প্রতীকী ছবি।
ভোট-পরবর্তী হিংসায় মদত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বিজেপির নেতা খোকন সেন ওরফে বিশ্বজিৎকে। বৃহস্পতিবার রাতে বিজেপির সাংগঠনিক জেলা দফতর থেকে বেরনোর পরে পুলিশ তাড়া করে কালীবাজার আমতলা থেকে তাঁকে ধরে। ভোটের পরে লক্ষ্মীপুর মাঠে রিভলবার নিয়ে হামলা চালানোর মামলায় বাদশাহী রোডের বাসিন্দা ওই নেতাকে শুক্রবার আদালতে তোলা হলে চার দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়। আগেও তাঁকে অস্ত্র-আইনের মামলায় পুলিশ ধরেছিল।
বর্ধমান থানা থেকে আদালতে যাওয়ার পথে বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভার বিজেপির উপ-আহ্বায়ক খোকন সেন দাবি করেন, “আমার বিরুদ্ধে কে বা কারা মিথ্যা অভিযোগ করেছে জানি না। তাঁদের চিনিও না। রাজনৈতিক উদ্দেশে, গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধের জন্যেই আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, খোকন সেনের বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। বোমাবাজি থেকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘোরার অভিযোগ রয়েছে। তেমনই মারধর, হামলা, খুনের চেষ্টারও অভিযোগ রয়েছে তাঁর নামে। ভোটের আগে বর্ধমান শহরে একাধিক রাজনৈতিক হিংসায় তাঁর নাম জড়ায়। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ঘোরদৌড়চটির একটি জায়গায় দিনভর থাকতেন ধৃত। রাতের দিকে শহরের বিভিন্ন ডেরায় যেতেন। দু’এক বার বাড়িও গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সেই রকম একটি ডেরায় যাওয়ার পথেই পুলিশ তাঁর পিছু নেয়।’’ পুলিশ জানিয়েছে, বছর দু’য়েক আগে লোকসভা ভোটের পরে বর্ধমান স্টেশনে বোমাবাজি, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অশান্তি করার অভিযোগেও বিজেপির ওই নেতাকে ধরা হয়েছিল।
পুলিশের দাবি, বিধানসভ ভোটের পরের দিন, ১৮ এপ্রিল লক্ষ্মীপুর মাঠ ও কাঞ্চননগরে পরপর দু’টি অশান্তি হয়। কাঞ্চননগরে তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে হামলা, একের পর এক মোটরবাইক পোড়ানোর অভিযোগ ওঠে। লক্ষ্মীপুর মাঠে খোকন সেনের নেতৃত্বে আটটি বাড়িতে হামলা চালানো হয় বলেও অভিযোগ। পরিস্থিতি দেখতে গেলে বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক খোকন দাসের উপরেও হামলার অভিযোগ ওঠে। ওই এলাকার বাসিন্দা রঞ্জিত সাউ বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেন, খোকন সেনের নেতৃত্বে এলাকায় তাণ্ডব চালানো হয়েছে। রিভলবার দিয়ে তাঁকে খুনের চেষ্টাও করা হয়েছে। ওই হামলায় এক তৃণমূল কর্মীর মাথায় আঘাত লাগে।
বিধায়ক খোকন দাস বলেন, “সিপিএমের সময় থেকেই খোকন সেন বর্ধমান শহরে কুখ্যাত দুষ্কৃতী বলে পরিচিত। বিজেপিতে আসার পরেও চরিত্র বদলায়নি। ভোটের পরে লক্ষ্মীপুর মাঠ, কাঞ্চননগর-সহ গোটা বর্ধমান শহরের মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল।’’ এ দিন বর্ধমান থানা ও আদালতে হাজির ছিলেন বিজেপির নেতা সন্দীপ নন্দী, সুনীল গুপ্ত, কল্লোল নন্দনেরা। তাঁদের দাবি, “পুলিশ দলদাসে পরিণত হয়েছে। মিথ্যা অভিযোগে আমাদের আটকানো যাবে না। আইনের লড়াই চলবে।’’ ধৃতের আইনজীবী কমল দত্তের দাবি, ‘‘এই ঘটনায় আগে ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরের দিনই তাঁরা জামিন পান। দু’পক্ষ আদালতে হলফনামা জমা দেয়। বিষয়টি মিটমাটও হয়ে গিয়েছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy