Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Electricity Hooking

electricity hooking: তারের জট, শুধু বাজারেই মাসে ক্ষতি ৩৩ লক্ষ টাকার

ক্রেতাদের বড় অংশের অভিযোগ, প্রায় প্রতিটি দোকানই দাহ্যবস্তুতে ঠাসা।

আসানসোল বাজার কার্যত জতুগৃহ।

আসানসোল বাজার কার্যত জতুগৃহ। ছবি: পাপন চৌধুরী

নিজস্ব সংবাদদাতা 
আসানসোল শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২১ ০৬:৩৫
Share: Save:

চার দিকে মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে বিদ্যুৎ, কেবল্, জেনারেটরের তার। এগুলিতে শর্ট সার্কিটের জেরে প্রায়ই আগুন ধরছে আসানসোল বাজারে। মূলত ফুটপাতের দোকানগুলির পলিথিনের ছাউনি পুড়ে যাচ্ছে। দোকানদারদের আশঙ্কা, যে কোনও সময়ে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে আসানসোল বাজারে। পাশাপাশি, ‘অবৈধ’ সংযোগের ফলে প্রতি মাসে বড় অঙ্কের ক্ষতির কথাও জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা।

বাজারে গিয়ে দেখা গেল, হাটন রোড থেকে শুরু করে রাহালেন পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে ফুটপাত জুড়ে দোকান রয়েছে। ক্রেতাদের বড় অংশের অভিযোগ, প্রায় প্রতিটি দোকানই দাহ্যবস্তুতে ঠাসা। বেশির ভাগ দোকানেই বিদ্যুতের খুঁটি, মিটারবাক্স বা ট্রান্সফর্মার থেকে ‘অবৈধ’ ভাবে বিদ্যুৎ-সংযোগ নেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংযোগ নেওয়ার ফলে, বিদ্যুৎ পরিবাহী তার চাপ নিতে পারছে না। আগুন ধরছে। মিটারবাক্স থেকে অবৈধ সংযোগ নেওয়ায় সোমবার বাজারে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন ধরেছিল।’’ সোমবার মুন্সিবাজারে মিটার বাক্সে আগুন ধরে বিপত্তি বাধে। ঠিক এক মাস আগে বাজারের অন্য অংশে বিদ্যুতের তার ও একটি ট্রান্সফর্মারে আগুন লেগেছিল। এই পরিস্থিতিতে দোকান মালিক প্রমোদ খেরকার আশঙ্কা, ‘‘যে কোনও সময়ে পুড়ে ছাই হয়ে যেতে পারে সব। রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার সময় ভাবি, পরের দিন ঠিক মতো দোকান খোলা যাবে কি না!’’

এই পরিস্থিতিতে ‘অবৈধ’ সংযোগের ফলে শুধুমাত্র আসানসোল বাজার এলাকাতেই তাঁদের সংস্থার মাসে ৩৩ লক্ষ টাকা ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান রাজ্য বিদ্যুত বণ্টন সংস্থার ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার শুভেন্দু চক্রবর্তী। কিন্তু তা হলে দফতর অভিযান চালাচ্ছে না কেন? সংস্থার আসানসোল এক নম্বরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ডি কুমারের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘‘তদন্ত চলছে।’’ যদিও সামগ্রিক ভাবে গোটা বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা রয়েছে বলে জানান আসানসোলের পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অভিজিৎ ঘটক। এ দিকে, বণ্টন সংস্থা জানিয়েছে, বিদ্যুৎ চুরি রুখতে বাজার এলাকায় পুরনো বিদ্যুতের তারগুলি খুলে নেওয়া, মাটির তলা দিয়ে বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়া এবং বিশেষ ধরনের মিটার বসানোর তোড়জোড় চলছে। শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘এই কাজগুলির জন্য দরপত্র ডাকা হয়ে গিয়েছে। বর্ষার পরেই কাজে
হাত পড়বে।’’

তবে এই পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তায় বণিকসভাগুলিও। ‘আসানসোল চেম্বার অব কমার্স’-এর সম্পাদক শম্ভুনাথ ঝা বলেন, ‘‘বাজারে আগুন লাগলে একটি বড় অংশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ নিয়ে বিদ্যুৎ দফতরের কাছে আমরা পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছি।’’ ‘আসানসোল ফিশ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক মহম্মদ ইলিয়াস বলেন, ‘‘বাজার এলাকাটি খুবই সঙ্কীর্ণ। ফলে, আগুন লাগলে দমকলের ইঞ্জিনও ঢুকতে পারবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Electricity Hooking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE