Advertisement
E-Paper

এ পারের আত্মীয়দের বাড়িতে থেকে দুষ্কর্ম চালাচ্ছে বাংলাদেশি ডাকাতেরা

সীমান্ত পেরিয়ে এ রাজ্যে ঢুকে আত্মীয়দের বাড়িতে দিন কয়েক থেকে যাচ্ছে তারা। সুযোগ বুঝে এ দিকে ডাকাতি করে সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৬ ১৮:০৯

সীমান্ত পেরিয়ে এ রাজ্যে ঢুকে আত্মীয়দের বাড়িতে দিন কয়েক থেকে যাচ্ছে তারা। সুযোগ বুঝে এ দিকে ডাকাতি করে সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে।

সম্প্রতি সোদপুরের সোনার দোকানে দুঃসাহসিক ডাকাতির তদন্তে নেমে এমন তথ্যই উঠে এসেছে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশের হাতে। জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় যুক্ত ডাকাতেরা ডাকাতি করার আগে ব্যারাকপুর এলাকায় গা ঢাকা দিয়েছিল কয়েক দিন। নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। এলাকায় মাইক নিয়ে প্রচারে নেমেছে তারা। শুধু ডাকাত নয়, পুলিশের সন্দেহ, এই উপায়ে জঙ্গিরাও তো গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারে! তাই বলা হচ্ছে, স্থানীয় কোনও আবাসিকের বাড়িতে বিদেশ থেকে কেউ বেড়াতে এসে রাত্রিযাপন করলে তা স্থানীয় পুলিশকে জানাতে হবে। না হলেই শাস্তি!

বিদেশ থেকে আত্মীয় এসে থাকলে তা-ও জানাতে হবে পুলিশকে? না জানালে শাস্তি?

ব্যারাকপুরের কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, ভারতীয় আইনে ‘ফরেনার্স অ্যাক্ট’-এর একটি ধারায় এই নিয়ম অনেকদিন ধরেই রয়েছে। সেই নিয়ম অনুযায়ী, কারও বাড়িতে বিদেশ থেকে আত্মীয়-বন্ধু এসে রাত্রিযাপন করলে তা স্থানীয় থানাকে জানাতে হবে। জানাতে হবে সেই ব্যক্তির বিস্তারিত নাম-পরিচয়, তাঁর পাসপোর্ট নম্বরও। তন্ময়বাবুর কথায়, ‘‘নিয়মটা থাকলেও তা এত দিন কড়া ভাবে প্রয়োগ করা হত না। কিন্তু, এ বার পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। যে ভাবে ডাকাতেরা ঢুকে এসে আত্মীয়দের বাড়িতে থাকছে, তার পরে ডাকাতি করে পালিয়ে যাচ্ছে, তাতে কড়া হতেই হচ্ছে। এ ছাড়া জঙ্গি আনাগোনার আশঙ্কাও তো উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’’

আরও পড়ুন: ‘সরু’ চোরেদের কেরামতি দেখে হতভম্ব দুঁদে পুলিশও

কেউ না জানালে শাস্তির কী বিধান আছে?

কমিশনার জানিয়েছেন, যদি জানা যায় কোনও বিদেশি এসে এখানকার নাগরিকের বাড়িতে থেকে গিয়েছেন, অথচ সেই নাগরিক তা পুলিশকে জানাননি তা হলে ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী তাঁর ৬ মাসের জেল বা জরিমানা হতে পারে। তবে, এই অপরাধে গ্রেফতার হলে থানা থেকেই জামিন পাওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে বলে তিনি জানান।

মাস সাতেক আগেই টিটাগড় থানা এলাকার ঘিদহ থেকে এক বাংলাদেশি ডাকাত ধরা পড়েছিল। বছরখানেক আগে ওই এলাকারই সুকান্ত পল্লিতে আর এক বাংলাদেশি দুষ্কৃতী নাম ভাঁড়িয়ে বসবাস করছিল। মারা যাওয়ার পর তাকে শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা নিতে গেলেই বিপত্তি বাধে। তার পরেই পুরো পরিচয় সামনে আসে।

৩২৮ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ব্যারাকপুর মহকুমার জনসংখ্যা ৫০ লক্ষ ছুঁই ছুঁই। সেখানে ১৩টা থানা আর গোয়েন্দা বিভাগের সামান্য কয়েক জন পুলিশকর্মী কী ভাবে নজরদারি চালাবেন, সে প্রশ্নও উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে এলাকায় পুলিশি টহলদারি নজরেই আসে না বলেও। পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘আমরা জনসচেতনতা তৈরির উপরে এখন জোর দিচ্ছি। সেটা করার পরে তা কতটা কার্যকরী হল, সেটাই মূলত খেয়াল রাখতে হবে।’’

গত মঙ্গলবার সকাল থেকেই পুলিশ গাড়ি ও মাইক নিয়ে প্রচার শুরু করেছে। এর মধ্যেই হাজারখানেক বহিরাগতের পরিচয়পত্র জমা দিয়েছেন বাড়িওয়ালারা। পুরসভা ও পঞ্চায়েতের জন প্রতিনিধিদেরও এই বিষয়ে সাহায্য করতে বলা হয়েছে।

ভাড়াটেদের সম্পর্কেও স্থানীয় থানায় বিস্তারিত তথ্য জানানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু, সে ক্ষেত্রে এত দিন কোনও আইনের প্রয়োগ ছিল না বলে তন্ময়বাবু জানান। এ বার ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকায় সেই আইনও চালু হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘তিন দিন আগে সেই নিয়ম প্রয়োগ করা হয়েছে।’’

robbers relative
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy