ডাকাতির পরে। বুধবার গন্তারে। নিজস্ব চিত্র
ভরদুপুরে ব্যাঙ্কে ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ডাকাতি করল দুষ্কৃতীরা। বুধবার মেমারির গন্তারে এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় কয়েক লক্ষ টাকা লুট করে পালায় তিন দুষ্কৃতী। খুলে নিয়ে গিয়েছে সিসি ক্যামেরাও। ভরা ব্যাঙ্কে এমন ঘটনায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে এলাকায়।
গন্তারে কাটোয়া-মেমারি রাস্তার উপরে রয়েছে ব্যাঙ্কটি। একটি ভবনের দোতলায় সেটি চলে। কর্মী রয়েছেন জনা ছয়েক। ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা যায়, এ দিন দুপুর ২টো ১০ নাগাদ একটি মোটরবাইকে চড়ে আসে তিন জন যুবক। তখন ব্যাঙ্কে জনা পনেরো গ্রাহক হাজির ছিলেন। নীচে পাহারায় ছিলেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার।
ব্যাঙ্কের কর্মী ও উপস্থিত গ্রাহকদের অভিযোগ, ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে উপরে উঠে আসে দুষ্কৃতীরা। তাদের পরনে ছিল সাদা জামা ও কালো প্যান্ট। সাদা রুমালে মুখ ঢাকা, মাথায় লাল টুপি ও চোখে রোদচশমা ছিল তাদের। এক জন গেটের কাছে দাঁড়িয়ে গ্রাহকদের বসে পড়তে বলে। বাকি দু’জন ভিতরে ঢোকে। সিসি ক্যামেরা খুলে নেয় তারা। এক জন বন্দুক উঁচিয়ে কর্মীদের আটকে রাখে। অন্য জন ভল্টের চাবি নিয়ে গিয়ে টাকাপয়সা লুট করে।
গ্রাহক আরতি ক্ষেত্রপালের কথায়, ‘‘আমি ওই সময়ে ব্যাঙ্কে ঢুকি। ভিতরে গিয়েই দেখি, সবাই হাত উঁচু করে রয়েছেন। এক জন আমাকে বন্দুক দেখিয়ে বসিয়ে দেয়।’’ তিনি বলেন, ‘‘পালিয়ে যাওয়ার সময়ে দুষ্কৃতীরা আমাদের ভল্টের ঘরে ঢুকিয়ে চাবি দিয়ে দিতে চাইছিল। আমি দরজা আটকে কেন আমাদের আটকে দেওয়া হচ্ছে, তা চিৎকার করে জানতে চাই। তা শুনেই ওরা পালিয়ে যায়।’’ প্রত্যক্ষদর্শী গ্রাহক বাসিন্দা চায়না ঘোষ, রেবা মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘তিন দুষ্কৃতী নিজেদের মধ্যে হিন্দিতে কথা বলছিল। প্রত্যেকেরই হাতে পিস্তল ছিল। গো়ড়ায় ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করলেও পরে রুক্ষ আচরণ করছিল ওরা।’’
ওই ব্যাঙ্কের এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের রাজ্য নেতা সুব্রত সিংহের দাবি, খুচরো-সহ প্রায় আট লক্ষ টাকা নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। তিনি বলেন, ‘‘তখন মধ্যাহ্নভোজের সময় চলছিল। কর্মীরা খাওয়াদাওয়া করছিলেন। আচমকা হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা।’’ আশপাশের লোকজনের দাবি, ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়ে মোটরবাইকে চড়ে কাটোয়ার দিকে চলে যায় তিন যুবক।
মাসখানেক আগেই কালনার সিঙেরকোনে দিনের আলোয় ব্যাঙ্কে ঢুকে লুটপাট চালায় দুষ্কৃতীরা। বছর দুয়েক আগে গন্তার থেকে চার কিলোমিটার দূরে রাধাকান্তপুরে ব্যাঙ্ক ডাকাতি হয়। মেমারির রসুলপুরেও বছর কয়েক আগে ব্যাঙ্ক ডাকাতি হয়েছিল। এ দিনের ঘটনার পরে আতঙ্ক তৈরি হয় গন্তারে।
ডাকাতির খবর পেয়ে এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) শৌভনিক মুখোপাধ্যায়, মেমারির ওসি দীপঙ্কর সরকারেরা ব্যাঙ্কে যান। কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাঁরা। সিআইডি-র একটি দলও ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘আমরা তদন্ত শুরু করেছি। প্রয়োজনে সিআইডি-কে তদন্তভার দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy