রাতের খড়্গপুর শহরে একদল মত্ত যুবকের হামলার কারণে মৃত্যু হয়েছিল সিভিক ভলান্টিয়ার তুলসী রাও (উদয়)-এর। গত রবিবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি ছিল, সংখ্যাগুরু হওয়ার কারণে প্রাণ হারাতে হয়েছে তুলসীকে। তাঁর দাবি, এই ঘটনায় যুক্ত এক তৃণমূল কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠেরা। সোমবারে দোষীদের গ্রেফতারির দাবিতে আসরে নামল তৃণমূল। শুভেন্দুর মন্তব্যের বিরোধিতা করাও হয় তৃণমূলের তরফে। অপরাধীদের গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছে সিপিএমও।
গত ১৬ ডিসেম্বর রাত্রি ২টো নাগাদ বন্ধুদের সঙ্গে চা খেতে গিয়ে মত্তদের হাতে গুরুতর জখম হয়েছিলেন খড়্গপুর টাউন থানায় কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ার তুলসী। শনিবার ২৭ ডিসেম্বর কটকের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় দু’জন মূল অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে খড়্গপুর টাউন থানার পুলিশ। বাকি চারজন ভিন্রাজ্যে পালিয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন খড়্গপুরের এসডিপিও ধীরজ ঠাকুর। তিনি এ-ও জানিয়েছেন, আগামী দু’দিনের মধ্যে তাঁদের গ্রেফতার করা হবে। সাংবাদিক বৈঠক করে ‘সতর্কবার্তা’ দেওয়া হয়েছে খড়্গপুর টাউন থানা তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের তরফেও।
খুনের ঘটনায় তৃণমূলের এক কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠেরা যুক্ত দাবি করে রবিবার সন্ধ্যায় খড়্গপুর টাউন থানায় বিক্ষোভ দেখান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। তাঁর দাবি, সংখ্যাগুরু বলেই খুন হতে হয়েছে তুলসীকে। সকল দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। আর তার পরেই আসরে নেমে পড়ছে তৃণমূলও।
সোমবার এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুজয় হাজরার নেতৃত্বে খড়্গপুর টাউন থানায় স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। পরে জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নির্মাল্য চক্রবর্তীর নেতৃত্বে শুভেন্দুর মন্তব্যের বিরোধিতা করে মিছিল করা হয়।
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, বিজেপির নেতারাও লাগাতার আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেন। সিপিএমের প্রতিনিধিদলও পুলিশের সঙ্গে দেখা করে। বিকেল নাগাদ খড়্গপুর টাউন থানায় সাংবাদিক বৈঠক করেন এসডিপিও এবং খড়্গপুর টাউন থানার আইসি পার্থসারথি পাল। এসডিপিও বলেন, ‘‘এই ঘটনায় দু’জন মূল অভিযুক্তকে ১৬ ডিসেম্বরেই গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি চারজনের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। আগামী দু’দিনের মধ্যে তাঁদেরও গ্রেফতার করা হবে। কেউ এই ঘটনা নিয়ে সমাজমাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ালে বা সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা করলে কড়া পদক্ষেপ করবে পুলিশ। ৬ জনের নামে অভিযোগ জমা পড়েছে। মৃত্যুর পরে খুনের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।’’