Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কেন্দ্রে প্রথম মন্ত্রী, মিষ্টি-আবিরে মাতল শহর

তাঁর হয়ে ভোটের প্রচারে এসে নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, “মুঝে পার্লামেন্ট মে বাবুল চাহিয়ে।” সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আসানসোলের মানুষ সংসদে পাঠিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়কে। প্রথম বার ভোটে দাঁড়িয়েই সাংসদ হয়ে গিয়েছেন বাবুল। আর তাঁর হাত ধরেই রবিবার প্রথম কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পেয়ে গেল আসানসোল। জল্পনাটা আগে থেকেই ছিল। তাই এ দিন সকাল থেকেই তৈরি ছিলেন বিজেপি-র নেতা-কর্মীরা। নানা জায়গায় টিভি-র ব্যবস্থা করা হয়েছিল শপথগ্রহণ দেখার জন্য।

আসানসোলের রাস্তায় উল্লাস। ছবি: শৈলেন সরকার।

আসানসোলের রাস্তায় উল্লাস। ছবি: শৈলেন সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৪০
Share: Save:

তাঁর হয়ে ভোটের প্রচারে এসে নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, “মুঝে পার্লামেন্ট মে বাবুল চাহিয়ে।”

সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আসানসোলের মানুষ সংসদে পাঠিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়কে। প্রথম বার ভোটে দাঁড়িয়েই সাংসদ হয়ে গিয়েছেন বাবুল। আর তাঁর হাত ধরেই রবিবার প্রথম কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পেয়ে গেল আসানসোল।

জল্পনাটা আগে থেকেই ছিল। তাই এ দিন সকাল থেকেই তৈরি ছিলেন বিজেপি-র নেতা-কর্মীরা। নানা জায়গায় টিভি-র ব্যবস্থা করা হয়েছিল শপথগ্রহণ দেখার জন্য। বাবুল কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে না নিতেই উল্লাসে মাতলেন তাঁরা। শুধু বিজেপি-র লোকজন নন, সেই উল্লাসে সামিল হলেন সাধারণ মানুষজনও। কোথাও বিলি হল মিষ্টি, কোথাও আবার দেদার আবির খেলায় মাতলেন বাসিন্দারা। আসানসোলে এলে বাবুল মহিশীলার যে ভাড়া নেওয়া আবাসনে থাকেন, সেটির মালিক জয়ন্ত ভাদুড়ি এ দিন বলেন, “ভোটে প্রার্থী হয়ে এসে প্রথম যখন আমার ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন বাবুল, এক জন এত বড় সঙ্গীত শিল্পী থাকবেন ভেবে রোমাঞ্চিত হয়েছিলাম। তার পরে তিনি সাংসদ হওয়ায় খুশি হয়েছিলাম। আজ তিনি এক জন কেন্দ্রের মন্ত্রী। আমার কাছে গোটা ব্যাপারটা স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে!”

বাবুল আসানসোলে প্রথম যখন আসেন, তাঁর থাকার জন্য নির্ধারিত হোটেলটি নিয়ে শেষ মুহূর্তে কিছু বিতর্ক তৈরি হয়। সেখানে না থেকে বাবুল ওঠেন অন্য একটি হোটেলে। এই হোটেলটির মালিক মিঠু ঘাঁটি এ দিন বলেন, “উনি তার পরে আমার হোটেলে ছিলেন। আমার সঙ্গে খুব ভাল সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে। আজ সকাল থেকেই আমরা এলাকার লোকজন একটা টিভি-র বন্দোবস্ত করে নজর রেখেছিলাম। শ’দেড়েক মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। বাবুল যখন শপথ নিলেন সবাই উল্লাসে ফেটে পড়ছিলেন।”


কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বাবুলের ঠাঁই পাওয়ার খবর পেয়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উল্লাস।
রবিবার শৈলেন সরকারের তোলা ছবি।

বিজেপি-র আসানসোল জেলা সম্পাদক প্রশান্ত চক্রবর্তী জানান, আগে থেকে ইঙ্গিত মেলায় এ দিনের জন্য নানা রকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন তাঁরা। বাবুলের শপথগ্রহণ দেখার জন্য টিভি-র বন্দোবস্ত হয়েছিল অনেক জায়গাতেই। শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাততালিতে ফেটে পড়ে এলাকা। কুলটির অগ্রসন ভবন ও লাগোয়া এলাকায় স্থানীয় মানুষজন টিভি-র ব্যবস্থা করেছিলেন। মহিশীলায় বাবুল এলে যেখানে থাকেন সেই এলাকায় এ দিন বিকেলে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। জামুড়িয়ার গ্রামীণ এলাকা, রানিগঞ্জ শহরেও বাবুলের মন্ত্রী হওয়া নিয়ে রীতিমতো উদ্দীপনা ছিল এ দিন। আসানসোলের গির্জা মোড় থেকে বিকেলে কয়েকশো মানুষের একটি মিছিল বের করে বিজেপি। কসাই মহল্লা থেকে বিজেপি-র পতাকা হাতে মিছিল দেখা যায়। সালানপুর, বারাবনিতেও উচ্ছ্বাসে মাতেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। আসানসোল বাজার ও নিয়ামতপুর বাজারে উদ্দীপনা ছিল সবচেয়ে বেশি। আবির খেলা, বাজি পোড়ানোয় মেতে ওঠেন মানুষজন।

মন্ত্রী বাবুলকে নিয়ে নানা আশায় বুক বাঁধতেও শুরু করে দিয়েছে এই শিল্পাঞ্চল। অধীর গুপ্ত নামে এক ক্ষুদ্র শিল্পপতি বলেন, “আসানসোল মূলত শিল্পাঞ্চল। কিন্তু, এখানকার শিল্পতালুকের অবস্থা খুব খারাপ। মন্ত্রী হয়ে বাবুল সুপ্রিয় এখানকার শিল্পাঞ্চলের জন্য কিছু করবেন, এটাই এখন আমাদের তাঁর কাছ থেকে প্রত্যাশা।” শহরের সাংস্কৃতিক কর্মী মলয় সরকারের বক্তব্য, “এক সময়ে এই এলাকা সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে রীতিমতো সমৃদ্ধ ছিল। আমরা আশা করব, তা ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের সাংসদ সচেষ্ট হবেন।” কলকাতা ময়দানের প্রাক্তন ফুটবলার তথা আসানসোলের বাসিন্দা বিশ্বজিত্‌ দাস বলেন, “এখানে এখন খেলাধুলোর মান নিম্নগামী। মাঠের অবস্থা ভাল নয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে বাবুল যদি কিছু করেন, সেই আশায় আছি আমরা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE