দামোদরে স্নান করতে গিয়ে পাথরের মতো কিছু গায়ে ঠেকেছিল পূর্ব বর্ধমানের রায়নার বামুনিয়া গ্রামের মেটে পরিবারের এক সদস্যের। জল থেকে তুলে তাঁরা দেখেন, সেটি কালো পাথরের উপর খোদাই করা প্রাচীন মূর্তি। বাড়ি এনে ওই মূর্তির পুজোও শুরু করে দেন তাঁরা। মঙ্গলবার ওই মূর্তির খোঁজ পান বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কিউরেটর রঙ্গনকান্তি জানা। তাঁর দাবি, মেটে পরিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নশালায় মূর্তিটি দিতে রাজি হয়েছেন। পুলিশের সাহায্য নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার দুপুরে মূর্তিটি সংগ্রহশালায় আনা হবে। জেলা পুলিশেরও দাবি, রঙ্গনবাবুরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা যথাযথ সাহায্য করবে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালাটি প্রায় ৬০ বছরের পুরনো। প্রচুর প্রাচীন মূর্তি, রাজাদের অভিষেকের ছবি রয়েছে সেখানে। কিউরেটর রঙ্গনকান্তিবাবু বলেন, ‘‘যত দূর জানতে পেরেছি, মূর্তিটি সাড়ে তিন ফুট লম্বা ও আড়াই ফুট চওড়া। কষ্টি পাথরের তৈরি উমা-মহেশ্বর মূর্তি।’’ বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মূর্তিটি নবম-দশম শতকের সময়ের। তাঁদের অনুমান, দামোদরের যেখান থেকে মূর্তিটি মিলেছে, সেখানে নিশ্চিত ভাবে কোনও বসতি ছিল। কোনও কারণে তা নষ্ট হয়ে গেলেও মূর্তিটি থেকে যায়। অথবা মূর্তিটি তৈরি করে দামোদরের পাড় ধরে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার পথেও পড়ে যেতে পারে বলে তাঁদের ধারণা।
বিশেষজ্ঞেরা জানান, কালো পাথরের উপর খোদাই করা মূর্তিটির এক দিকে রয়েছেন উমা, তাঁর পাশে মহেশ্বর। নীচে সিংহ। উমার পাশে ষাঁড়। মূর্তি-বিশেষজ্ঞরা জানান, ওই মূর্তির শৈলী আদি মধ্যযুগের অর্থাৎ, পাল-সেন আমলের। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের (এএসআই) প্রাক্তন অধিকর্তা গৌতম সেনগুপ্ত ওই মূর্তির ছবি দেখে বলেন, ‘‘বাংলার বিশিষ্ট শিল্পরীতির বিশেষ নিদর্শন ওই মূর্তিটি। আদি মধ্যযুগের মূর্তি বলে মনে হচ্ছে।’’