Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

চৈত্র শেষে বাসন্তী পুজোয় মাতল শিল্পাঞ্চল

দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মতোই শিল্পাঞ্চলেও ধুমধুমারে সঙ্গে পালিত হচ্ছে বাসন্তী পুজো। আচারে পুজোটি প্রায় শারদীয়া দুর্গা পুজোর মতোই। প্রভেদ শুধুমাত্র ‘ঘট স্থাপনের’ নিয়মে। চারদিন ধরে চলে এই পুজো। মার্কণ্ডেয় পুরাণ অনুসারে, মেধা ঋষির পরামর্শে রাজা সমধি বৈশ্য ও রাজা সুরথ পূর্ব বঙ্গে এই পুজোর সূত্রপাত করেন। কালক্রমে তা সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে। শিল্পাঞ্চলেও বিভিন্ন মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেল কোথাও স্বপ্নাদেশ থেকে পারিবারিক ভাবে কোথাও বা আবার এলাকাবাসীর চাহিদা মেনে বারোয়ারি বাসন্তী পুজোর সূত্রপাত হয়েছে।

আসানসোলে বাসন্তী পুজো। ছবি: শৈলেন সরকার।

আসানসোলে বাসন্তী পুজো। ছবি: শৈলেন সরকার।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৫ ০২:০০
Share: Save:

দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মতোই শিল্পাঞ্চলেও ধুমধুমারে সঙ্গে পালিত হচ্ছে বাসন্তী পুজো। আচারে পুজোটি প্রায় শারদীয়া দুর্গা পুজোর মতোই। প্রভেদ শুধুমাত্র ‘ঘট স্থাপনের’ নিয়মে। চারদিন ধরে চলে এই পুজো। মার্কণ্ডেয় পুরাণ অনুসারে, মেধা ঋষির পরামর্শে রাজা সমধি বৈশ্য ও রাজা সুরথ পূর্ব বঙ্গে এই পুজোর সূত্রপাত করেন। কালক্রমে তা সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে। শিল্পাঞ্চলেও বিভিন্ন মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেল কোথাও স্বপ্নাদেশ থেকে পারিবারিক ভাবে কোথাও বা আবার এলাকাবাসীর চাহিদা মেনে বারোয়ারি বাসন্তী পুজোর সূত্রপাত হয়েছে।

বার্নপুরের নবঘন্টীর পুজো ১৯৬২ সাল থেকে চলে আসছে। প্রাথমিকভাবে পুজোটি ৭ টি পরিবার মিলে শুরু করলেও পরে তার দায়িত্ব নেয় নবীন সঙ্ঘ। আয়োজকদের তরফে সভাপতি অশোক বসু জানান, প্রতিদিন থাকছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আসর। বার্নপুর অ্যাথলেটিক ক্লাবের পুজো এ বার ২৬ বছর অতিক্রান্ত হল। ক্লাব সদস্য পরেশ সরকার জানান, এলাকাবাসীর দাবিতেই পুজো শুরু হয়।

পুজো আয়োজনে পিছিয়ে নেই কুলটিও। ৫২ বছর আগে কুলটির রানিতলায় বাসন্তী পুজো শুরু করে ইয়ং বেঙ্গল ক্লাব। ক্লাব সদস্য সঞ্জয় সিংহের জানান, নবমীর দিন পঙক্তি ভোজের আয়োজন করা হয়। নিয়ামতপুরগ্রামে চক্রবর্তী বাড়ির বাসন্তী পুজো শত বছর অতিক্রান্ত। নিয়ামতপুরের বাসিন্দা তুষার চক্রবর্তী, সঞ্জয় আচার্যরা জানান, অন্নপূর্ণা পুজো কমিটি পুজোও এলাকায় যথেষ্ট জনপ্রিয়।

বাসন্তী পুজোকে কেন্দ্র করে জমজমাট পাণ্ডবেশ্বরও। ১৯৭৭ সালে শুরু হয় পল্লীমঙ্গল সমিতির পুজো। সমিতির পক্ষে কানাইলাল মণ্ডল জানান, কালী পুজোর পর এলাকায় কোনও উৎসব থাকত না। এলাকাবাসীর চাহিদাতেই বাসন্তী পুজো শুরু করা হয়। বারাবনির জামগ্রামে রাউত বাড়ির পুজো ৬০ বছর অতিক্রান্ত হল। পরিবারের সদস্য নিমাই রাউত জানান, ব্যক্তিগত চাহিদাতেই পূর্বপুরুষ কালিপদ রাউত পুজো শুরু করেন। পারবারিক পুজো হলেও এখানে যোগ দেন স্থানীয় শিল্পীরাও। বারাবনির জর্নাদন সায়রের রায় বাড়ির পুজোতে আবার সংলগ্ন লালগঞ্জ, এথোড়া, পাঁচগাছিয়া, আঙ্গারিয়া, বোলকুন্ডা গ্রামের মানুষও যোগ দেন বলে জানান পরিবারের সদস্য মন্টু রায়।

পুজোকে কেন্দ্র করে আসানসোল শহরেও বেশ উৎসাহ চোখে পড়ে। ধ্রুবডাঙা জল ট্যাঙ্কের পাশে মহারনীস্থান পুজো কমিটির সম্পাদক সঞ্জয় রাজবংশী জানান, এখানে দেবীর ন’টি রূপের পুজো করা হয়। এটি নবদুর্গা পুজো নামে পরিচিত। আসানসোলের রবীন্দ্রনগরে মাহাতা বাড়ির পুজোটিও বেশ জনপ্রিয়। আসানসোলের রাধানগর রোড গৌরাঙ্গ সেন সরনিতে রামকৃষ্ণ- পূর্ণানন্দ মঠের পুজোটিও পঞ্চাশ বছর পেরিয়েছে। পুজোর আয়োজন করেছে আসানসোলের রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সঙ্ঘও। এ বারই প্রথম পুজো শুরু করল ধ্রুবডাঙার ডিএসএ ক্লাব।

প্রায় ১৫০ বছর আগে জামুড়িয়ার ইকরাই চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজো শুরু করেন পূর্বপুরুষ বিজয়গোবিন্দ চট্টোপাধ্যায়। পুজোকে কেন্দ্র করে ৭ দিনের মেলা বসে। সীতারামপুরে দাশরথি মঠে অখিল ভারত জয়গুরু সম্প্রদায়ের পুজো ৩৩ বছরে পা দিল। অন্যান্য পারিবারিক পুজোগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ডিসেরগড় গ্রামের চট্টোপাধ্যায় বাড়ি, সিহারশোল গ্রামের হাজরা বাড়ির পুজো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE