E-Paper

অনাহারে দু’রাত, খুলনা থেকে ফিরলেন গলসির মৌসুমী

মঙ্গলবার পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরেন মৌসুমী। প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে বাংলাদেশে রয়েছেন তিনি। খুলনা শহরের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া মৌসুমী।

কাজল মির্জা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৪ ০৭:৪১
বাবা-মায়ের সঙ্গে মৌসুমী।

বাবা-মায়ের সঙ্গে মৌসুমী। —নিজস্ব চিত্র।

ও দেশ এখনও তেতে। সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ নিয়ে ছাত্র আন্দোলনের জেরে কার্ফু, দেশ জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ, কাঁদানে গ্যাস, রক্তক্ষয় থেকে শতাধিক পড়ুয়ার মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। এখন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্তিমিত। আরও অনেকের সঙ্গে এই ক’দিন রাতটা জেগেই কাটিয়েছেন গলসির মৌসুমী মণ্ডল।

মঙ্গলবার পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরেন মৌসুমী। প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে বাংলাদেশে রয়েছেন তিনি। খুলনা শহরের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া মৌসুমী। ঘরে ফিরে তিনি বলেন, ‘‘এত বছরে এমন অভিজ্ঞতা হয়নি। ইন্টারনেট বন্ধ। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। বহু এলাকায় খাবার ছিল না। ভাবতে পারছি না শেষ দু’রাত কী ভাবে কাটিয়েছি।’’

গলসি ১ ব্লকের রাইপুরের বাসিন্দা মৌসুমীর বাবা জাহির আব্বাস মণ্ডল একজন রাজনৈতিক কর্মী। মা ফজিলা বেগম লোয়া রামগোপালপুর পঞ্চায়েতের প্রধান। তাঁরা জানান, আন্দোলনের শুরুর দিকে খুলনা শহরে সে ভাবে আঁচ লাগেনি। তবে পরিস্থিতি দিন দিন আতঙ্কের হয়ে ওঠে। মৌসুমী জানান, ঢাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষের পরে ১৭ জুলাই রাতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখা ও শিক্ষার্থীদের আবাসিক হস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। একই নির্দেশ দেওয়া হয় বেসরকারি কলেজগুলিতেও।

মৌসুমী বলেন, ‘‘তখন থেকে আর স্থির থাকতে পারিনি। টানা সাত দিন হস্টেলে বন্দি। তার পরে হস্টেল থেকেও বলে দেওয়া হয় দ্রুত শহর ছাড়তে। কিন্তু ফিরব বললেই তো আর ফেরা যায় না। কোনও রকমে আরও দেড়শো ভারতীয় ডাক্তারি পড়ুয়ার সঙ্গে বাসে করে ও দেশ থেকে রওনা দিই। পেট্রোপোল সীমন্ত দিয়ে দেশে ফিরি।’’

কেমন কাটল সাতটা দিন? মৌসুমী জানান, প্রথম দিকে হোটেল থেকে রান্না করা খাবার পাচ্ছিলেন তাঁরা। শেষ দু’দিন কার্ফু জারি হওয়ায় দুপুরের খাবার বহু কষ্ট করে জোগাড় করা গেলেও রাতে কোনও খাবার পাননি। কিছু শুকনো খাবার, বিস্কুট, খেয়েই রাত কেটেছে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের হস্টেলের পাশের ভবনেই ভারতীয় হাই কমিশনার থাকেন। ওই বাড়িটা আমাদের সাহস জুগিয়েছে।’’ ভারতীয় দূতাবাসের সাহায্য এ দিন দুপুরে পেট্রাপোল সীমান্তে পৌঁছন তিনি। সেখান থেকে ফেরেন গলসিতে।

জাবির আব্বাস বলেন, ‘‘আর কয়েক মাস গেলেই মেয়ে চিকিৎসক ডিগ্রি পেত। জানি না কি হবে। তবে মেয়েকে ফিরে পেয়ে শান্তি।’’ রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bangladesh Protest Galsi Bardhaman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy