Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Galsi

ভাগের পরে পাশাপাশি পুজো

গলসির আদড়া অঞ্চলের মহড়া গ্রামে রায়চৌধুরী বাড়িতে দুর্গা মন্দিরে দু’টি কক্ষ রয়েছে। একটা কক্ষে চার ভাইয়ের পারিবারিক দেবী। অন্য কক্ষে রয়েছে সর্বজনীন দুর্গা।

মন্দিরের দুই কক্ষ। নিজস্ব চিত্র

মন্দিরের দুই কক্ষ। নিজস্ব চিত্র

কাজল মির্জা
 গলসি শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:৫৬
Share: Save:

কাপড়ের উপরে কাদামাটির প্রলেপ দিয়ে জমি তৈরি করে তাতে আঁকা প্রতিমা। গলসি ২ ব্লকের খানো গ্রামে ছোট মণ্ডল বাড়ির পুজোয় মাটির প্রতিমা নেই। দেবীর পুজো হয় এই আঁকা পটেই। এই ব্লকের মহড়া গ্রামে আবার একই মন্দিরের দুই কক্ষে পুজো হয় দুই প্রতিমার।

প্রায় দেড়শো বছর ধরে পুজো হচ্ছে বলে জানান পরিবারের সদস্যেরা। জানা গিয়েছে, আগে খানো মণ্ডল বাড়িতে একটাই পুজো হত। তখন গড়া হত প্রতিমা। কোনও এক পুজোয় মনোমালিন্যের জেরে বড় ও ছোট— দু’ভাগে ভাগ হয়ে যায় মণ্ডলবাড়ি। আলাদা ভাবে পুজোর পরিকল্পনা করে ছোট মণ্ডলবাড়ি। চটজলদি প্রতিমা তৈরি করা সম্ভব হয়নি। তখনই পটের পুজো শুরু হয়। পরিবারের সদস্য উৎপল মণ্ডল, সঞ্জীব মণ্ডলেরা জানান, ‘‘বাঁশের কাঠামোর উপরে কাপড় সেঁটে কাদার প্রলেপ দেওয়া হয়। তার উপরে ছবি আঁকা হয়। এখন পট আঁকেন বাঁকুড়ার রূপসা গ্রামের পটুয়া মুরারী পাল।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মণ্ডলবাড়িতে দু’টি পুজো। বড় বাড়ির মন্দিরে প্রতিমা আসে। দুই বাড়ির ঘট আসে এক সঙ্গেই। দু’জন পুরোহিত দুই বাড়ির পুজো করেন। দশমীর পুজো আগে বড় বাড়িতে, তার পরে হয় ছোট বাড়িতে। শোভাযাত্রা করে একই সঙ্গে বিসর্জন হয়। স্থানীয় শিক্ষক অসীমকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘এলাকায় এই বাড়িতেই শুধু পটের প্রতিমা পুজো হয়।’’ পরিবারের সদস্য সনৎ মণ্ডল, স্বপন মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘নিজেদের চাঁদায় পুজোর খরচ আসে।’’ তাঁদের দাবি, এখন পট আঁকার শিল্পী দুর্লভ। ভবিষ্যতে কী হবে, চিন্তায় তাঁরা।

গলসির আদড়া অঞ্চলের মহড়া গ্রামে রায়চৌধুরী বাড়িতে দুর্গা মন্দিরে দু’টি কক্ষ রয়েছে। একটা কক্ষে চার ভাইয়ের পারিবারিক দেবী। অন্য কক্ষে রয়েছে সর্বজনীন দুর্গা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই সর্বজনীন দুর্গাই একদা রায়চৌধুরীর বাড়ির দেবী ছিলেন। প্রায় ৯০ বছর আগে পারিবারিক বিবাদে পুজো ভাগ হয়ে যায়। দুই প্রতিমা এক সঙ্গে সাজানো হয়। সমস্ত রীতিনীতি একই সঙ্গে হয়ে থাকে। দেবীপ্রসাদ চৌধুরীরা চার ভাই পালা করে পুজো করেন। আর সবার চাঁদায় পুজো হয় সর্বজনীন দুর্গার। কলাবউ স্নান হয় পাশের ঘোলা পুকুরে। কলাবউ আনাকে পরিবারে ‘দোলা’ আনা বলা হয়। অষ্টমীর পুজোর পরে হয় বাজি ফাটানো প্রতিযোগিতা। সর্বজনীন পুজোর সম্পাদক রণজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ষষ্ঠী থেকে নিয়ম নেমেপুজো হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Galsi Durga Puja 2022
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE