মঙ্গলকোটের নতুনহাটে বিজেপির সভা। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়
বাম আমলে এই এলাকায় তাদের টুঁ শব্দ করার জো ছিল না বলে অভিযোগ করত বিরোধীরা। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে সেই অভিযোগের তির ঘোরে শাসকদলের দিকে। সন্ত্রস্ত এলাকা হিসেবে পরিচিত বর্ধমানের সেই মঙ্গলকোটে এ বার পা রাখল বিজেপি।
রবিবার মঙ্গলকোটের নতুনহাটে অজয় নদের ধারে জনসভা করল বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের উপস্থিতিতে অন্য নানা দলের বেশ কয়েক জন বিজেপি-তে যোগ দিলেন। দীর্ঘ দিন পরে এই এলাকায় বিজেপির প্রথম কোনও জনসভায় কয়েক হাজার মানুষের ভিড় দেখে রাহুলবাবু তৃণমূলের উদ্দেশে বলেন, “সন্ত্রাস করে মঙ্গলকোটে আমাদের আটকানো যাবে না। আপনাদের দলের কর্তারা ভবিষ্যতে বিজেপিতে চলে আসবেন। তাই আর লড়াই করবেন না।”
আজ, সোমবার মঙ্গলকোটের নতুনহাটেই লালডাঙা মাঠে রেলভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে সভা করবে তৃণমূল। সেখানে থাকার কথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় ও বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের।
বিজেপি-র সভার আগে শনিবার রাত থেকেই মঙ্গলকোটের নানা এলাকায় অশান্তি হয়। বিজেপি-র অভিযোগ, যেখানে তাদের সভার মঞ্চ বাঁধা হচ্ছিল, তার আশপাশে বোমাবাজি করে তৃণমূলের লোকজন। মণ্ডপ বাঁধা বন্ধ করে কাছে অজয়ের সেতুতে আশ্রয় নেন কর্মীরা।
পুলিশ রাতে গিয়ে মঞ্চ পাহারা দেয়। নতুনহাট ছাড়াও মঙ্গলকোট গ্রাম, ঝিলু-সহ নানা এলাকায় বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ।
এ দিন সকালে তাঁদের পতাকা টাঙাতে বাধা, বাস মালিকদের হুমকি দিয়ে অনেক জায়গায় বাস আটকে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন বিজেপি-র বর্ধমান জেলা (পূর্ব) সভাপতি রাজীব ভৌমিক। তবে তাঁর দাবি, “নানা ভাবে সন্ত্রাস করেও আমাদের কর্মী-সমর্থকদের আসা আটকাতে পারেনি তৃণমূল।” তৃণমূলের মঙ্গলকোট ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী অবশ্য বলেন, “লোকজন হচ্ছে না বুঝে বিজেপি অপবাদ দিচ্ছে।”
এ দিন বিজেপি-তে যোগ দেন তৃণমূল কর্মী খুন, মঙ্গলকোটের ধান্যরুখীতে কংগ্রেস বিধায়কদের মারধর-সহ নানা ঘটনায় অভিযুক্ত সিপিএম নেতা অশোক ঘোষ। এ ছাড়া কিছু তৃণমূল নেতা-কর্মীও দলবদল করেন। বিজেপি-র দাবি, মঙ্গলকোট বিধানসভার সব পঞ্চায়েত মিলিয়ে অন্য দল ছেড়ে তাদের দলে যোগ দিয়েছেন ১৩ হাজার ৮০০ জন। রাহুলবাবু বলেন, “এক দিনে একটি বিধানসভায় ১৩ হাজার ৮০০ মানুষ আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন! ভবিষ্যতে মঙ্গলকোট কোন দিকে যাচ্ছে, বুঝতে পারছেন?” তৃণমূল নেতা অপূর্ববাবুর পাল্টা মন্তব্য, “ইচ্ছে মতো যা খুশি দাবি তো করাই যায়!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy