মেয়ে পরীক্ষায় বসতে পারবে, এমন কল্পনা করা যাদব পরিবারের কাছে কষ্টকর ছিল। সেই মেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছে। পাশও করেছে। তার স্কুল বলছে, ছাত্রীর এই লড়াই প্রেরণা জোগাবে অনেককে।
তেজগঞ্জ হাই স্কুলের ছাত্রী বৈশাখী যাদব মস্তিষ্কের জটিল রোগে আক্রান্ত। তার চিকিৎসা চলছে। মাধ্যমিকে ৩০৬ পেয়েছে বৈশাখী। তার পরিবার ও স্কুলের কাছে এই নম্বর কোনও অংশে কম নয়। বৈশাখীরা থাকে বর্ধমান শহরের তেজগঞ্জ সারদাপল্লিতে। তার বাবা কার্তিক যাদব জানান, ২০২৩ সালে মস্তিস্কের বিরল রোগে আক্রান্ত হয় তাঁর মেয়ে। ২০২৪ সালে পরীক্ষা চলাকালীন শ্রেণিকক্ষের মধ্যেই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ে বৈশাখী। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অন্য শিক্ষক, শিক্ষিকাদের সহায়তায় তাকে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু চিকিৎসায় সাড়া তেমন মেলেনি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সন্দীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল বৈশাখীর পরিবার এই ঘটনায় সম্পূর্ণ হতাশ হয়ে পড়ে। বর্ধমান ও কলকাতায় চিকিৎসার পরেও তেমন কোনও সুফল না মেলায় চিন্তায় পড়ে দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারটি। তেজগঞ্জ হাই স্কুলের ‘পুওর ফান্ড’ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা অনুদান দিয়ে বৈশাখীর চিকিৎসার জন্য বেঙ্গালুরু যাওয়ার ট্রেনের টিকিট কেটে দেওয়া হয়। দীর্ঘ চিকিৎসার পরে মনের জোরেই পরীক্ষা দিয়েছিল মেয়েটি।’’
মেয়েটি যখন পরীক্ষা দেবে বলে জানায়, তখন ওর মনের জোর দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন স্কুলের সকলে। বৈশাখীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, এখনও নিয়মিত ওষুধ খেতে হয় তাকে। বৈশাখী জানায়, সে রোগের সঙ্গে লড়াই চালাবে। পড়াশোনাও চালিয়ে যাবে। উচ্চ মাধ্যমিকে কলা বিভাগ নিয়ে পড়ার ইচ্ছা রয়েছে তার। বৈশাখীর মা টুম্পা যাদব চান, ‘‘রোগের কথা ভুলে মেয়ে উচ্চ শিক্ষিত হোক। এর বেশি কিছু চাওয়ার নেই ।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)