স্কুলের সামগ্রিক মানোন্নয়নে প্রকল্প, নাম ‘উত্তরণ’।—ফাইল চিত্র।
পরিদর্শন হয়, তবে মাঝেমধ্যে। তাতে আর যা-ই হোক, সামগ্রিক মানোন্নয়নের সুযোগ থাকে না। সে কাজ করতে এ বার পূর্ব বর্ধমানের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ৬৯টি স্কুলকে ‘দত্তক’ নেবেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। বিডিও থেকে জেলাশাসক, ডব্লিউবিসিএস থেকে আইএএস—নানা পদমর্যাদার ৬৯ জন অফিসার জড়াবেন স্কুল এবং পড়ুয়াদের সঙ্গে।
মিড-ডে মিল, কন্যাশ্রী থেকে পড়ুয়াদের মানসিক বিকাশ— প্রশাসনিক কর্তাদের অভিভাবকত্বেই করবে স্কুল। ‘উত্তরণ’ নামের এই প্রকল্প নিয়ে আগামী মঙ্গলবার প্রশাসনের আধিকারিক ও পরে স্কুলের প্রধান শিক্ষক/ শিক্ষিকাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “খুবই ভাল উদ্যোগ। রাজ্যে কোথাও আমি এমনটা শুনিনি।’’ তবে তাঁর সংযোজন: ‘‘হঠাৎ এ রকম উদ্যোগ কেন, তা জানতে হবে।” একই প্রশ্ন অভিভাবকদেরও। অনেকে বলেই ফেলছেন, ‘‘এত দিন স্কুলের মানোন্নয়ন নিয়ে সাধারণ ভাবে পরিচালন সমিতি ও প্রধান শিক্ষক/শিক্ষিকারাই সিদ্ধান্ত নিতেন। তাতে কি কাজের কাজ হচ্ছে না?’’
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা অবশ্য জানাচ্ছেন, তেমন কিছু নয়। এই প্রকল্পের পিছনে রয়েছে জেলা প্রশাসনেরই আগের একটি সিদ্ধান্ত। বছর দেড়েক আগে তৎকালীন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন ‘স্কুল মনিটরিং কমিটি’ গড়ে প্রশাসন ও শিক্ষা দফতরের সবাইকে নিয়মিত স্কুলগুলি পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সে কাজে ‘প্রত্যাশিত’ গতি দেখেননি কর্তারা। সে কথা মাথায় রেখেই আসরে নেমেছেন বর্তমান জেলাশাসক। তাঁর কথায়, “আমরা চাইছি, স্কুলগুলি প্রায় সব সময় প্রশাসনের নজরে থাকুক। তাই আধিকারিকদের এক-একটা স্কুলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরাই পড়ুয়াদের এগিয়ে নিয়ে যাবেন। সমস্যা হলে সরাসরি আমার সঙ্গে কথা বলতে পারবেন।”
প্রশাসনিক কর্তাদের একটা বড় অংশের দাবি, এই প্রকল্পের দৌলতে স্কুলে নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে কি না, আরও বেশি করে নজরে আসবে। পঠনপাঠন ও পরিকাঠামোর উন্নতি করা, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কন্যাশ্রী-প্রাপকদের অভাব-অভিযোগ মেটানোর রাস্তাও কিছুটা খুলবে। ‘কন্যাশ্রী-ক্লাবের’ সদস্যদের নাবালিকা বিয়ে রোখার প্রচারে ও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ায় উৎসাহ দেওয়া, তাদের আত্মরক্ষার পাঠ দেওয়া, প্রতিবন্ধী পড়ুয়াদের ভরসা জোগানো, পড়ুয়াদের কেরিয়ার কাউন্সেলিংয়ের মতো দায়িত্ব বর্তাবে ‘দত্তক’ নেওয়া আধিকারিকের উপরে।
কোন স্কুলগুলিকে ‘দত্তক’ নেওয়া হবে, তা ঠিক হয়ে গিয়েছে। প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে থাকা সর্বশিক্ষা প্রকল্পের জেলা আধিকারিক শারদ্বতী চৌধুরী বলেন, “যে সব অফিসারেরা দত্তক নেবেন, তাঁরা নিজেদের মতো করে স্কুলগুলোকে বড় করে তুলবেন, এমনটাই আশা করা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy