প্রায় দু’বছর আগে বৃহত্তর আসানসোল পুরসভা তৈরির পরে আশা জেগেছিল, হয়তো এই এলাকার পরিবহণ ব্যবস্থার খোলনলচে বদলে যাবে। কিন্তু আশাই সার। জামুড়িয়ার বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ী, সকলেরই অভিযোগ, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কোনও বাস নেই। এমনকী, সন্ধ্যা নামলেই জেলার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন এলাকায় রাতের পরে আর বাস-যোগাযোগ থাকে না।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা। জামুড়িয়া বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী। আসানসোল যাবেন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও বাস না মেলা অগত্যা তাঁকে ভাড়া গাড়ির খোঁজ করতে দেখা গেল। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘দোকান গুছোতে দেরি হয়ে গিয়েছে। এখন প্রায় পাঁচশো টাকা গুণে আসানসোল যেতে হবে।’’ বাসিন্দারা জানান, সন্ধ্যা সাতটার পরে আসানসোল, রানিগঞ্জ ও ছ’টার পরে হরিপুরে যাওয়ার বাস থাকে না। গাড়িতে রানিগঞ্জের ভাড়া প্রায় তিনশো টাকা।
অথচ জামুড়িয়ার বাসিন্দারা কলেজ, হাসপাতাল, প্রশাসনিক দফতর-সহ নানা কাজে আসানসোল, রানিগঞ্জের উপরে নির্ভর করেন। স্থানীয় শিল্পপতি অশোক সান্থালিয়া জানান, হরিপুরের বহু মানুষের দোকান রয়েছে জামুড়িয়ায়। রানিগঞ্জ থেকেও বহু দিনমজুর আসেন এখানে।
একই হাল দূরপাল্লার বাসেও। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা বিশ্বনাথ যাদব জানান, জামুড়িয়া থেকে কলকাতা যাওয়ার একটি সরকারি বাস রয়েছে। কিন্তু দুর্গাপুর, বধমান, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া পর্যন্ত কোনও সরকারি বাস নেই।
আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায় জানান, জামুড়িয়া থেকে আসানসোল, হরিপুর ও রানিগঞ্জ যাওয়ার মিনিবাসের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৪, ৩২ ও ১৯টি। সন্ধ্যা সাতটার পরে রানিগঞ্জ স্টেশন থেকে জামুড়িয়া পর্যন্ত একটি বাস রয়েছে। সুদীপবাবুর অভিযোগ, ‘‘অবৈধ অটো-টোটোর দৌরাত্ম্যের কারণেই ওই সব রুটে বাস চালানো যাচ্ছে না।’’
তবে নতুন জেলা হওয়ায় পরিস্থিতি পাল্টাতে পারে বলে আশা বীরকুলটি গ্রামের শিক্ষক স্বরাজ দত্তের। তাঁর কথায়, ‘‘জেলা ভাগে উন্নয়ন তহবিল অনেকটাই বেশি হবে। আশা করি, এ বার সমস্যা মিটবে।’’ আসানসোলের মহকুমাশাসক প্রলয় রায়চৌধুরীর অবশ্য আশ্বাস, ‘‘সমীক্ষা করে এই সমস্যার সমাধানে পরিকল্পনা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy