Advertisement
E-Paper

তালিকা নিয়ে আপত্তি, সভা ছাড়ল বিরোধীরা

সীমানা পুনর্বিন্যাস এবং ওয়ার্ড সংরক্ষণের তালিকা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বৈঠক বয়কট করল বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, শাসকদল যাতে সুবিধা পায়, সে ভাবে নবগঠিত আসানসোল কর্পোরেশনের এলাকা পুনর্বিন্যাসের তালিকা তৈরি হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৫ ০১:৪৪
বৈঠক বয়কট। আসানসোলে সোমবার। —নিজস্ব চিত্র।

বৈঠক বয়কট। আসানসোলে সোমবার। —নিজস্ব চিত্র।

সীমানা পুনর্বিন্যাস এবং ওয়ার্ড সংরক্ষণের তালিকা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বৈঠক বয়কট করল বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, শাসকদল যাতে সুবিধা পায়, সে ভাবে নবগঠিত আসানসোল কর্পোরেশনের এলাকা পুনর্বিন্যাসের তালিকা তৈরি হয়েছে। প্রশাসনের তরফে অবশ্য জানানো হয়, নানা দলের মতামত নেওয়ার পরেই পুনর্বিন্যাসের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এই তালিকাই চূড়ান্ত। তবে ওয়ার্ড সংরক্ষণের খসড়া তালিকা নিয়ে কেউ কোনও অভিযোগ জানালে ২৫ অগস্ট তার শুনানি হবে।

রানিগঞ্জ, কুলটি ও জামুড়িয়া পুর এলাকাকে আসানসোলের সঙ্গে জুড়ে নতুন এই কর্পোরেশন তৈরি হয়েছে। ১০৬টি ওয়ার্ডের চূড়ান্ত সীমানা পুনর্বিন্যাস করেছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে নানা দলের মতামত জানতে ২৮ জুলাই শেষ বার বৈঠক করেছিল প্রশাসন। সে দিন রাজনৈতিক দলগুলির কাছ থেকে পাওয়া অভিযোগ খতিয়ে দেখে নির্বাচন কমিশন একটি চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করেছে। সোমবার সেটি প্রকাশ করার জন্য প্রশাসনের তরফে আসানসোলে সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়। প্রশাসনের তরফে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) রত্নেশ্বর রায় ও আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস।

পুনর্বিন্যাস তালিকা প্রকাশের পরে ওয়ার্ডগুলির প্রস্তাবিত সংরক্ষণ তালিকার একটি খসড়া প্রকাশ করার কথা ছিল এ দিন। কিন্তু পুনর্বিন্যাসের তালিকা প্রকাশের পরেই বিরোধী বাম, কংগ্রেস ও বিজেপির প্রতিনিধিরা এক সঙ্গে প্রতিবাদ করে ওঠেন। তাঁদের অভিযোগ, সীমানা পুনর্বিন্যাসের খসড়া প্রকাশের দিন তাঁরা বেশ কিছু আপত্তি তুলেছিলেন। সামান্য রদবদল ছাড়া কার্যত সেই তালিকাই রেখে দেওয়া হয়েছে। এই তালিকা তাঁরা মানবেন না বলে দাবি করেন তাঁরা। বৈঠকের মধ্যেই বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা তালিকা ছিঁড়ে স্লোগান দিতে-দিতে বেরিয়ে যান। বৈঠকে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন শুধু তৃণমূলের প্রতিনিধিরা।

বৈঠক শেষে অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) রত্নেশ্বর রায় বলেন, ‘‘আমরা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মতো সীমানা পুনর্বিন্যাসের তালিকা প্রকাশ করেছি ও সংরক্ষণের প্রস্তাবিত খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছি। কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি আপত্তি তুলে বৈঠকে শেষ পর্যন্ত থাকেননি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’ মহকুমাশাসক অমিতাভবাবু জানান, সমস্ত রাজনৈতিক দলের অভিযোগ খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত সীমানা পুনর্বিন্যাস তালিকা তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন। তা পরিবর্তনের আর সুযোগ নেই। এ দিনই সংরক্ষণের প্রস্তাবিত খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে রাজনৈতিক দলগুলিকে ২১ অগস্টের মধ্যে তা জমা দিতে বলা হয়েছে। ২৫ অগস্ট সেই অভিযোগের শুনানি হবে। ২৮ অগস্ট চূড়ান্ত সংরক্ষণ তালিকা প্রকাশ হবে। অমিতাভবাবু বলেন, ‘‘যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তা একেবারে ঠিক। আশা করি, প্রতি বারের মতো এ বারও এই চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশে সাহায্য করবে রাজনৈতিক দলগুলি।’’

বিরোধীদের অবশ্য দাবি, অন্যায় ভাবে পুনর্বিন্যাস তালিকায় নানা বদল করা হয়েছে। ৪১টি ওয়ার্ডে অবৈজ্ঞনিক উপায়ে রদবদল হয়েছে। এই ধরনের বদল বেশি হয়েছে কুলটির ১১টি ও জামুড়িয়ার ৯টি ওয়ার্ডে। আসানসোল উত্তর বিধানসভা এলাকাতেও প্রায় ১৫টি ওয়ার্ডে অযৌক্তিক রদবদল করা হয়েছে বলে বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা দাবি করেন।

সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘প্রশাসন শাসকপক্ষকে বাড়তি কিছু সুবিধা পাইয়ে দিতে বিরোধীদের কোনও ওজর-আপত্তি শুনছেন না। অভিযোগগুলির বাস্তবতা না বুঝে একতরফা তালিকা প্রকাশ করেছে। আমরা এই তালিকা মানছি না।’’ তাঁর দাবি, সংরক্ষণ তালিকারও তাঁরা বিরোধিতা করবেন। শুধু তাই নয়, ২৮ অগস্ট চূড়ান্ত সংরক্ষণ তালিকা প্রকাশের দিন মহকুমার নানা প্রান্ত থেকে এসে বামফ্রন্ট কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ সমাবেশ করবেন প্রশাসনিক দফতরের সামনে।

কংগ্রেসের আসানসোল মহকুমা সভাপতি রবিউল ইসলামের আবার দাবি, ‘‘আমরা এই পুনর্বিন্যাস তালিকা নিয়ে আদালতে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ বিজেপি-র আসানসোল জেলা সাধারণ সম্পাদক তাপস রায়, সম্পাদক প্রশান্ত চক্রবর্তীদের অভিযোগ, ‘‘শাসকপক্ষের পায়ের তলায় মাটি নেই। ওরা এ বার হেরে যাবে বুঝেই প্রশাসনকে দিয়ে নিজেদের সুবিধা মতো সীমানা পুনর্বিন্যাস করিয়েছে। আমরা আন্দোলনে নামব।’’

তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন অবশ্য এ সব দাবি উড়িয়ে বলেন, ‘‘বামেদের আর মানুষ পছন্দ করে না। কংগ্রেসের কোনও অস্তিত্ব নেই। বিজেপি-র মোদী হাওয়াও শেষ হয়ে গিয়েছে। মানুষের সমর্থন পাবে না বুঝে ওরা এ ভাবে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছে।’’

Area distribution Asansol BJP Trinamool congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy