দাবি মতো চাঁদা দেননি। সেই ‘অপরাধে’ এক প্রধানশিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে। শুধু তাই নয়, তাঁর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে খুন করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনার জেরে আতঙ্কিত ওই প্রধান শিক্ষক স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেছেন। অন্য দিকে, ওই স্কুলেও সরস্বতীপুজো হয়নি। গ্রামবাসীদের একাংশ আবার ওই প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলে অনিয়মিত আসার অভিযোগ তুলেছেন।
মেমারির চোৎখণ্ড মগলামপুর প্রাথমিক স্কুলের প্রধানশিক্ষক প্রদীপ বিশ্বাসের অভিযোগ, সরস্বতীপুজোর নাম করে গত ৩১ জানুয়ারি কয়েক জন পাঁচ হাজার টাকা চাঁদার দাবি করেন। ওই দলে প্রায় ১৫ জন ছিলেন। কিন্তু দাবি মতো চাঁদা না-দেওয়ায় ওই প্রধানশিক্ষককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকি, তাঁর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে খুনের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এর পরে মেমারি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই প্রধানশিক্ষক। তবে বিদ্যালয়ের অন্য দুই শিক্ষক অর্ণব প্রামাণিক এবং সুভাষ মল্লিক দাবি করেছেন, এ বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানেন না। মগলামপুরের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল হাকিম জানিয়েছেন, ঘটনার কথা তিনি শুনেছেন। প্রশাসন যাতে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে, সেই দাবি জানিয়েছেন তিনি।
অভিযুক্তদের পাল্টা দাবি, তাঁদের বিরুদ্ধে ওই প্রধানশিক্ষক সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁদের ছেলেমেয়েরা ওই স্কুলে পড়ে। ওই দিন তাঁরা স্কুলে গিয়েছিলেন সেখানে সরস্বতী পুজো হবে কি না, তা জানতে। তাঁদের অভিযোগ, বিষয়টি জিজ্ঞাসা করতেই প্রধানশিক্ষক জানান, তিনি এক জনকে ঠাকুর কেনার টাকা দিয়ে দিয়েছেন। এর বেশি তিনি কিছুই জানেন না। অভিযুক্তদের পাল্টা দাবি, প্রধান শিক্ষকের মানসিক সমস্যা রয়েছে। তিনি মাসের মধ্যে একাধিক বার চাবি হারান। অভিভাবকেরাই বহু বার নতুন তালা-চাবি কিনে দিয়েছেন। শ্রেণিকক্ষের মধ্যেই টেবিলের উপর পা তুলে প্রধানশিক্ষকের ঘুমিয়ে পড়ার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে বলেও দাবি অভিযুক্তদের।
গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, বিদ্যালয়ে এসে প্রধানশিক্ষক হয় ঘুমোন, নয় তো মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তাঁর এই আচরণে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে। গ্রামের ছেলেমেয়েরা অন্য গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে গিয়ে ভর্তি হচ্ছে। দাবি উঠেছে, অবিলম্বে ওই প্রধানশিক্ষককে সরিয়ে তাঁর জায়গায় অন্য কাউকে নিয়ে আসা হোক।