ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) শুনানিকেন্দ্রে গিয়ে শুনানি প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিলেন তৃণমূলের আর এক বিধায়ক। ঘটনাস্থল সেই হুগলি। চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদারের পর এ বার ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্রের হুঁশিয়ারি, যত ক্ষণ না দাবিদাওয়া মানা হচ্ছে, তত ক্ষণই এসআইআরের শুনানি বন্ধ থাকবে। অন্য দিকে, শুনানির জন্য যাওয়া পুরুষ-মহিলারা বসে থেকে থেকে ক্ষুব্ধ। সব মিলিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার দুপুরে নিজের বিধানসভা এলাকার একটি শুনানি কেন্দ্রে গিয়ে তৃণমূল বিধায়ক জানিয়ে দেন, বিএলএ-২ কে ঢুকতে না দিলে শুনানি বন্ধ থাকবে। ধনেখালির বিডিওকে হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূল বিধায়ক। অসীমার কথায়, ‘‘যেখানে বিএলএ-২কে অ্যালাও করেছে, সেখানে কাজ চলছে। যেখানে ওই অনুমতি দেয়নি, সেখানে কাজ বন্ধ। বাড়ি বাড়ি সমীক্ষার সময় বিএলএ-২-রা ছিলেন। এখন কেন তাঁরা থাকতে পারবেন না? সেই অর্ডার কপি কোথায়?’’ তাঁর আরও দাবি, বয়স্ক ভোটারদের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুনানি করতে হবে প্রশাসনকে। পরিযায়ী শ্রমিকদের নথিপত্র তাঁর পরিবারের কেউ দিলে তা গ্রহণ করতে হবে। সশরীরে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকের উপস্থিত থাকা অসম্ভব। তিনি বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকেরা বিপদে। বাড়ির লোককে কেন শুনানিতে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ ওরা। ওদের যাতায়াতের খরচ কে দেবে? কমিশন বহন করবে? ওদের বাড়ির লোক যে ডকুমেন্ট দেখাবে, সেটাই নিতে হবে। আর যত ক্ষণ না বিএলএ-২কে না অ্যালাও করবে সেখানে কাজ বন্ধ থাকবে।’’
অন্য দিকে, শুনানির জন্য আসা সকলে বসে বসে ক্ষুব্ধ। এমনই এক প্রৌঢ়ার কথায়, ‘‘১২টা থেকে দাঁড়িয়ে আছি। এখন সাড়ে ৩টে বাজে। সকলের বাড়ির কাজকর্ম আছে। বিডিও ‘হ্যাঁ’, ‘না’ কিছুই বলছেন না। খালি বলছেন, ‘চেয়ার আছে, বসুন।’ আরে, বসে বসে কী করব! কারও কাজকর্ম নেই নাকি!’’ তাঁকে সমর্থন করে এক বধূর মন্তব্য, ‘‘সংসারের কাজকর্ম ছেড়ে চলে এসেছি। কিন্তু এখানে তো শুধু মিটিং আর মিটিং। মিটিং আছে যে আগে বলতে পারত। তা হলে পরে আসতাম।’’ শুনানি বন্ধ থাকা নিয়ে প্রশাসনের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:
তৃণমূলের অসিত, অসীমাদের মূল দাবি, শুনানিতে বিএলএ বা রাজনৈতিক দলের এজেন্টদের থাকতে দিতেই হবে। সূত্রের খবর, দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠকে রবিবারই ওই মর্মে নির্দেশ দিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেও তিনি জানিয়েছিলেন, বিএলএ-দের শুনানিকেন্দ্রে থাকার বিষয়টি আসলে দলনেত্রী মমতার নির্দেশ। তার পরেই দিকে দিকে শাসকদলের নেতাদের এ হেন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে।