Advertisement
E-Paper

fertiliser: সারের জোগান কম, কালোবাজারির নালিশ

এই জেলার শীতকালীন গ্রামীণ অর্থনীতি অনেকটাই আলু চাষের উপরে নির্ভরশীল। চাষিরা জানাচ্ছেন, আলু চাষের জন্য সব থেকে বেশি রাসায়নিক সারের প্রয়োজন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২১ ০৮:১৯
চলছে আলু চাষের জমি প্রস্তুতি, বর্ধমানের ইদিলপুরে।

চলছে আলু চাষের জমি প্রস্তুতি, বর্ধমানের ইদিলপুরে। নিজস্ব চিত্র।

আলু এবং পেঁয়াজের চাষের শুরুতেই রাসায়নিক সারের অভাব দেখা দিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার বহু এলাকায়। চাষিদের দাবি, বেশ কিছু সমবায়ে রাসায়নিক সার মিলছে না। এই সুযোগে অনেক সার ব্যবসায়ী চড়া দাম হাঁকছেন বলেও অভিযোগ। জেলায় সার মজুত কেমন, তা জানতে রবিবার কৃষি দফতর সারের ডিলার ও সার সরবরাহকারী সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে বর্ধমানে বৈঠক করে।

এই জেলার শীতকালীন গ্রামীণ অর্থনীতি অনেকটাই আলু চাষের উপরে নির্ভরশীল। চাষিরা জানাচ্ছেন, আলু চাষের জন্য সব থেকে বেশি রাসায়নিক সারের প্রয়োজন। চাষের শুরুতেই সে জন্য তাঁরা সার তুলে নিতে চান। বিঘা প্রতি জমিতে আড়াই বস্তা ডিএপি, চার বস্তা দশ ছাব্বিশ ছাব্বিশ এবং ৪০-৮০ কেজি ইউরিয়া লাগে। চাষিদের দাবি, যেহেতু এ সময়ে প্রচুর সারের প্রয়োজন হয়, সে সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কালোবাজারি শুরু করে দিয়েছেন। যদিও সার ব্যবসায়ীরা সে অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেন, জোগান কম। তাই যাঁরা বেশি দামে সার কিনছেন, তাঁরা দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন।

চা গ্রামের আলু চাষি অরূপ ঘোষের দাবি, ‘‘এলাকার সমবায় সমিতিতে রাসায়নিক সার মিলছে না। প্রায় ৭০০ টাকা বেশি দাম দিয়ে আমাকে ২০ বস্তা রাসায়নিক সার কিনতে হয়েছে। সার নিয়ে যে কালোবাজারি চলছে, তা বিডিও-র নজরে আনা হয়েছে। তিনি লিখিত অভিযোগ জমা দিতে পরামর্শ দিয়েছেন।’’ আলু চাষি হালিম সেখের দাবি, ‘‘যে সারের মূল্য বস্তায় ১,৫২৫ টাকা লেখা রয়েছে, তা কালনা ১ ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় ১৬৮০ টাকা, ১৭১০ টাকা, ১৭৫০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। বাধ্য হয়ে চাষের জন্য বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে রাসায়নিক সার। সারের দোকানগুলোতে প্রশাসনের অভিযান চালানো উচিত।’’

আলুর পাশাপাশি, রবি মরসুমে প্রচুর জমিতে ‘সুখসাগর’ প্রজাতির পেঁয়াজেরও চাষ করা হয়। কালনা ২ ব্লকের আঙ্গারসন গ্রামের পেঁয়াজ চাষি আব্দুল বাকের জানিয়েছেন, চাষ কিছুটা এগিয়ে গিয়েছে। তবে তাঁদেরও বেশি দামে সার কিনতে হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ডিএপি সারের ছাপানো দাম যেখানে বস্তা পিছু ১১৮০ টাকা, সেখানে ১৬৫০-১৬৮০ টাকা দরে কিনতে হয়েছে।’’

এ দিন জেলার ৬০ জন সারের ডিলার ও সার সরবরাহকারী সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন উপ-কৃষি অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় ও মহকুমার কৃষি আধিকারিকেরা। কৃষি আধিকারিকেরা কোথায় কত সার মজুত রয়েছে, তা জানতে চান। সূত্রের খবর, ১০:২৬:২৬ সারের জোগান জেলায় কিছুটা কম রয়েছে। আলু চাষিদের মধ্যে ওই সার কেনার প্রবণতাই বেশি।

কেন ওই বিশেষ সারের জোগান কম? কৃষি আধিকারিকেরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে চাষিরা আলু চাষের জন্য ওই সার ব্যবহার করছেন। বিকল্প অন্য সারে তাঁরা ঝুঁকতে রাজি নয়। জেলার এক সহকৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘আলু চাষের জন্য প্রয়োজন নাইট্রোজেন, পটাশ ও ফসফরাস। ওই সব রাসায়নিক সমৃদ্ধ অন্য সার ব্যবহারের জন্য চাষিদের বোঝাতে ডিলারদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’’

বৈঠকে সার সরবরাহকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা আশ্বাস দেন, দিন পাঁচেকের মধ্যে জেলায় ওই সব সারের জোগানের সমস্যা মিটে যাবে। এক কৃষি আধিকারিকের কথায়, ‘‘বিশ্ব-বাজারে পটাশের দাম বেড়েছে। ফলে ওই সারের উৎপাদন কিছুটা কমেছে। তবে আশা করছি সমস্যা দ্রুত মিটবে।’’ সেই সঙ্গেই তাঁরা সারের কালোবাজারি হলে তা বরদাস্ত করা হবে না বলে সতর্ক করে দেন। সে ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকা কালনা ২ ব্লকের অন্যতম রেশন ডিলার রথীন হাজরা দাবি করেন, ‘‘চড়া দামে ডিলারেরা সার বিক্রি করছেন, এমন অভিযোগ খুব কম। সাধারণত, সামান্য লাভ রেখে ডিলারেরা সার বিক্রি করেন। সবাই বেশি দাম নিচ্ছেন, এমন নয়।’’

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy