Advertisement
E-Paper

বছর ঘুরলেও টাকা পাননি বহু ছাত্রী

নতুন আর্থিক বছরের পাঁচ মাস কাটতে চলল, অথচ এখনও গত বছরের বৃত্তি পায়নি জেলার একটা বড় অংশের ছাত্রীরা। শুধু গত বছরই নয়, চলতি আর্থিক বছরেও এক জন পড়ুয়ার হাতেও কন্যাশ্রীর বৃত্তি তুলে দিতে পারে নি জেলা সমাজকল্যাণ দফতর।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৫ ০১:০৭

নতুন আর্থিক বছরের পাঁচ মাস কাটতে চলল, অথচ এখনও গত বছরের বৃত্তি পায়নি জেলার একটা বড় অংশের ছাত্রীরা।

শুধু গত বছরই নয়, চলতি আর্থিক বছরেও এক জন পড়ুয়ার হাতেও কন্যাশ্রীর বৃত্তি তুলে দিতে পারে নি জেলা সমাজকল্যাণ দফতর।

এর সঙ্গেই কাটোয়া মহকুমায় অনলাইনে জমা করা ফর্মের হদিশ মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, টাকা আসে নি বলে জেলা থেকে ওই প্রকল্পের বৃত্তি দেওয়া সম্ভব যাচ্ছে না। কবে টাকা মিলবে তারও সদুত্তর দিতে পারেন নি তাঁরা। সবমিলিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বিভিন্ন এলাকার স্কুল কতৃর্পক্ষ থেকে ছাত্রীদের মধ্যে।

জেলা সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রে জানা যায়, অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া, ১৩ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে বয়স এবং পারিবারিক আয় বছরে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার নীচে হলে সেই ছাত্রীদের বছরে ৫০০ টাকা করে কন্যাশ্রী প্রকল্পে বৃত্তি দেয় রাজ্য সরকার। এ ছাড়া স্কুল-কলেজে পাঠরত বা সরকারের যে কোনও প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণরত ১৮ বছরের বেশি বয়সের অবিবাহিতা ছাত্রীদের কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় এককালীন পঁচিশ হাজার টাকা দেয় সরকার। তবে এই বৃত্তি পেতে গেলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক। ওই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান জেলায় কন্যাশ্রী প্রকল্পে বছরে পাঁচশ টাকা করে বৃত্তি পায় ( কে ১) এমন ছাত্রীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৪০ হাজার। আর এককালীন ২৫ হাজার টাকা বৃত্তি ( কে ২) পান এমন ছাত্রীর সংখ্যা ১৭ হাজার ৫০০ জন। জানা গিয়েছে, গত আর্থিক বছরে ওই ১ লক্ষ ৪০ হাজার ছাত্রীর একটা বড় অংশ এখনও পর্যন্ত বছরের অনুদান পায় নি। শুধু বার্ষিক অনুদানই নয়, এককালীন অনুদান পাওয়ার কথা রয়েছে, অথচ নতুন আর্থিক বছরের পাঁচ মাস কেটে যাওয়ার পরেও অর্ধেকের কাছাকাছি ছাত্রী সে বৃত্তি পান নি।

দুর্গাপুরের একটি স্কুলের শিক্ষকের ক্ষোভ, “আমাদের স্কুলের অনেক ছাত্রী বার্ষিক বৃত্তি পেয়েছে, আবার অনেকে পায় নি। ফলে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ছাত্রীদের জবাব দিতে দিতে নাজেহাল হয়ে যাচ্ছি আমরা।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ছাত্রীরা কবে বার্ষিক অনুদান পাবে, সে সম্পর্কেও সমাজকল্যাণ দফতর সঠিক ভাবে কিছু বলতে পারছে না।” বর্ধমানের একটি স্কুলের শিক্ষকের দাবি, “এককালীন অনুদানও পাননি অনেক ছাত্রী। তাঁদের অনেকেই ভাবছেন স্কুল কর্তৃপক্ষের জন্য তাঁরা ওই টাকা পাচ্ছেন না। এ নিয়ে অভিভাবকরা বিক্ষোভও দেখিয়ে গিয়েছে।” বর্ধমানের স্কুল ছাত্রী আয়েশা সুলতানা, সঞ্চিতা রায়দেরও ক্ষোভ, “গত বছরের টাকা এখনও আসে নি। চলতি বছরের জন্যও ফর্ম পূরণ করা হচ্ছে না।”

কাটোয়ার মহকুমার এক মহিলা স্কুলের শিক্ষাকর্মী আবার একটি নতুন সমস্যার কথাও বলেন। তাঁর দাবি, ‘‘এককালীন বৃত্তির জন্য স্কুলে আবেদন করেছে, কিন্তু এর মধ্যে কলেজে উঠে গিয়েছে, এমন ছাত্রীদের আবেদন অনলাইনে মিলছে না। ফলে ওই ছাত্রীরা বৃত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।” সমাজকল্যাণ দফতরের অবশ্য দাবি, কাটোয়ার ওই স্কুলের মতো সমস্যা মেটানোর জন্য, স্কুলগুলি থেকে ছাত্রীদের নাম চেয়ে পাঠানো হয়েছে। ১ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের কন্যাশ্রী প্রকল্পের বৃত্তি দেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলেও দফতরের কর্তাদের আশ্বাস। ওই দফতরের আধিকারিক অনির্বাণ চক্রবর্তী বলেন, “গত আর্থিক বছরের জন্য আমাদের কাছে রাজ্য থেকে যত জন ছাত্রীর টাকা এসেছে, তা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা এলে তা ছাত্রীদের অ্যাকাউন্টে দিয়ে দেওয়া হবে।”

গত বার কন্যাশ্রী টাকা বিলি করতে গিয়ে একই অ্যাকাউন্টে দু’বার টাকা পৌঁছে যাওয়ার নজির পেয়েছিল জেলা প্রশাসন। যা নিয়ে রাজ্য স্তরের বৈঠকে ভর্ৎসিত হয়েছিলেন জেলা সমাজকল্যাণ দফতরের আধিকারিক অনির্বাণ চক্রবর্তী। সে জন্য এ বার তিনি প্রতিটি ছাত্রীর অ্যাকাউন্ট ব্যক্তিগত ভাবে পরীক্ষা করার উপর জোর দিয়েছেন। সেখানে কোনও গোলমাল ধরা পড়লে অভিভাবকদের মুচলেকা ও পুলিশে কেন অভিযোগ করা হবে না, তার কারণ দর্শানোর নির্দেশও দেওয়া হচ্ছে। অনির্বাণবাবু বলেন, “প্রয়োজনে আমরা বাড়ি গিয়ে আয়ের শংসাপত্রও খতিয়ে দেখব।”

Kanyashree bardhaman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy