Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কাঁকসায় যুবক খুনে ধন্দে পুলিশ

কাঁকসার জামদহ গ্রামের বাসিন্দা চঞ্চল ওরফে বাপন ঘোষকে (২৭) খুনের ঘটনায় ধৃত তাঁর স্ত্রী রিয়া ঘোষ ও পড়শি যুবক ঝন্টু মণ্ডলকে রবিবার আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ঝন্টুর বাবা, মা ও জেঠিমাকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০০:৫৯
Share: Save:

দশমীর সকালে বাড়িতে মিলেছিল যুবকের গুলিবিদ্ধ দেহ। ঘটনার পরেই গ্রেফতার করা হয়েছে নিহতের স্ত্রী ও প্রতিবেশী এক যুবককে। কিন্তু গোটা দু’টো দিন কেটে গেলেও ঘটনাটি নিয়ে ধন্দে পুলিশ।

কাঁকসার জামদহ গ্রামের বাসিন্দা চঞ্চল ওরফে বাপন ঘোষকে (২৭) খুনের ঘটনায় ধৃত তাঁর স্ত্রী রিয়া ঘোষ ও পড়শি যুবক ঝন্টু মণ্ডলকে রবিবার আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ঝন্টুর বাবা, মা ও জেঠিমাকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের ১৪ দিন জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চারেক আগে লাউদোহার সরপির বাসিন্দা রিয়ার বিয়ে হয় জামদহ গ্রামের চঞ্চলের সঙ্গে। তাঁদের একটি বছর তিনেকের মেয়েও রয়েছে। স্ত্রী, মেয়ে, বৃদ্ধ বাবা অজিতবাবু ও ঠাকুমা পাঁচুবালাদেবীকে নিয়ে সংসার চঞ্চলের। গ্রামের মোড়েই একটি সাইকেল সারাইয়ের দোকান রয়েছে তাঁর। নিজেদের জমিতে চাষাবাদও করতেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, বছরখানেক ধরে চঞ্চলের স্ত্রী রিয়ার সঙ্গে প্রতিবেশী যুবক ঝন্টুর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ঝন্টু গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহের কাজ করে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার মেয়ে ও শ্বশুরকে সঙ্গে নিয়ে বাপের বাড়ি যান রিয়া। অভিযোগ, শনিবার সকালে অজিতবাবু বাড়ি ফিরে দেখেন, ঘরের মেঝেতে চঞ্চলের দেহ পড়ে রয়েছে। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই রিয়া ও ঝন্টু পরিকল্পনা করে এই খুন করেছে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। অজিতবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে সে দিনই ঝন্টু ও রিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে একটি রিভলবার মিলেছে।

রবিবার গ্রামাবাসীদের একাংশ দাবি করেন, স্ত্রীর সঙ্গে ঝন্টুর সম্পর্ক নিয়ে সম্প্রতি চঞ্চল অশান্তি করেছিলেন। সেই সময়ে ঝন্টু তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। বাসিন্দাদের একাংশের আবার দাবি, চঞ্চলের সম্পত্তি হাতানোর উদ্দেশ্যেও খুন করা হয়ে থাকতে পারে। এ দিন চঞ্চলের দিদি মিঠু মণ্ডল অভিযোগ করেন, ঘর থেকে কিছু গয়না, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উধাও হয়ে গিয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, তাঁর বাবা বাড়ি ছেড়ে কোথাও যান না। কিন্তু শুক্রবার রিয়া জোর করেই তাঁকে নিজের বাপের বাড়ি নিয়ে যান। মিঠুদেবীর অভিযোগ, ‘‘আমার ভাইকে খুনের পরিকল্পনা আগেই কষা হয়েছিল। সে জন্যই বাবাকে নিয়ে চলে গিয়েছিল।’’

যদিও ঘটনার তদন্তে নেমে নানা বিষয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। কেন খুনের পরে আততায়ী বন্দুকটি ঘটনাস্থলে ফেলে গেল, সে নিয়ে ধন্দে আধিকারিকেরা। পুলিশের দাবি, জেরায় রিয়া ঝন্টুর সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করলেও খুনের ব্যাপারে তাঁর কিছু জানা নেই বলে দাবি করেছেন। কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘সমস্ত সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই তদন্ত করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE