Advertisement
E-Paper

আবাস যোজনার তালিকায় দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষোভ

দোমোহানি হাটতলা থেকে বিজেপির শতাধিক কর্মী, সদস্য মিছিল করে বিডিও কার্যালয়ে পৌঁছন। সদর গেটের সামনে তাঁরা বসে পড়েন। শুরু হয় বিক্ষোভ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:৩০
বারাবনিতে বিজেপির বিক্ষোভ। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

বারাবনিতে বিজেপির বিক্ষোভ। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’র বাড়ি প্রাপকদের তালিকায় দুর্নীতির অভিযোগে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে ব্লক অফিসে (বারাবনি) বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক কার্যালয় চত্বরে অবস্থান চলে। পরে দলের তরফে বিডিও-কে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও (বারাবনি) সৌমিত্রপ্রতিম প্রধান। এ দিকে, রানিগঞ্জের বল্লভপুর পঞ্চায়েতেও একই অভিযোগ উঠেছে।

এ দিন দোমোহানি হাটতলা থেকে বিজেপির শতাধিক কর্মী, সদস্য মিছিল করে বিডিও কার্যালয়ে পৌঁছন। সদর গেটের সামনে তাঁরা বসে পড়েন। শুরু হয় বিক্ষোভ। এলাকায় পুলিশি নজরদারিও ছিল। বিডিও অফিসের গায়েই থাকা দলীয় কার্যালয়ে ছিলেন তৃণমূলের নেতা, কর্মীরাও।

বিজেপি-র কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন দলের আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দিলীপ দে। তাঁর অভিযোগ, “বারাবনি ব্লকে আবাস যোজনায় বাড়ি প্রাপকদের তালিকায় এমন অনেকের নাম রয়েছে, যাঁরা এর যোগ্য নন। পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির বহু তৃণমূল সদস্যের নামও রয়েছে। অথচ প্রকৃত গরিব পরিবার, যাঁরা বছরের পর বছর আবেদন করেও বাড়ি পাননি।” বিজেপি নেতৃত্ব জানান, তাঁরা ব্লক অফিসে একটি নামের তালিকা দিয়ে সেটি গুরুত্ব দিয়ে দেখে অযোগ্যদের নাম বাদ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। বিক্ষোভ অবস্থানে যোগ দিয়ে দোমোহানি পঞ্চায়েতের বাসিন্দা লক্ষ্মী বাগদি, ঝর্ণা দাস-সহ আরও অনেকেই অভিয়োগ করেন, ২০০৬ থেকে তাঁরা বাড়ির জন্য আবেদন জানিয়ে আসছেন। মাটির বাড়িতে প্লাস্টিকের ছাউনি খাটিয়ে তাঁরা কোনও রকমে দিনযাপন করছেন। তার পরেও বাড়ি প্রাপকদের তালিকায় তাঁরা নেই।

বিডিও অবশ্য জানান, গুরুত্ব দিয়ে বাড়ি প্রাপকদের নামের তালিকা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। কোথাও অনিয়ম থাকলে, সে সব নাম বাদও দেওয়া হয়েছে।

এ দিকে, ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮-র বাড়ি প্রাপকদের তালিকায় প্রাথমিক ভাবে ৪,৭৩৫ জনের নামের তালিকা তৈরি হয়েছিল। গত কয়েক দিনের লাগাতার পর্যবেক্ষণের শেষে প্রায় ৯৮৪ জনের নাম বাদ পড়েছে। এ পর্যন্ত ৩,৭৫১ জনের তালিকা তৈরি হয়েছে। বিডিও বলেন, “ঝাড়াইবাছাইয়ের কাজ এখনও চলছে। ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হবে।”

বিজেপি যে তালিকা জমা দিয়েছে, সেখানে বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ (শিক্ষা) প্রদীপ মিশ্রের নাম বাড়ি প্রাপকদের তালিকায় ছিল বলে দাবি করা হয়েছে। প্রদীপের অবশ্য প্রতিক্রিয়া, “২০০৬-এ ওই তালিকা তৈরি হয়। সে সময় আমি মাটির বাড়িতে থাকতাম। পরে ঋণ নিয়ে বাড়ি করেছি। কিন্তু তালিকা থেকে আগেই আমার নাম বাদ দিতে বলেছি।”

এ দিকে, বল্লভপুর পঞ্চায়েত এলাকায় আবাস-যোজনায় প্রাপকদের প্রস্তাবিত তালিকায় প্রায় ৩৩ শতাংশেরই পাকা বাড়ি রয়েছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি এ বিষয়ে বিক্ষোভও দেখান কয়েক জন। তাঁদের সূত্রে জানা গিয়েছে, নূপুর গ্রামে এমন ছ’জনের নাম তালিকায় রয়েছে, যাঁরা কেউ পেশায় সম্পন্ন চাষি, কেউ বেসরকারি কারখানা, কেউ বা কাগজকলের কর্মী। প্রত্যেকেই পাকাবাড়িতে থাকেন। অথচ, পরেশ বাউড়ি নামে এক জন বলেন, “২০১৮-য় আবেদন করে আজও বাড়ি পাইনি।”

স্থানীয় সিপিএম নেতা হেমন্ত প্রভাকর জানান, এই বিষয়টি নিয়ে তাঁরাও সরব হবেন। পাশাপাশি, বিজেপি নেতা সভাপতি সিংহের অভিযোগ, “আবাস যোজনায় নাম নথিভুক্ত করতে বাসিন্দাদের একাংশ আবেদন জানান। তার পরে সমীক্ষা করেন রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মীরা। তাঁরা রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট।” তবে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সিধান মণ্ডলের দাবি, “এই পঞ্চায়েত এলাকায় ৯৯ জনের নাম আবাস-তালিকায় নথিভুক্ত হয়েছিল। বিডিও দফতরের কর্মীরা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা করার পরে, ৩৫ জনের নাম বাতিল করা হয়েছে।”

PMAY BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy