মাথা খালি রেখেই সওয়ার। বর্ধমানে। নিজস্ব চিত্র
পুজোর সময়েও দুর্ঘটনার বিরাম নেই। পুজোর চার দিনে পথ দুর্ঘটনায় সাত জনের মৃত্যু হল জেলায়। আহত হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বেশ কয়েকজন। শনিবার ভোরে মৃতের তালিকায় যুক্ত হয়েছে ভাতারের মিরেপাড়া গ্রামের হামিদা বিবির (৪৮) নাম।
জেলা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পুজোর সময়ে জেলা জুড়ে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচির জন্য বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। বেশ কয়েকটি থানায় গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উপরে শিবির করে এক দিকে সচেতনতার পাঠ দেওয়া হয়েছে, আর এক দিকে বেপরোয়া গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তার পরেও গত কয়েক দিনে এক পুলিশকর্মী-সহ আট জনের মৃত্যু হল।
জেলা পুলিশের দাবি, বারবার প্রচার সত্ত্বেও হেলমেট না পরার প্রবণতা রয়েছে মোটরবাইক চালকদের মধ্যে। বর্ধমান শহরে জিটি রোডে দেখা গিয়েছে, মোটরবাইক চালকেরা কী ভাবে পথ নিরাপত্তা অবহেলা করছেন। এক-একটি মোটরবাইকে হেলমেট-হীন অবস্থায় চার জনকেও দেখা গিয়েছে। আবার কানে ইয়ার-ফোন গুঁজে দেদার মোটরবাইক চালাতে দেখা গিয়েছে। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে লেন ভাঙতে গিয়ে তিন জন আদিবাসী নৃত্যশিল্পীর প্রাণ গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
নবমীর সন্ধ্যায় গলসির খানোর কাছে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান আউশগ্রামের রাধামোহনপুরের বরকা বেসরা (৩৫), সুনীল মুর্মু (৩১) ও গলসির সোনাডাঙা গ্রামের চুরকো সোরেন (৪৮)। দশমীতে জামালপুরের জৌগ্রামে দু’টি মোটরবাইকের মুখোমুখি ধাক্কায় প্রাণ হারান জামালপুরের মুহিন্দর গ্রামের শ্যামল ঘোষ (৫৭)। পুলিশ জানায়, একটি ধাবা থেকে মোটরবাইক নিয়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার সময়ে হাওড়ামুখী একটি মোটরবাইক ধাক্কা দিলে ছিটকে পড়েন চালক ও আরোহীরা। ঘটনার বেশ কিছুক্ষণ পরে হাসপাতালে শ্যামলবাবু মারা যান।
অষ্টমীতে বর্ধমান শহরের আজিরবাগানে মোটরবাইক নিয়ে প্রতিমা দেখার সময়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় শুভময় মুখোপাধ্যায়ের (১৯)। সে দিনই পথ দুর্ঘটনায় মৃত অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না-তদন্তে পাঠায় পুলিশ। সপ্তমীর রাতে মেমারি শঙ্করপুরে রাস্তা পারাপারের সময়ে গাড়ির ধাক্কায় মারা যান জেলা পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর এএসআই কাজল দাস।
বর্ধমান শহরে বেপরোয়া মোটরবাইকের দাপটের কথা মেনে জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘শহরের প্রতিটি পুজো মণ্ডপের সামনে এ বার পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারের দল পাহারা দিয়েছে। এ ছাড়া যান নিয়ন্ত্রণ, রাস্তায় টহল দিতে পুলিশ ব্যস্ত ছিল। শহরের আট জায়গায় যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল। সেখানে পুলিশ বেপরোয়া মোটরবাইক আটকেছে। তবে শহরের ভিতর কিছুটা শিথিল ছিল।’’ জেলা পুলিশের হিসেবে, ভাতারে ২১২টি, খণ্ডঘোষে ৪৮টি, জামালপুরে ১১০টি-সহ গোটা জেলায় হাজারেরও বেশি মোটরবাইকের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করা হয়েছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এ ছাড়া কমবয়সী চালকদের কাছে মোটরবাইক আটকে রাখার ঘটনাও প্রচুর হয়েছে। চালক ও যাত্রী— উভয়কে আরও সচেতন হতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy