E-Paper

বর্ষায় ভেসে যায়, অজয়ে স্থায়ী সেতুর আর্জি চুরুলিয়ায়

নদের এক দিকে রয়েছে কাজী নজরুল ইসলামের জন্মভিটে চুরুলিয়া গ্রাম। অন্য পাড়ে বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের পাটসুণ্ডি, বড়রা ও বাবুইজোড় পঞ্চায়েত এলাকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৩ ০৯:২৬
An image of the  construction

এখানেই স্থায়ী সেতু তৈরির দাবি করছেন এলাকাবাসী। নিজস্ব চিত্র।

চুরুলিয়ায় অজয় নদের উপরে অস্থায়ী সেতু রয়েছে, যা পশ্চিম বর্ধমান ও বীরভূম জেলায় যাতায়াতের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসাবে কাজ করে। সেই জায়গায় স্থায়ী সেতু নির্মাণের দাবি উঠেছে।

নদের এক দিকে রয়েছে কাজী নজরুল ইসলামের জন্মভিটে চুরুলিয়া গ্রাম। অন্য পাড়ে বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের পাটসুণ্ডি, বড়রা ও বাবুইজোড় পঞ্চায়েত এলাকা। এ ছাড়া, নদের কাছে রয়েছে ঝাড়খণ্ডের নলা থানার আফজলপুর পঞ্চায়েত এলাকা। প্রতি বছর দুর্গাপুজোর আগে নদের উপরে বোল্ডার, মাটি ফেলে অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়। বর্ষায় তা ভেসে যায়। তখন ঘুরপথে এই বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষজনকে যাতায়াত করতে হয়।

চুরুলিয়া নবকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বাপ্পাদিত্য রায় জানান, বীরভূম থেকে প্রচুর ছাত্রছাত্রী পশ্চিম বর্ধমানে উচ্চ মাধ্যমিক ও কলেজে পড়তে আসেন। বর্ষায় নৌকা না চললে আসতে পারেন না। শিক্ষকদের দাবি, স্থায়ী সেতু হলে বীরভূমের থেকে আসা পড়ুয়ার সংখ্যা বেড়ে যাবে। কারণ, চুরুলিয়া ও সিউড়ির দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার কমে যাবে। তা ছাড়া পাণ্ডবেশ্বরের পরে এ দিকে আর কোনও স্থায়ী সেতু নেই। খয়রাশোল ব্লকের বড়কোলার বাসিন্দা কাজল ধীবর, বলাই বন্দ্যোপাধ্যায়েরা বলেন, “স্থায়ী সেতু হলে নলা-সহ বীরভূমের ৫০টি গ্রামের পড়ুয়ারা উপকৃত হবেন। কারণ, এ-পাড়ে মাত্র একটি উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে। তাই উচ্চশিক্ষার জন্য চুরুলিয়ায় যেতে হয়। এ ছাড়া, যেখানে খয়রাশোল কলেজের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার, সেখানে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরেই চুরুলিয়া নজরুল মহাবিদ্যালয়।”

অস্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র ডেকে কাজের বরাদ দেয় খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতি। নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত এক ঠিকাকর্মী জানান, খয়রাশোল ব্লকের স্বাস্থ্য পরিষেবা বেহাল। তাই তাঁদের ৫৫ কিলোমিটার দূরে সিউড়ি হাসাপাতাল যাওয়ার থেকে, ২২ কিলোমিটার দূরের আসানসোল জেলা হাসপাতাল যাওয়া অনেক সহজ। চুরুলিয়ার বাসিন্দা দুলাল কাজি, গোপী পাত্ররা বলেন, “স্থায়ী সেতু হলে ব্যবসা-বাণিজ্যেরও উন্নতি হবে।” চুরুলিয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “স্থায়ী নির্মাণ হলে আনাজ কম দামে পাবে চুরুলিয়া-সহ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। কারণ, বীরভূমের বিরাট অংশের চাষজাত সামগ্রীর আমদানি এ-পাড়ে অনেক বেড়ে যাবে।”

পূর্বতন চুরুলিয়া কাজী নজরুল আাকাডেমির প্রাক্তন প্রচার সচিব দীপু কাজী জানান, তাঁরা রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দফতরে কয়েক বার চিঠি দিয়ে, ‘রবীন্দ্র-নজরুল’ এই নামে স্থায়ী সেতু তৈরির আবেদন জানিয়েছেন। জামুড়িয়ার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক জাহানারা খান জানান, তাঁরা ২০১০-এ স্থায়ী সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। ২০১১-য় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, তাদের কাছে নদ সংলগ্ন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ স্থায়ী সেতুর চেয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন। তবে নির্মাণের জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, সমিতির পক্ষে তা খরচ করা সম্ভব নয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

construction over bridge Churulia

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy