Advertisement
E-Paper

শোভনের সঙ্গে সম্পর্কের জের, বৈশাখীকে ছেঁটে দিল তৃণমূল

তদানীন্তন সভাপতি কৃষ্ণকলি বসুর সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের  বিবাদের জেরেই নেতৃত্ব কমিটি ভাঙতে বাধ্য হয়েছিলেন বলে তৃণমূল সূত্রে খবর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৭:৫৪
তৃণমূল শিক্ষা সেল ওয়েবকুপা থেকে ছেঁটে ফেলা হল বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

তৃণমূল শিক্ষা সেল ওয়েবকুপা থেকে ছেঁটে ফেলা হল বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

খেসারত দিতে হল বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কলেজ শিক্ষিকা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছিল খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে। প্রকাশ্যে ভর্ৎসিত হয়েছিলেন শোভন। তাঁর নিরাপত্তাও ছাঁটা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর বিরক্তির কারণেই, খবর তৃণমূল সূত্রে। এ বার ছেঁটে ফেলা হল বৈশাখীকে। শাসকদলের শিক্ষা সেল থেকে বাদ পড়লেন বৈশাখী। তৃণমূলের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার নতুন রাজ্য কমিটি গঠিত হল। ৬৫ জনের সেই কমিটিতে ঠাঁই-ই পেলেন না বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। ৬ মাস আগেও বৈশাখী কিন্তু ওয়েবকুপার সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন।

ছ’মাসের মাথায় বৃহস্পতিবার পুনর্গঠিত হয় ওয়েবকুপা-র রাজ্য কমিটি। শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল শিক্ষা সেলের চেয়ারম্যান পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূল ভবনে ওয়েবকুপা-র সাধারণ সভা ডাকা হয়েছিল। ১৩০ জনকে নিয়ে সভা হয়। সেই সভাতেই ৬৫ জনের কমিটি চূড়ান্ত করা হয়। পরে পার্থবাবু বলেন, ‘‘কৃষ্ণকলি বসুই ফের স্থায়ী সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন।’’

মাস ছয়েক আগে ওয়েবকুপার কমিটি ভেঙে দিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। তদানীন্তন সভাপতি কৃষ্ণকলি বসুর সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবাদের জেরেই নেতৃত্ব কমিটি ভাঙতে বাধ্য হয়েছিলেন বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। সেই কমিটি নতুন করে গড়ে দেওয়া হল। কিন্তু, সব ক্ষমতা কৃষ্ণকলি বসুর হাতেই সমন্বিত হল। কৃষ্ণকলির বিরোধী শিবির হিসাবে পরিচিত বৈশাখী-গোবিন্দরা কমিটির বাইরে নিক্ষিপ্ত হলেন। তৃণমূল শিক্ষা সেলের একটি অংশের মত, শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী একাধিক বার বিরূপ মন্তব্য করেছেন বলেই এই দিন দেখতে হল বৈশাখীকে। কলেজ শিক্ষিকা বৈশাখীর সঙ্গে নিজের দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক সহকর্মী কাননের সম্পর্ককে তৃণমূলনেত্রী যে মোটেও ভাল চোখে দেখছেন না, তা বুঝতে দলের কারও বাকি ছিল না। ফলে কৃষ্ণকলি-বৈশাখী বিবাদে কৃষ্ণকলির পাল্লাই ভারী হয়ে গিয়েছিল বলে অনেকে মনে করছেন।

আরও পড়ুন: প্রশ্নপত্র ফাঁসে গ্রেফতার হতে চাইছি আমিই

বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

ওয়েবকুপার নতুন রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়ার পরে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া পরিশীলিত কিন্তু বেশ কড়া। তিনি বলেন, ‘‘গত ৮ মার্চ সর্বোচ্চ নেতৃত্বের তত্বাবধানে যে বৈশাখী-নিধন যজ্ঞ শুরু হয়েছিল, ৬ সেপ্টেম্বর তার সমাপন হল। সংগঠনের কমিটি এমন হওয়া উচিত, যাতে সব অংশের মতামতের প্রতিফলন থাকে। কিন্তু, যাঁদের দলের সংগঠন, তাঁরা মনে করলেন যে ওয়েবকুপা-কে কৃষ্ণকলি বসুর হাতে উপহার হিসাবে তুলে দেওয়া উচিত। সে রকমই হল। এর পরে আর আমার বলার কী থাকতে পারে!’’

আরও পড়ুন: আমি দায়িত্ব নিচ্ছি, আমডাঙায় বললেন অভিষেক, তীব্র কটাক্ষ সিপিএমের

তবে বৈশাখীর ইঙ্গিত, এত দিন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর সম্পর্ক নিয়ে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের তরফ থেকেও যে ভাবে নানা তির্যক মন্তব্য করা হয়েছে, পরবর্তী কালে সে রকম কোনও মন্তব্য এলে তিনি চুপ থাকবেন না। মিল্লি আল আমিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা কারও নাম উচ্চারণ করেননি। তবে বলেছেন, ‘‘এত দিন তৃণমূলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ভাবে আমার একটা সম্পর্ক ছিল। বৃহস্পতিবার থেকে সেই সম্পর্কেও যবনিকা পড়ে গিয়েছে। আশা করি, এর পরে আমাকে শান্তিতে থাকতে দেওয়া হবে। যদি তা না হয়, যদি এর পরেও আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের তরফ থেকে কোনও মন্তব্য আসে, তা হলে জবাবটা যে ভাবে দিতে হয়, সে ভাবেই দেব।’’

Baishakhi Banerjee WBCUPA Sovan Chatterjee বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় শোভন চট্টোপাধ্যায় ওয়েবকুপা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy