আবদুল বারিক বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র।
কয়লার অবৈধ কারবারে জড়িত অভিযোগে এ বার আবদুল বারিক বিশ্বাসকে গ্রেফতার করল সিআইডির বিশেষ তদন্তকারী দল বা ‘সিট’। বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর শহরতলির নারায়ণপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা। ধৃতকে শুক্রবার আসানসোলের সিজেএম আদালতে হাজির করানো হয়। সিআইডির তরফে আইনজীবীরা জানান, ধৃতকে দশ দিন সিআইডি-হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক তরুণ মণ্ডল।
গোয়েন্দারা জানান, আবদুল বারিক বিশ্বাস বসিরহাটের এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। ২০১৪ সালের মার্চ মাসে ৪৫ কেজি সোনা পাচার করার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ‘ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স’ (ডিআরআই)। পরে, ইডি তার ২০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে। সিবিআই তাকে গরু পাচার কাণ্ডে খুঁজছিল বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে। এমনকি, তার বাড়িতে তল্লাশিও করা হয়েছিল। সূত্রের দাবি, এক কালে সিপিএম নেতাদের, পরে, তৃণমূল নেতাদের ‘ঘনিষ্ঠ’ ছিল ওই অভিযুক্ত। যদিও কোনও দলই তাদের সঙ্গে বারিকের যোগাযোগেরকথা মানেনি।
সিআইডি সূত্রে খবর, বারিকের রাজ্যের নানা প্রান্তে প্রায় এক ডজন ইটভাটা আছে। জামুড়িয়ার জাদুডাঙায় অংশীদারিতে একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানাও রয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় বারিক তাঁদের জানিয়েছে, সে ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন এলাকা থেকে চোরাই কয়লা কিনে নিজের স্পঞ্জ আয়রন কারখানা ও ইটভাটায় ব্যবহার করত। বারিকের ওই কারখানার যে অংশীদার রয়েছে, তারও খোঁজ চালাচ্ছেন ‘সিট’-এর তদন্তকারীরা।
ভবানী ভবন সূত্রে খবর, গত ৮ জুলাই পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়া থানার পুলিশ ৪০ টন অবৈধ কয়লা বোঝাই একটি ডাম্পার বাজেয়াপ্ত করে। সে অবৈধ কয়লা পাচারের অভিযোগে মির দিলাওয়ার নামের এক জনকে ধরা হয়। এর পরেই এডিজি (সিআইডি)-র নির্দেশে ‘সিট’ গঠন করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়লা পাচার নিয়ে গত কয়েক মাসে পশ্চিম বর্ধমানের অণ্ডাল, জামুড়িয়া, পাণ্ডবেশ্বর থানায় গোটা সাতেক মামলা করেছে ‘ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেড’ (ইসিএল)। সে সব মামলায় কয়লা চুরি, তা পাচার করা এবং কয়লা নিয়ে দুর্নীতি-সহ কয়েক কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সে সব অভিযোগ নিয়েই তদন্ত শুরু করে সিআইডি-র ওই বিশেষ দল। ওই মামলায় ‘সিট’ যুধিষ্ঠির ঘোষ, ওমপ্রকাশ আগরওয়াল, অভিষেক সিংহ ও বিজয় সিংহ নামে আরও চার জনকে গ্রেফতার করেছিল। আদালত তাদের প্রথম দফায় পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। সে হেফাজতের মেয়াদ শেষে, শুক্রবার ফের আদালতে তোলা হলে, বিচারক তাদের তিন দিন সিআইডি-হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy