গত লোকসভা ভোটে বর্ধমানের গ্রামীণ এলাকার বেশ কয়েকটি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রাপ্ত ভোটের বিচারে সাড়া জাগিয়েছিল বিজেপি। বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রে তো বামেদেরকে সরিয়ে দ্বিতীয় স্থানেও উঠে আসে তারা। কিন্তু তারপর রাজ্য রাজনীতিতে বহু পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে। এ বার জোট বেঁধে ময়দানে নেমেছে বাম-কংগ্রেস। জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেস, সিপিএমে দলীয় কর্মীদের চলে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার জেলা সাধারণ সম্পাদক (গ্রামীণ) সন্দীপ নন্দী শহরের বেহাল পরিষেবা নিয়ে সরব হলেন।
বর্ধমানের বড়বাজারে আমরাতলা গলিতে দলের দফতের বসে সন্দীপবাবু অভিযোগ করেন, শহর জুড়ে উন্নয়নের কাজ পরিকল্পনামাফিক করা হয়নি। এ দিন বিজেপি নেতৃত্ব অভিযোগ করেন শহর থেকে তিনকোনিয়া বাসস্ট্যান্ড সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ফলে বিপাকে পড়ছেন বাসিন্দারা। সন্দীপবাবুর অভিযোগ, ‘‘শহর থেকে দূরে বাসস্ট্যান্ড হওয়ায় কালনা, কাটোয়া, গলসি প্রভৃতি এলাকা থেকে মানুষ এসে শহরে ঢুকতে সমস্যায় পড়ছেন।’’ এর ফলে ব্যবসাও মার খাচ্ছে বলে অভিযোগ।
প্রচারে বাঁকা নদীর সংস্কারের বিষয়টিকেও আনা হবে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। অভিযোগ, বাম আমলে নদীর সংস্কারের কোনও কাজ করা হয়নি। এক বিজেপি নেতার অভিযোগ, ‘‘এখন ভোটের মুখে আচমকা শহর সংলগ্ন নদী এলাকায় আচমকা মাটি কাটার যন্ত্র নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ তা ছাড়া কোন এলাকায় আগে নদীর সংস্কার করা দরকার, সে বিষয়েও বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি বলে অভিযোগ।
শহর জুড়ে জিটি রোড, বিসি রোড, খোসবাগান এলাকায় যানজটের ছবিটা দ্বস্তুর। তা নিয়ে বাসিন্দাদের দীর্ঘদিন ক্ষোভও রয়েছে। বিজেপি নেতৃত্ব এই ক্ষোভকেও ভোট প্রচারে কাজে লাগাতে চাইছেন। সন্দীপবাবুর অভিযোগ, ‘‘শহরে পরিকল্পনাহীন ভাবে টোটো চলছে। লাইসেন্স দেওয়ায় বিষয়ে কোনও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই।’’ যদিও তৃণমূল সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই টোটো চলাচল বিষয়ে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। এ ছাড়া শহরের নিকাশি ব্যবস্থাও বেহাল বলে অভিযোগ বিজেপির। বাজেপ্রতাপপুর, রসিকপুর, ভাতছালা, সুভাষপল্লি প্রভৃতি এলাকায় নিকাশির সমস্যা সবথেকে বেশি বলে জানান বাসিন্দারা।
এ দিন খণ্ডঘোষ, বর্ধমান দক্ষিণ, বর্ধমান উত্তর, ভাতার, আউশগ্রাম, গলসি, জামালপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীরাও দলীয় দফতরে উপস্থিত ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে আউশগ্রামের গুসকরা, জামালপুর, গলসি-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বিজেপি নেতা-কর্মীদের দলবদলে শাসক ও বিরোধী দলে নাম লিখিয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, এখন নাগরিক প্রচারকে ঢাল করেই বর্ধমান শহর ও সংলগ্ন এলাকায় ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে বিজেপি।
যদিও বিজেপির এই ‘নাগরিক তোপ’কে মোটেও পাত্তা দিতে নারাজ তৃণমূল। রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে আমরা শহরের প্রচুর উন্নতি করেছি। মানুষ আমাদের ভোট দিয়েই তা ফের প্রমাণ করবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy