Advertisement
E-Paper

অসুস্থ মা, বাড়ি থেকে পালিয়ে একাই রওনা সাত বছরের ছেলের

থানায় শুভজিৎ বলে, ‘‘আমার মা খুব অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি। মাকে দেখার কেউ নেই। মায়ের জন্য মন খারাপ করছে। তাই যাচ্ছিলাম।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৪৯
ভাতার থানায় শুভজিৎ। নিজস্ব চিত্র

ভাতার থানায় শুভজিৎ। নিজস্ব চিত্র

মা অসুস্থ—বাড়ির লোকের আলোচনায় এই খবর কানে এসেছিল সাত বছরের ছেলেটার। সুযোগ পেতেই বাড়িতে থাকা মোবাইল সঙ্গে নিয়ে ট্রেনে চড়ে বসে সে। গন্তব্য কলকাতা। তবে পৌঁছনোর আগে বাড়ির লোকের অভিযোগ পেয়ে বর্ধমানেই তাকে ধরে ফেলে পুলিশ।

শুক্রবার সকালে বর্ধমান স্টেশন থেকে ভাতার থানায় পাঠানো হয় তাকে। ভাতারের বলগনা স্টেশনের কাছেই বাড়ি সাত বছরের শুভজিৎ বিশ্বাসের। থানায় বলে শুভজিৎ বলে, ‘‘আমার মা খুব অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি। মাকে দেখার কেউ নেই। মায়ের জন্য মন খারাপ করছে। তাই যাচ্ছিলাম।’’

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এর আগেও ৮ সেপ্টেম্বর মায়ের কাছে যাবে বলে বর্ধমান চলে গিয়েছিল শুভজিৎ। তখনও তার সঙ্গে ছিল মোবাইল। সে বারেও বর্ধমান শহরের মেহেদিবাগান থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে এনে বাবা-পিসির কোলে ফিরিয়ে দেয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুভজিতের বাবা সঞ্জয় কলকাতায় ট্যাক্সি চালাতেন। সেই সূত্রেই বছর বারো আগে গড়িয়ার বাসিন্দা পূর্ণিমার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তবে বছর খানেক আগে বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁদের। গড়িয়া ফিরে যান পূর্ণিমা। সেখানেই পরিচারিকার কাজ করেন তিনি। আর দুই ছেলে ১০ বছরের সমরেশ ও ৭ বছরের শুভজিৎকে নিয়ে সঞ্জয় থেকে যান বলগনায়। সঞ্জয় বলেন, “মাসখানেক আগে গড়িয়া থেকে ফোন করে জানানো হয় পূর্ণিমা গুরুতর অসুস্থ। বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছে। কোনও ভাবে শুভজিতের কানে মায়ের শরীর খারাপের খবর যায়। তারপর থেকে মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য ছেলে ছটফট করতে থাকে। সেই কারণেই পরপর দু’বার বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।’’

এ দিন সকালে ছেলেকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে দেন সঞ্জয়। বাড়ির মোবাইল দেখতে না পেয়ে তারা আন্দাজ করেন শুভজিৎ বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। বলগনা স্টেশনে গিয়ে জানতে পারে, শুভজিৎকে প্লাটফর্মে দেখা গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই থানায় খবর দেন তাঁরা। পুলিশ তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিয়ে শুভজিৎকে উদ্ধার করে।

এ দিন থানা থেকে নিয়ে যেতে এসে পিসি অঞ্জনা বিশ্বাস শুভজিৎকে বুকে জড়িয়ে বলে ওঠেন, “বাবা, আর পালাস না। এ বার তোকে মায়ের কাছে নিয়ে যাব।’’ শুভজিতের অভিমান তখনও কমেনি। পুলিশ কর্মীদের দিকে তাকিয়ে সে বলতে থাকে, ‘‘তোমরা খুব খারাপ। আগেও আমাকে মায়ের কাছে যেতে দাওনি। এ বারও...’’

Mother Son Bangur Hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy