Advertisement
১৮ মে ২০২৪
বক্রেশ্বর-মামলা

জরিমানা থেকে রেহাই সকলকে

নদীতে ছাই ফেলা নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালত ভর্ৎসনা করেছিল বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে। এমনকী, তাদের ৫ কোটি টাকা জরিমানা করা হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছিল কলকাতায় জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বক্রেশ্বর শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৩৯
Share: Save:

নদীতে ছাই ফেলা নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালত ভর্ৎসনা করেছিল বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে। এমনকী, তাদের ৫ কোটি টাকা জরিমানা করা হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছিল কলকাতায় জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চ। তবে ২ অগস্ট বক্রেশ্বর মামলার রায় দিতে গিয়ে ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ তথা রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমকে জরিমানা থেকে রেহাই দিলেন পরিবেশ আদালতের বিচারপতি এসপি ওয়াংদি ও বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের বেঞ্চ।

মামলার শুনানি চলার সময়ে আদালত দূষণ রোধে বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমকে কিছু নির্দেশ দিয়েছিল। সেগুলি মেনে নেওয়ায় আদালত সন্তোষ প্রকাশ করেছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের আইনজীবী নয়ন বিহানি বলেন, ‘‘আদালত আমাদের কাজে সন্তুষ্ট। তাই জরিমানা করা হয়নি।’’

তবে রায় দেওয়ার সময়ে ভবিষ্যতে দূষণ ঠেকাতে ২০১৭ সালের মার্চের মধ্যে ওই কেন্দ্রকে ছাই জমা করার জন্য দ্বিতীয় একটি পুকুর তৈরি করা-সহ কয়েকটি নির্দেশও পরিবেশ আদালত দিয়েছে। মামলাটি যিনি করেন, রাজ্যের পরিবেশকর্মী সেই সুভাষ দত্তকে মামলার খরচ বাবদ ৫০ হাজার টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যদিও এই রায়ের পর সুভাষবাবু বলেন, ‘‘পরিবেশ আদালত এমন রায় দেবে ভাবিনি। মামলার খরচের টাকা নেব না।’’

ছাই ফেলে বক্রেশ্বর ও চন্দ্রভাগা নদীকে দূষিত করেছিল বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। আদালতের নির্দেশে ২০১৫ সালে ওই এলাকা পরিদর্শন করে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান ও নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র জানিয়েছিলেন, শুধু নদীর দূষণই নয়, ছাই ফেলায় নদী দু’টির জীববৈচিত্র্যও লুপ্ত হয়েছে। কবে সে সব ফিরে আসবে, সেটাও তিনি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারেননি। এর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নদীর পাড়ের জনজীবন।

যদিও এই বছর ফেব্রুয়ারিতে বক্রেশ্বর পরিদর্শন করে কল্যাণবাবু বক্রেশ্বরে আর তেমন দূষণ খুঁজে পাননি। নদীতেও জীববৈচিত্র্যও ফিরে এসেছে বলে তিনি আদালতকে জানিয়েছেন। বক্রেশ্বরের কাজে সন্তোষ প্রকাশ করার পাশাপাশি জাতীয় পরিবেশ আদালত তার রায়ের প্রতিলিপিতে কল্যাণবাবুর সেই রিপোর্টের উল্লেখও আদালত।

বক্রেশ্বর মামলায় কালি লেগেছিল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের গায়েও। দূষণের অভিযোগ ওঠার পরেও ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে নিয়ম ভেঙে ছাড়পত্র দিয়েছিল পর্ষদ। সেই ঘটনায় পর্ষদের সদস্য-সচিব সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং ইঞ্জিনিয়ার অঞ্জন ফৌজদারকেও জরিমানার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল পরিবেশ আদালত। দু’জনে অবশ্য ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে নেন। রায় ঘোষণার সময়ে ওই দু’জনকেও জরিমানার হাত থেকে রেহাই দিয়েছে পরিবেশ আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bakreshwar Thermal Power Station
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE