একই দিনে রাজ্যে দুই মৃত্যুর নেপথ্যে এসআইআরকে দায়ী করল মৃতের পরিবার এবং শাসকদল তৃণমূল। পুরুলিয়ার চৌতলায় ‘আত্মহত্যা করেছেন’ অশীতিপর এক বৃদ্ধ। হাওড়ার আমতায় হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধের। যদিও শাসকদলের দাবি উড়িয়ে বিজেপি বলছে, এসআইআর আবহে যে কোনও মৃত্যুর ঘটনাকেই রাজনৈতিক হাতিয়ার করছে তৃণমূল। দুটি ঘটনার সঠিক তদন্ত দাবি করেছে তারা।
আমতার সাবসিট এলাকার বাসিন্দা শেখ জামাত আলির মৃত্যু হয়েছে সোমবার। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, এসআইআর আতঙ্কে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন তিনি। জামাতের পুত্র রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। বৃদ্ধ নিজে দিনমজুরির কাজ করতেন। ছেলের দাবি, প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের ভোটার ছিলেন তাঁর বাবা। তার পরেও এসআইআর শুনানিতে বাবাকে তলব করে নির্বাচন কমিশন। রবিবার বিকেলে ওই এলাকার বিএলও মারফত নোটিস পান। নথি হিসেবে ব্যাঙ্কের বই হাতের কাছে রাখার কথা বলে যান বিএলও। তার পরেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বৃদ্ধ। পুত্রবধূ বলেন, ‘‘বাবা বলছিল, ‘আমায় কি বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেবে?’ আমরা সান্ত্বনা দিই। রবিবার রাত ৩টে নাগাদ ওঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে।’’
আরও পড়ুন:
সোমবার মৃতের বাড়িতে যান স্থানীয় বিধায়ক সুকান্ত পাল। তিনি পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘‘বৈধ ভোটারদের শুনানিতে তলব করে হয়রান করা হচ্ছে। ভোটার তালিকা থেকে প্রকৃত ভোটারদেরই নাম কাটার চক্রান্ত চলছে। এর প্রতিবাদ জরুরি।’’ পুলিশ জানিয়েছে, বৃদ্ধের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
অন্য দিকে, পুরুলিয়ায় দুর্যন মাঝি নামে আদিবাসী সম্প্রদায়ের এক বৃদ্ধ আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর। সোমবার ৮২ বছরের বৃদ্ধের দেহ উদ্ধার হয় স্থানীয় রেললাইন থেকে। তাঁর পুত্র এবং স্ত্রী জানিয়েছেন, সোমবার শুনানির জন্যই এসআইআর কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন তিনি। টোটো ভাড়া করে যাবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু মোড়ে গিয়ে অনেক খুঁজেও টোটো পাননি। কখন শুনানিতে যাবেন, সেই নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। পরে বাড়ির কিছু দূরে রেললাইন থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছে। বৃদ্ধ ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে মনে করছে পরিবারের। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। চলছে রাজনৈতিক চাপানউতর।