Advertisement
E-Paper

চালকলে রাজস্বের নামে তোলা, অভিযোগ

রাজস্ব আদায়ের নামে চালকল মালিকদের কাছ থেকে ‘তোলা’ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটির সচিবের বিরুদ্ধে। বেঙ্গল রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা জেলাশাসক এবং কৃষি বিপণন মন্ত্রীর কাছে ওই অভিযোগ করেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৬ ০১:২৭
তন্ময় চৌধুরী, অভিযুক্ত সচিব

তন্ময় চৌধুরী, অভিযুক্ত সচিব

রাজস্ব আদায়ের নামে চালকল মালিকদের কাছ থেকে ‘তোলা’ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটির সচিবের বিরুদ্ধে। বেঙ্গল রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা জেলাশাসক এবং কৃষি বিপণন মন্ত্রীর কাছে ওই অভিযোগ করেছেন। বিভাগীয় সচিবকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে বর্ধমান জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটির (আরএমসি) সচিব তন্ময় চৌধুরীর দাবি, “মৌচাকে ঢিল ছুঁড়েছি, তাই ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে।”

মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসক তথা ওই সংস্থার চেয়ারম্যান সৌমিত্র মোহন বলেন, ‘‘চালকল মালিকেরা নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটির সচিবের বিরুদ্ধে তোলা আদায়-সহ একগুচ্ছ অভিযোগ করেছেন। আমরা খতিয়ে দেখছি।’’ আর মন্ত্রী তপনবাবু বলেন, ‘‘বেঙ্গল রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবনাথ মণ্ডল আমার কাছে অভিযোগ করেছেন। আমি বিভাগীয় সচিবকে তদন্ত করে দেখতে বলেছি।”

কিন্তু ওই আধিকারিকের বিরুদ্ধে এ হেন গুরুতর অভিযোগ করার কারণ কী?

বেঙ্গল রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবনাথ মণ্ডলের অভিযোগ, “কাউকে না জানিয়ে ওই সচিব এক আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে হঠাৎ করে বিভিন্ন চালকলে গিয়ে শেষ তিন বছরের লেনদেন দেখছেন। তারপরে ১৯৭২ সালের একটি আইন অনুসারে ‘মার্কেট ফি’ বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা চেয়ে আইনি নোটিস দিচ্ছেন। চলতি বছরের ‘মার্কেট ফি’ রাজস্ব হিসেবে দিয়ে দেওয়ার কথাও বলা হচ্ছে। এ ছাড়াও বাকি বছরগুলির রাজস্বের বদলে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করা হচ্ছে।” ওই সমিতির হিসেব অনুযায়ী, বর্ধমান জেলায় এখন ৩২৫টি মিল চালু রয়েছে। এর মধ্যে ১২৭টি চালকলে ‘মার্কেট ফি’ চেয়ে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে। আর ৩২টি চালকল মালিকের কাছ থেকে রাজস্বের বাইরেও টাকা নিয়েছেন আরএমসির সচিব। দেবনাথবাবুর দাবি, “জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগে আমরা জানিয়েছি, রাজস্ব আদায়ের নাম করে ব্যক্তিগত স্বার্থে আরএমসি সচিব ওই টাকা তুলছেন।’’

যদিও নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির কর্তারা পাল্টা দাবি, তন্ময়বাবু বর্ধমানে সচিব হয়ে আসার পর থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় বেড়েছে। গত দু’বছর সমিতির রাজস্ব আদায় ছিল ৪০ লক্ষ টাকা। এ বছরের প্রথম ৬ মাসে রাজস্ব আদায় তিন গুণ বেড়েছে। শুধু তাই নয়, চালকল মালিকরা বছরে রাজস্ব দিতেন ২ লক্ষ টাকার মতো, সেই সব চালকল মালিকরা চলতি বছরে ৩০ লক্ষ টাকা রাজস্ব দিতে বাধ্য হয়েছেন।

সচিব তন্ময়বাবুও বলেন, “আমাদের দফতরের কিছু কর্মীর যোগসাজসে বেশ কিছু চালকল রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করত। আমরা ওই কর্মীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। চালকল মালিকদের কাছ থেকেও রাজস্ব আদায়ে পথে নেমেছি। চালকল তো বটেই খাদ্য দফতরের কাছ থেকে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য আইনি নোটিস দিয়েছি। ঢিল ছুড়েছি পাটকেল তো খেতেই হবে।”

কয়েক দিন আগে কৃষি বিপণন দফতরের বৈঠকে বর্ধমানে এসেছিলেন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত। সঙ্গে ছিলেন বিভাগীয় সচিব রাজেশ সিংহ। সেখানেই ওই চালকল বেঙ্গল রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা ও বর্ধমান জেলার চালকল মালিক সমিতি যৌথ ভাবে তাঁদের কাছে জেলা আরএমসি সচিবের বিরুদ্ধে রাজস্ব আদায়ের নাম করে তোলা চাওয়ার অভিযোগ করেন। জেলা চালকল সমিতির সহ সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, “আমরা ওই আইন প্রত্যাহারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। তার মধ্যে রাজস্ব আদায়ের নামে সরকারি সংস্থার কর্তাদের দৌরাত্ম্যে আমাদের ব্যবসায় মুশকিল হচ্ছে।’’ যদিও নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, চালকল মালিক সমিতির আবেদনে কয়েক দিন রাজস্ব আদায় করার জন্য চালকলে হানা দেওয়া বন্ধ রয়েছে। সচিব বলেন, “অগস্টের প্রথম থেকেই রাজস্ব আদায়ের অভিযান শুরু হবে। পুরো বিষয়টি জেলাশাসক থেকে বিভাগীয় সচিবকে জানানো রয়েছে।”

Allegation rice mill
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy