কাটোয়ার টিএসি মাঠ। নিজস্ব চিত্র
মাঠের পাঁচিল ভেঙে যাতায়াতের ‘সুবিধা’র জন্য তৈরি হয়ে গিয়েছে রাস্তা। সন্ধ্যা হলেই বসছে মদের আসর-সহ নানা অসামাজিক কাজকর্ম। অভিযোগ, এমনই দৃশ্য ফি দিন দেখা যায় কাটোয়ার টিএসি ফুটবল ময়দানে। বন্ধ হতে বসেছে খেলাধুলোও। এই পরিস্থিতিতে মাঠটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিক প্রশাসন, এমনটাই দাবি ক্লাব সদস্যদের।
মাঠের দায়িত্বে থাকা কাটোয়ার টাউন অ্যাথলেটিক ক্লাবের বর্তমানে মাত্র চার জন সদস্য জীবিত রয়েছেন। প্রত্যেকেরই বয়স আশি বছরের আশেপাশে। ক্লাব সদস্য গণেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, গোলাম গাউস, শিশির চট্টোপাধ্যায়দের অভিযোগ, এখন রাত হলেই মাঠে মদ্যপদের ভিড় বাড়ে। কিছু জায়গায় সীমানা পাঁচিলও ভেঙে ফেলা হয়েছে। তাঁদের দাবি, ‘‘মাঠটি ফের যাতে খেলাধুলার জন্য ব্যবহার করা যায়, তার ব্যবস্থা করুন মহকুমাশাসক, বিধায়কেরা।’’
বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় পুলিশি নজরদারিও নেই। তাই অবাধেই চলছে অসামাজিক কাজকর্ম। যদিও পুলিশের দাবি, অভিযোগ মেলেনি। তা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অথচ কাটোয়ায় খেলাধুলোর চর্চার ইতিহাসে এই মাঠের গুরুত্ব অপরিসীমা বলে দাবি স্থানীয় ক্রীড়াবিদদের। তাঁরা জানান, এলাকায় খেলাধুলোর চর্চায় উৎসাহ দিতে বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় গোবিন্দরাম চট্টোপাধ্যায় নামে এক জন কাটোয়ার টাউন অ্যাথলেটিক ক্লাবকে কাশীগঞ্জপাড়ায় প্রায় ২০ বিঘা জমি দান করেছিলেন। ক্লাবের সদস্যদের দাবি, জানান, একসময় ‘হুইলার’, ‘হরিশচন্দ্র শিল্ড’-সহ নানা প্রতিযোগিতার খেলা হতো। এই মাঠে খেলে গিয়েছেন প্রদীপ চৌধুরী, সুব্রত ভট্টাচার্যদের মতো ফুটবলারেরাও। কিন্তু সত্তরের দশক থেকে খেলাধুলোর চর্চা কমতে শুরু করে।
এই মাঠে তিন দশক আগে স্টেডিয়াম তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। সেই সময়, ঠিক হয়, দশ বছরের মধ্যে স্টেডিয়াম তৈরি না হলে মাঠটি ফের চলে যাবে ক্লাবের হাতে। দু’দশকেও স্টেডিয়াম তৈরি না হওয়ায় মাঠটি ফের চলে যায় ক্লাবের হাতে। শিশিরবাবুদের দাবি, ‘‘শহরের ভিতরে ও ঘিঞ্জি এলাকায় রয়েছে মাঠটি। তাই স্টেডিয়াম তৈরি করা যায়নি।’’
কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ওনাদের দাবি মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে জানিয়েছি। তবে কিছু জটিলতায় সরকারি ভাবে মাঠটি অধিগ্রহণ করা মুশকিল।’’ বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনার আশ্বাস দিয়েছেন কাটোয়ার মহকুমাশাসক খুরশিদ কাদরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy