মারমুখী: বর্ধমান মেডিক্যালে বাঁশ হাতে জুনিয়র ডাক্তারেরা। ফাইল চিত্র।
এনআরএস-কাণ্ডের জেরে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে সরকারি ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার প্রকাশ্যে আসে আন্দোলন চলাকালীন বর্ধমান মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে পৃথক দু’টি মামলা করেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। একটি মামলা হয়েছে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে মারধরের অভিযোগে। অন্যটি হাসপাতাল লাগোয়া অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের ইউনিয়ন অফিসে ভাঙচুরের অভিযোগে। তবে দু’টি ঘটনাতেই নির্দিষ্ট কোনও জুনিয়র ডাক্তারের নাম নেই।
জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি। তবে জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘দু’টি মামলাই প্রত্যাহার করার ভাবনা-চিন্তা চলছে। আইনি কোনও কারণে মামলা প্রত্যাহার করা না গেলেও, যেহেতু নির্দিষ্ট কেউ অভিযুক্ত নন, সে ক্ষেত্রে জুনিয়র ডাক্তারদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’’
এনআরএস-কাণ্ডের জেরে ১১ জুন রাতে অশান্তি বাধে বর্ধমান মেডিক্যালে। অভিযোগ, জুনিয়র চিকিৎসকেরা হাসপাতালের সব দরজা বন্ধ করে দেন। তখন কীটনাশক খাওয়া এক রোগীকে জরুরি বিভাগে ঢোকানো নিয়ে রোগীর পরিজনেদের সঙ্গে বচসা বাধে ডাক্তারদের। ডাক্তারদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে ডাক্তারদের একাংশ পুলিশকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। পুরো ঘটনা জানিয়ে বর্ধমান থানায় মামলা করেন প্রত্যক্ষদর্শী, সাব-ইনস্পেক্টর শিউকুমার সিংহ। পুলিশ কর্তব্যরত অবস্থায় সরকারি কর্মচারীকে মারধর, বেআইনি জমায়েত-সহ একাধিক ধারায় মামলা করে। ১২ জুন বিকেলে হাসপাতাল লাগোয়া মিঠাপুকুরের শেখ কালাম বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেন, হাসপাতালের পাঁচিল লাগোয়া আইএনটিটিইউসি প্রভাবিত অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের ইউনিয়ন অফিসে ঢুকে কিছু জুনিয়র ডাক্তার ভাঙচুর চালিয়েছেন।
আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের দাবি, “যা ঘটেছে, ভুল বোঝাবুঝি থেকে। কর্মবিরতি ওঠার পরেই হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক ও অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে মিটমাট করে নিয়েছি।’’ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁ বলেন, ‘‘পুলিশ মামলা করেছে বলে জানি না। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আন্দোলনরত ডাক্তারদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না। তাই এই পর্বে পুলিশ কোনও মামলা করলেও আশা করি তা প্রত্যাহার করে নেবে।’’
জেলা পুলিশের এক কর্তা জানাচ্ছেন, সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকের আগেই ওই দু’টি অভিযোগ দায়ের হয়। সেই মতো মামলা হয়েছে। তবে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে এই আন্দোলন পর্বে কোনও মামলা হবে না বলে আশ্বাস দেওয়ার পরে আইন মেনে মামলা প্রত্যাহারের কথা ভাবা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy