Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Kalna

Kalna fair: পেল্লায় মিষ্টির টানেই জমে হাতিপোতার দেবদাসের মেলা

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দেবদাস উপন্যাসে এই গ্রামের নাম রয়েছে। প্রায় সাতশো ঘর মানুষ থাকেন এখানে।

একটি মিষ্টির মূল্য হাজার টাকা! নিজস্ব চিত্র

একটি মিষ্টির মূল্য হাজার টাকা! নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:২০
Share: Save:

এক হাতে আঁটে না সে মিষ্টি। দু’হাতে গামলা থেকে তুলতে হয়। পেল্লায় আকারের এক-একটা মিষ্টি পুরো পরিবারের পেট ভরিয়ে দেয়। কালনার নান্দাই পঞ্চায়েতের হাতিপোতা গ্রামে দেবদাস স্মৃতি মেলার এই মিষ্টির টানেই প্রতি বার ছুটে আসেন মানুষজন।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দেবদাস উপন্যাসে এই গ্রামের নাম রয়েছে। প্রায় সাতশো ঘর মানুষ থাকেন এখানে। গ্রামের আট থেকে আশি সকলের কাছেই নায়ক দেবদাস। গ্রামবাসীর বিশ্বাস, দেবদাস কাল্পনিক চরিত্র নয়। ছেলেবেলার সঙ্গীর প্রেমে এই গ্রামের বটতলাতেই প্রাণ দিয়েছিলেন তিনি। এখনও মেলায় আসা অনেকে দেবদাসের কথা মনে করে চোখের জল ফেলেন। আবার সেই দুঃখ ভুলতে বিশাল মিষ্টি কিনে বাড়ি ফেরেন। বৃহস্পতিবার মেলার উদ্বোধন করেন রাজ্যের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এবং অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী হালদার। মেলা চলবে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, একশো থেকে হাজার টাকা দামেরও মিষ্টি মেলে। গুড়ের পাকের রসগোল্লা, চমচম, ল্যাংচা ভাসে বড় বড় লোহার কড়াইয়ে। মিষ্টির কারিগরেরা জানান, হাজার টাকা দামের মিষ্টি ২৫ ইঞ্চি লম্বা, আট ইঞ্চি চওড়া। আর তার ওজন সাত থেকে সাড়ে সাত কেজি। ৫০০ টাকার মিষ্টির ওজন চার থেকে সাড়ে চার কেজি। গ্রামবাসী জানান, বড় মিষ্টি একটা কিনে ভাগ করে খাওয়াটাই আসল মজা।

আসানসোল, দুর্গাপুর, কলকাতা থেকেও মিষ্টির ক্রেতা আসেন। মিষ্টি কারিগর হাবিরুল মণ্ডল বলেন, ‘‘বড় মিষ্টির জন্য এলাকার মানুষ পাগল। যত বড় আকারের মিষ্টি গড়ি না কেন, ক্রেতার অভাব নেই। ২০১৮ সালে দু’হাজার টাকারও মিষ্টি তৈরি করেছিলাম। মেলার ক’দিনে দেড় থেকে দু’কুইন্টাল ছানা লাগে।’’ তবে করোনা-আবহে আর দু’হাজার টাকা দামের মিষ্টি তৈরি করেননি তিনি। দেড় কিলো ছানা, দু’শো গ্রাম ময়দা এবং অ্যারারুট দিয়ে তৈরি হাজার টাকার মিষ্টিই সব চেয়ে বড় এ বার। একটি কড়াইয়ে দু’টির বেশি মিষ্টি আঁটে না। মাটির উনুনে, কাঠের জ্বালানিতে ঘণ্টা দুয়েক ধরে তৈরি হয় সেই মিষ্টি। মন্তেশ্বরের পুটশুড়ি থেকে আসা কারিগর কালু হাজরাও বলেন, ‘‘বড় মিষ্টি তৈরি করতে অনেক ধৈর্য লাগে। পরিমাণ কম-বেশি হলে, মিষ্টি ফেটে যায়। ক্রেতাদের তারিফের লোভে প্রতি বারই বড় মিষ্টি বানানোর চেষ্টা করি।’’

মেলা কমিটির তরফে রেজাউল ইসলাম মোল্লা জানান, করোনা সংক্রমণ এড়াতে এ বার মেলার জায়গা বাড়ানো হয়েছে। যাতে দোকানের মাঝে জায়গা থাকে, ক্রেতাদেরও গায়ে ঘেঁষে না দাঁড়াতে হয়। মাস্ক পরার কথাও মাইকে ঘোষণা করা হয়েছে, দাবি তাঁর।

করোনায় দূরে-দূরে থাকার দিনে পরিবারের সকলে একটা মিষ্টি ভাগ করে খাওয়াটাই মজা, বলেন নান্দাই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান ইদের আলি মোল্লা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kalna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE