Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
কালনা মহকুমা হাসপাতাল

রক্ষী নেই, গল্প চলছে ওয়ার্ডেই

রবিবার ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেল, ছবিটা সম্পূর্ণ অন্য। সকাল হতে না হতেই হাসপাতালের বিভিন্ন দরজা দিয়ে ওয়ার্ডে দলে দলে লোক ঢুকছে। রোগীর বিছানায় বসেই গল্প, খাবার খাওয়ানো, তারস্বরে চিৎকার, সবই চলছে।

রোগীর বেডেই। নিজস্ব চিত্র

রোগীর বেডেই। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:১৮
Share: Save:

মাইকে আবেদন, ‘রোগীর বাড়ির লোকজন যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা দয়া করে বাইরে যান। চিকিৎসক রোগী দেখতে ঢুকছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ভাল পরিষেবা দিতে সাহায্য করুন।’ কিন্তু কালনা মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সদের অভিযোগ, ওয়ার্ড থিকিথিক করছে রোগীর আত্মীয়দের ভিড়ে। নজরদারির অভাবের কারণেই এমনটা ঘটছে়, অভিযোগ স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ফি দিন ২৫০-র বেশি রোগী ভর্তি থাকেন বিভিন্ন ওয়ার্ডে। সকাল থেকে এর জন্য প্রচুর মানুষের আনাগোনাও শুরু হয় হাসপাতাল চত্বরে। তবে ওয়ার্ডে ঢুকতে গেলে নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। সেটা কী? হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এক জন রোগী ভর্তি হলে তাঁর পরিবারকে একটি কার্ড দেওয়া হয়। তা নিয়ে এক জন মাত্র আত্মীয় বা পরিচিতের ওয়ার্ডে ঢোকার অধিকার রয়েছে।

কিন্তু রবিবার ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেল, ছবিটা সম্পূর্ণ অন্য। সকাল হতে না হতেই হাসপাতালের বিভিন্ন দরজা দিয়ে ওয়ার্ডে দলে দলে লোক ঢুকছে। রোগীর বিছানায় বসেই গল্প, খাবার খাওয়ানো, তারস্বরে চিৎকার, সবই চলছে।

এই পরিস্থিতিতে কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সমস্যায় পড়ছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি। এমনকী স্বাস্থ্য-পরিষেবা দিতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘ওয়ার্ডে গিজ গিজ করছে লোক। অনেকে আবার নানা প্রশ্ন করে তর্কও জুড়ছেন। ভিড়ে রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।’’

এই কারণে অন্তত চিকিৎসার সময়টুকু ওয়ার্ড থেকে পরিজনদের বেরিয়ে যাওয়ার আবেদন জানানো হয় বারেবারে। কিন্তু কর্তব্যরত নার্সদের অভিযোগ, অনেকেই আছেন, যাঁদের বারবার আবেদন করেও রোগীর শয্যার পাশ থেকে নড়ানো যায় না।

কী ভাবে ওয়ার্ডের ভিতরে বাধাহীন ভাবে ঢুকছেন দলে দলে লোক? একাধিক চিকিৎসকের অভিযোগ, নজরদারির অভাবের কারণেই এমনটা ঘটছে। সপ্তাহভর হাসপাতালের বিভিন্ন দরজা পাহারা দেওয়ার জন্য রয়েছেন মাত্র আট জন রক্ষী। তা দিয়ে এই বিপুল সংখ্যক লোক জনের উপরে নজরদারি চালানো যায় না বলেই দাবি।

হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বড়াইও বলেন, ‘‘রক্ষীর সংখ্যা কম থাকার কারণেই নিয়ম ভেঙে ওয়ার্ডে এমন অবাধ-প্রবেশ হচ্ছে। পরিষেবা দিতে গিয়েও সমস্যা হচ্ছে। তবে দ্রুত কয়েক জন রক্ষী মিলবে। তারপরেই কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE