Advertisement
E-Paper

মদ্যপ অবস্থায় ‘অত্যাচার’, যুবকের গায়ে আগুন স্ত্রীর

রাতে মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে অশান্তি বাধান স্বামী। মারধরও করেন। দিনের পর দিন এমন ঘটনায় তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন স্ত্রী। শেষমেশ ঘুমন্ত স্বামীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:২৭

রাতে মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে অশান্তি বাধান স্বামী। মারধরও করেন। দিনের পর দিন এমন ঘটনায় তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন স্ত্রী। শেষমেশ ঘুমন্ত স্বামীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে। পরে শিশুপুত্রকে সঙ্গে নিয়ে থানায় আত্মসমর্পণ করেন তিনি। অগ্নিদগ্ধ স্বামীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান পড়শিরা।

পাণ্ডবেশ্বরের রেলপাড় ঝুপড়িপাড়ার বাসিন্দা শঙ্কর দাস বেসরকারি বাসের কন্ডাক্টর। স্ত্রী লিপিকা ও পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে তাঁর সংসার। পুলিশের কাছে লিপিকা অভিযোগ করেন, বছর আটত্রিশের শঙ্কর প্রতি রাতেই মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফেরেন। তার পরে নানা ছুতোয় গোলমাল পাকান। প্রতিবাদ করলেই গায়ে হাত তোলেন।

পুলিশের দাবি, লিপিকা জানিয়েছেন, সোমবার রাতেও সে রকম অবস্থায় বাড়ি ফিরে শঙ্কর তাঁর উপরে চড়াও হন। তাতে সহ্যের বাঁধ ভাঙে তার। শঙ্কর ঘুমিয়ে পড়ার পরে রাত ১২টা নাগাদ তাঁর গায়ে কেরোসিন ছিটিয়ে দেশলাই জ্বেলে আগুন ধরিয়ে দেন লিপিকা। তার পরে ঘুমিয়ে থাকা ছেলেকে কোলে নিয়ে ঘরে ছিটিকিনি তুলে বেরিয়ে পড়েন। কিলোমিটার খানেক দূরে পাণ্ডবেশ্বর থানায় গিয়ে পুলিশকে গোটা ঘটনা জানান বধূটি।

শঙ্করের বাড়ির পাশেই তাঁর দিদি সন্ধ্যা রায়ের শ্বশুরবাড়ি। সন্ধ্যাদেবী জানান, মাঝরাতে হঠাৎ ভাইয়ের চিৎকার শুনে ছুটে যান তিনি। দরজার ছিটকিনি খুলে দেখেন, ভাই দাউদাউ করে জ্বলছে। চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা এসে কম্বল চাপা দিয়ে আগুন নেভান। তাঁরাই শঙ্করকে দুর্গাপুর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যালে পাঠানো হয়।

পুলিশের কাছে লিপিকা অভিযোগ করেছেন, মদ খেয়ে এসে শঙ্করের অত্যাচারের কথা শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে তিনি অনেক বারই জানিয়েছেন। কিন্তু লাভ হয়নি। যদিও সন্ধ্যাদেবী দাবি করেন, ‘‘স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার আওয়াজ পেতাম মাঝেমধ্যে। কিন্তু সেই গোলমাল যে এই পর্যায়ে পৌঁছেছে, বুঝতে পারিনি। লিপিকাও সে ভাবে
আমাদের কিছু বলেনি।’’

স্থানীয় বৈদ্যনাথপুর পঞ্চায়েতের সদস্য মধু ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘এর আগে কয়েক বার আমরা শঙ্করকে নেশা ছাড়ার জন্য বুঝিয়েছি। কিন্তু ও শোনেনি। আগুন লাগিয়ে ওঁর স্ত্রী ঠিক করেননি। কিন্তু অত্যাচার সীমা ছাড়ানোয় তিনি এমনটা করে ফেলেছেন বলে আমাদের ধারণা।’’

মঙ্গলবার সারা দিন লিপিকাকে আটক করে রাখে পুলিশ। সন্ধ্যাদেবী খুনের চেষ্টার অভিযোগ করার পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। বর্ধমান মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শঙ্করের মুখের অনেকটা পুড়ে গিয়েছে। তবে অবস্থা স্থিতিশীল। এ দিন তিনি কোনও মতে বলেন, ‘‘বউ মদ খেতে নিষেধ করত। তা নিয়ে ঝগড়াঝাটিও হতো। কিন্তু তা বলে ও এমন কাণ্ড করে বসবে, ভাবিনি!’

Accusation Wife Husband Fire
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy