Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বৃষ্টি হলেই জলের তলায় সেতু

কোনওটা সংস্কার হয়েছে বছর দুয়েক আগে। কিন্তু দু’পাশে রেলিংয়ের বদলে বাঁশের বেড়া দিয়েই কাজ সারা হয়েছে। কোনওটা আবার শেষ কবে সংস্কার হয়েছে, এলাকার প্রবীণ বাসিন্দারাই মনে করতে পারেন না। আসানসোল পুরসভা এলাকায় গোটা দশেক সেতুর এখন এমনই হাল।

রেলপাড় এলাকায় নড়বড়ে সেতু।  ছবি: শৈলেন সরকার।

রেলপাড় এলাকায় নড়বড়ে সেতু। ছবি: শৈলেন সরকার।

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৫ ০১:৪১
Share: Save:

কোনওটা সংস্কার হয়েছে বছর দুয়েক আগে। কিন্তু দু’পাশে রেলিংয়ের বদলে বাঁশের বেড়া দিয়েই কাজ সারা হয়েছে। কোনওটা আবার শেষ কবে সংস্কার হয়েছে, এলাকার প্রবীণ বাসিন্দারাই মনে করতে পারেন না।

আসানসোল পুরসভা এলাকায় গোটা দশেক সেতুর এখন এমনই হাল। নদী বা বড় নালার উপরে তৈরি এই সব সেতু শহরে যাতায়াতের জন্য বড় ভরসা। অথচ, সেগুলির অবস্থা দেখলে শিউরে উঠতে হয়। যে কোনও সময়ে সেতুগুলি ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা এলাকার বাসিন্দাদের। সেক্ষেত্রে শুধু যে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপন্ন হবে তা নয়, বড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। সেতুগুলির সমস্যার কথা মেনে নিয়েছে পুরসভা। সম্প্রতি রেলপাড় এলাকায় এই রকম একটি বেহাল সেতু পরিদর্শন করেন আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক সুমিত গুপ্তও।

আসানসোল শহরাঞ্চলে দু’টি নদী রয়েছে মাঝ বরাবর গাড়ুই ও পূর্ব প্রান্তে নুনিয়া। এই দু’টি নদীর উপরে আসানসোলের বিভিন্ন অঞ্চলে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ছ’টি সেতু আছে। সব ক’টিরই বেশ খারাপ অবস্থা। সেগুলি দিয়ে শুধু হেঁটে পারাপার নয়, নিয়মিত যানবাহন যাতায়াত করে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বর্ষায় জল বেড়ে গেলে নদী দু’টি ফুলেফেঁপে ওঠে। তখন পারাপার করতে ভয় হয়।

আসানসোলের জি টি রোডে শতাব্দী শিশু উদ্যানের উল্টো দিকে একটি বড় নালা আছে। তার উপরে প্রায় ৩৫ ফুটের একটি সেতু রয়েছে। বছর দুই আগে সেটি সংস্কার করা হলেও দু’পাশে পাঁচিল তোলা হয়নি। বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। দেখলেই মালুম পড়ে কতটা বিপজ্জনক। কোনও গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারালে অন্তত ১৫ ফুট নীচে গিয়ে পড়বে। বিপদ বুঝেও পুর কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হননি বলে এলাকাবাসীর ক্ষোভ।

৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কল্যাণপুর আবাসন এলাকায় যেতে হলে প্রায় কুড়ি মিটার লম্বা একটি সেতু পেরোতে হয়। সেটি রয়েছে গাড়ুই নদীর উপরে। অন্য সময়ে এই নদী চওড়া খালের মতো দেখতে হলেও বর্ষায় ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। সামান্য বৃষ্টিতে নদী ফুলেফেঁপে ওঠে। বাসিন্দারা জানান, সেই সময় নদীর জল সেতুর উপর দিয়ে বয়ে যায়। সমস্যার এখানেই শেষ নয়। সেতুটি বেশ সরু। চার চাকার গাড়ি তো দূর, দু’টি মোটরবাইক পাশাপাশি যেতে পারে না। বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁরা বহু বার সেতুটি চওড়া ও উঁচু করার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষ তা কানে তোলেননি।

আসানসোলের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে কুরেশি মহল্লার সেতুটি দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে তৈরি হয়েছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেন। চাঁদমারি, কুরেশি মহল্লা, শ্রীনগর, এনআরআর রোড, মক্কু মহল্লা-সহ আশপাশের এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা নিয়মিত এই সেতু ব্যবহার করেন। কিন্তু সেতুটির হাল বেশ খারাপ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, অনেক আবেদন করলেও পুর কর্তৃপক্ষ সেতু সংস্কার করেননি। বাধ্য হয়ে ভাঙাচোরা সেতুটিই ব্যবহার করছেন। শুধু সংস্কার নয়, সেতুটি চওড়া করার দাবিও উঠেছে।

পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, সেতু সংস্কারে ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE