বিধানসভা নির্বাচন বছরখানেক দেরি। তবে মাঠে নেমে পড়েছেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম সম্পাদক তথা বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। নিজের বিধানসভা ক্ষেত্র আসানসোল দক্ষিণে ‘পাড়ায় পাড়ায় দিদিভাই’ কর্মসূচি শুরু করেছেন তিনি। জনসংযোগ বাড়াতে এমন উদ্যোগ বলে দাবি। তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, এই আসনে এ বার লড়াই কঠিন বুঝেই আগেভাগে মাঠে নামতে হয়েছে অগ্নিমিত্রাকে।
গত বিধানসভা ভোটে আসানসোল দক্ষিণে কড়া টক্করের পরে, প্রায় সাড়ে চার হাজার ভোটে জয়ী হন অগ্নিমিত্রা। সে বার এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করেছিল দলের যুব নেত্রী সায়নী ঘোষকে, যিনি এলাকার বাসিন্দা নন। তার পরের বছরেই আসানসোেল লোকসভার উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্হার কাছে প্রায় তিন লক্ষ ভোটে হারেন অগ্নিমিত্রা। গত বছর লোকসভা ভোটে মেদিনীপুর কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েও পরাস্ত হয়েছেন তিনি। বিজেপির একাংশের দাবি, ভোট-ময়দানে হারের ‘হ্যাটট্রিক’ এড়াতে এখন থেকে মাঠে নেমেছেন ‘দিদিভাই’। আসানসোল দক্ষিণের ২২টি ওয়ার্ড ও পাঁচটি পঞ্চায়েত এলাকায় টেবিল-চেয়ার পেতে জনসংযোগ করছেন তিনি।
সম্প্রতি এই কর্মসূচিতে ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাধুবাথানে গিয়ে পানীয় জল ও রাস্তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন বিধায়ক। তিনি পাল্টা দাবি করেন, সব বিধায়কের পক্ষে করা সম্ভব নয়। তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা কোনও দায়িত্ব নিতে চান না। ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডের হরিপুর দক্ষিণপাড়া, ৯৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুরুষোত্তমপুরে গিয়েও নানা অভাব-অভিযোগ শুনেছেন অগ্নিমিত্রা। তাঁর দাবি, ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৫৬, ৫৭, ৮৩, ৮৭ ও ৯৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় ২৭টি রাস্তায় আলো লাগিয়েছেন।
আসানসোল দক্ষিণে দল তাঁকেই প্রার্থী করবে, এমন কোনও ইঙ্গিত কি পেয়েছেন? অগ্নিমিত্রার জবাব, ‘‘আমি তিন বছর ধরেই জনসংযোগ কর্মসূচি করছি। যখনই সময় পাই, সাধ্যমতো এলাকাবাসীর পাশে থাকার চেষ্টা করি।” তাঁর অভিযোগ, “পুরপ্রতিনিধিরা দায়িত্ব পালন করেন না। তাই বিধায়ককে কাজ করতে হয়।’’ তাঁর দাবি, ৮০ নম্বর ওয়ার্ডে শান্তিনগর নেতাজি রোডে একটি নালা নিয়ে দীর্ঘদিন অভিযোগ ছিল। পুরসভা কাজ না করায়, তা তিনি সংস্কার করিয়েছেন।
তৃণমূল নেতৃত্ব অগ্নিমিত্রার কর্মসূচিকে আমল দিতে নারাজ। রাজ্য তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রে দলের এক প্রবীণ নেতাকে প্রার্থী হিসেবে ফিরিয়ে আনার ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে লড়াই শক্ত হবে বুঝছেন বিজেপি বিধায়ক। আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের দাবি, “পুরপ্রতিনিধিরা দিনরাত পরিশ্রম করেন। তার পরেও কারও কোনও অভিযোগ থাকলে আমার দফতরে আসেন। উনি (অগ্নিমিত্রা) বিভ্রান্ত করছেন।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)