অন্ডালে দুর্ঘটনাস্থলে জমায়েত। শুক্রবার। — নিজস্ব চিত্র।
বেহালায় ট্রাকের ধাক্কায় পড়ুয়া মৃত্যুর পরে রাজ্যের নানা প্রান্তের সঙ্গে জেলাতেও স্কুলে গিয়ে সচেতনতা প্রচার চালাতে দেখা গিয়েছে পুলিশ-প্রশাসনকে। কিন্তু সে সব কিছুকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল শুক্রবারের একটি দুর্ঘটনা, মনে করছেন স্থানীয়েরা। অন্ডালের উখড়া পুলিনবিহারী
গোষ্ঠবিহারী বালিকা বিদ্যামন্দিরের সামনে, স্কুল শুরুর সময়েই মোটরবাইকের ধাক্কায় প্রাণ গেল সাধন ভান্ডারী (৬২) নামে এক বৃদ্ধের। এলাকাবাসী, অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, পুলিশকে বার বার জানানোর পরেও স্কুলের সামনের রাস্তায় বাইক-দৌরাত্ম্য
বন্ধ হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ উখড়া পুরাতন হাটতলার ভান্ডারীপাড়ার বাসিন্দা সাধন হেঁটে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। সে সময়ে একটি বাইক তাঁকে ধাক্কা মারার পরে একটি দাঁড়িয়ে থাকা টোটোতেও ধাক্কা মারে। সাধন ও মোটরবাইক চালককে উদ্ধার করে খান্দরা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান এলাকাবাসী। সেখান থেকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় দু’জনকেই। সেখানে চিকিৎসক সাধনকে মৃত বলে জানান। বাইক চালক ওই বেসরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন। অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মোটরবাইকে দু’জন ছিলেন। তাঁদের মাথায় হেলমেটও ছিল না বলে দাবি।
এ দিকে, এলাকায় পুলিশ না থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন এলাকাবাসী। তাঁদের অভিযোগ, স্কুল শুরুর আগে ও ছুটির সময়ে অল্পবয়সিদের মোটরবাইক নিয়ে উৎপাত দীর্ঘদিনের। পুলিশকে বার বার জানিয়েও এই প্রবণতা বন্ধ করা হয়নি। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ইপ্সিতা দে-ও জানাচ্ছেন, ওই রাস্তায় ৫০ মিটারের মধ্যে তিনটি স্কুল আছে। তাঁরও অভিযোগ, “স্কুল শুরু ও ছুটির সময়ে অল্পবয়সিদের বাইক নিয়ে দাপাদাপি দীর্ঘদিনের। ট্র্যাফিক পুলিশের কাছে আর্জি জানিয়েও লাভ হয়নি। এখনও ট্র্যাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি।”
পাশাপাশি, স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা উখড়া পঞ্চায়েতের উপপ্রাধন শরণ সাইগল জানাচ্ছেন, এই রাস্তায় অতীতেও নানা দুর্ঘটনা ঘটেছে। স্কুল শুরু ও ছুটির সময়ে পুলিশ মোতায়েনের জন্য আর্জি জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত অভিভাবক রমাপদ লোহার ও পঙ্কজ মণ্ডলেরাও। তাঁরা বলছেন, “এমন ঘটনার পরে, ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়া-আসা নিয়ে চিন্তা বেড়ে গেল। পুলিশ ব্যবস্থা নিক।”
তবে, এত দিন কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হলেও, এ দিন ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরে দেখা যায়, স্কুলের সামনে রাস্তার দু’দিকে গার্ডরেল বসিয়েছে পুলিশ। তবে এলাকাবাসী চাইছেন ট্র্যাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হোক। অভিযোগ প্রসঙ্গে কিছু না বললেও, পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (ট্র্যাফিক) আনন্দ রায়ের বক্তব্য, “খোঁজ নিয়ে খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ
করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy