Advertisement
০২ মে ২০২৪
Raniganj

সংস্কারের অভাবে জলাশয় ঢেকেছে কচুরিপানায়, বর্ষায় বাড়ি ভাসে জলে

১৯৯৮-এ ২৬ জন মাছ চাষি ‘রানিগঞ্জ মৎস্য চাষ উন্নয়ন সমিতি’ তৈরি করেন। সেটির সদস্য সুনীল গড়াই জানান, ১৯৯৯-এর গোড়ায় তাঁরা এখানে মাছ চাষ শুরু করেন।

এই জলাশয়টি নিয়েই সমস্যা। নিজস্ব চিত্র

এই জলাশয়টি নিয়েই সমস্যা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:৫৩
Share: Save:

এক সময় এই জলাশয়ে দেখা মিলত পরিযায়ী পাখির। ছিল নৌকা-বিহারের ব্যবস্থাও। কিন্তু বর্তমানে কচুরিপানায় ঢেকেছে রানিগঞ্জের ১২৪ বিঘা আয়তনের রাজারবাঁধ জলাশয়টি। সংস্কার না হওয়াতেই এই হাল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জলাশয়টির জল নিয়ে পুজো করত এলাকার ১০টিরও বেশি দুর্গা পুজো ও বেশ কিছু মনসা পুজো কমিটি। বছর ছয়েক সে সব বন্ধ। পুকুরের স্বচ্ছ জলে এক সময় পদ্ম ফুল ফুটত। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, অনেকেই এই পুকুরে জামাকাপড় কাচতেন।

১৯৯৮-এ ২৬ জন মাছ চাষি ‘রানিগঞ্জ মৎস্য চাষ উন্নয়ন সমিতি’ তৈরি করেন। সেটির সদস্য সুনীল গড়াই জানান, ১৯৯৯-এর গোড়ায় তাঁরা এখানে মাছ চাষ শুরু করেন। ছিল নৌকা-বিহারের ব্যবস্থাও। কিন্তু ২০০৫-এ দুই প্রভাবশালী ব্যক্তির কলহের জেরে সে সব বন্ধ হয়ে যায়। ২০১১-য় ১৬১ জন মিলে ফের মাছ চাষ শুরু করেন। কিন্তু পুকুরের জলে দূষিত হয়ে যাওয়ায় মাস ছয়েকের মধ্যে সব মাছ মরে যায়। গত ১০ বছর ধরে পরিযায়ী পাখিও আর আসে না এখানে। মৎস্য চাষ উন্নয়ন সমিতির সদস্য অমর গড়াই জানান, সমিতির তরফে, তাঁর এবং দু’জনের নামে ব্যাঙ্কে ১০ লক্ষ টাকা গচ্ছিত রয়েছে। দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর আবেদন, “এলাকায় পুকুরটি সিহারসোল রাজবাড়ির মালিকানাধীন বলে পরিচিত। রাজবাড়ির তরফে অথবা সরকারি ভাবে কোনও গোষ্ঠী এখানে মাছ চাষের দায়িত্ব পেলে, জলাশয়টির উন্নয়নের জন্য ওই টাকা আমরা দিয়ে দেব। কিন্তু কোনও উদ্যোগই নজরে পড়ছে না।”

এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় হুসেননগর এবং নবিনগরের বাসিন্দারা জানান, ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের পঞ্জাবি মোড় থেকে শুরু করে বিস্তীর্ণ এলাকার নালার জল এই পুকুরে এসে মেশে। বর্ষায় কয়েক ঘণ্টা টানা বৃষ্টি হলে পুকুরের পশ্চিম দিকে থাকা ওই দু’টি এলাকার বাড়িতে নোংরা জল ঢুকে যায়। দু’টি এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, জলাশয় সংস্কারের জন্য বার বার দাবি জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।

সিহারসোলের সাবেক রাজবাড়ির সদস্য অনুরাধা মালিয়া সরাফ অবশ্য জানিয়েছেন, ১৯৫৫-য় প্রয়াত পশুপতি মালিয়া রাজারবাঁধকে দেবোত্তর ট্রাস্টের সম্পত্তি হিসাবে ঘোষণা করেন। প্রায় তিন দশক আগে রাজ্য সরকারের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর দেবোত্তর ট্রাস্টের সম্পতি মানতে অস্বীকার করে। অনুরাধা বলেন, “এর পরে আমরা সরকারের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। সেই মামলা বিচারাধীন। মামলার নিষ্পত্তি হলে আমরা জলাশয়ের সংস্কার করব। তার আগে জলাশয় ভরাট করে যাতে কেউ অবৈধ দখল নিতে না পারে, সেটা সরকারের দেখা দরকার।” এ দিকে, বিএলএলআরও (রানিগঞ্জ) সুব্রত বিশ্বাস বলেন, “আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Raniganj Water Body
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE