেই নিজের ব্যক্তিগত জীবন বা আগে কী কী করেছেন, তা বলতে থাকেন। কিন্তু, ইন্টারভিউ আকর্ষণীয় করে তুলতে চাইলে আগামী কাজ নিয়ে কথা বলাই ভাল।
ইন্টারভিউ নিচ্ছেন যিনি, তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে শুরু করা যেতে পারে। যে পদের জন্য প্রার্থী আবেদন করেছেন, সেখানে তিনি কতটা মানানসই তা নিজেকেই জানিয়ে দিতে হবে, তবে সংযত ভাবে। ওই কাজ সম্পর্কে তিনি কী কী জানেন তা-ও বুঝিয়ে দিতে হবে।
আবার ওই পদ বা কাজ সম্পর্কে সম্মক জ্ঞান না থাকলে বুঝিয়ে দিতে হবে, সংস্থায় যোগ দিয়ে নতুন কাজ শিখে নেওয়ার বিষয়ে তিনি কতটা আগ্রহী।
সংস্থার বিষয়ে প্রার্থী কতখানি জানেন তা-ও জানিয়ে রাখা প্রয়োজন। এর ফলে প্রার্থী সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হয় প্রথমেই।
প্রশ্নের উত্তর কোনও নেতিবাচকতা নয়—
যে কোনও প্রশ্নের উত্তরই দিতে হবে আত্মবিশ্বাসী ভাবে। বিশেষজ্ঞেরা মনে করে, সব প্রশ্নের উত্তর জানা না-ও থাকতে পারে। কিন্তু তেমন যদি ঘটে, তা হলেও একেবারে মুখের উপর ‘জানি না’ বলে দেওয়া সমীচীন নয়। বরং যতটুকু জানা, সেটুকুই বলা যেতে পারে।
তবে মনে রাখতে হবে, পরিস্থিতি এমন ভাবেই সামলাতে হবে যাতে কখনও মনে না হয়, প্রার্থী চালাকি করছেন। চিন্তিত না হয়ে নিজেকে শান্ত রাখতে হবে।
পাল্টা প্রশ্নের সুযোগ—
ইন্টারভিউয়ের একেবারে শেষ পর্যায়ে আসে আরও একটি প্রশ্ন, যেখানে জানতে চাওয়া হয় প্রার্থীর কিছু জানার আছে কি না। এর উত্তর দেওয়ার সময় অহেতুক সময় নষ্ট না করাই ভাল। প্রার্থী যদি আগে থেকে সংস্থা ও পদ সম্পর্কে খানিকটা জেনে আসেন, তা হলে কিছু প্রশ্ন আগে থেকেই মাথায় ঘুরতে থাকে। আবার ইন্টারভিউ চলাকালীনও কিছু বিষয়ে মাথায় আসতে পারে। তবে গোটা প্রক্রিয়ায় খুব উদ্বেগ বা চাপ অনুভব করলে কর্মকর্তাকে কোনও প্রশ্ন করার কথা মাথায় না-ও আসতে পারে। তাই নিজেকে খানিকটা চাপমুক্ত রাখার চেষ্টা করতেই হবে।