E-Paper

শহরের ভিতরে বাস চলায় নিষেধ

২০২২ সালের ২ সেপ্টেম্বর হাই কোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ২০১৪ সালে কলকাতা গেজ়েটে বর্ধমান শহরের ট্রাফিক সংক্রান্ত নির্দেশিকা মান্যতা দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৫৮
বর্ধমান শহরের ভিতরে বাস ঢোকার নিষেধাজ্ঞার পরে প্রশাসনের অভিযান। আলিশা বাসস্ট্যান্ডে।

বর্ধমান শহরের ভিতরে বাস ঢোকার নিষেধাজ্ঞার পরে প্রশাসনের অভিযান। আলিশা বাসস্ট্যান্ডে। — নিজস্ব চিত্র।

শহরের মূল অংশ দিয়ে শুধু টাউন সার্ভিস বাস এবং স্কুলবাসই চলতে পারবে, গত বছর সেপ্টেম্বরে বর্ধমানে বাস চলাচল নিয়ে নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে বড়শুল, মেমারি, খণ্ডঘোষের বাস মালিকদের একাংশ ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ও বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ সম্প্রতি সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বহাল রেখেছেন। এই নির্দেশের ফলে, আরামবাগ, বাঁকুড়া, মেমারি, বড়শুল, খণ্ডঘোষ, রায়নার ছোট ও বড় রুটের বাস আর বর্ধমান শহরের ভিতর দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে না। তা মেনে চলা হচ্ছে কি না দেখতে মঙ্গলবার পরিবহণ দফতর ও পুলিশ যৌথ ভাবে উল্লাসের আলিশা বাসস্ট্যান্ডে অভিযান চালায়।

জেলা পরিবহণ আধিকারিক (আরটিও) অনুপম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘২০১৪ সালে কলকাতা গেজ়েটের বিজ্ঞপ্তি বজায় রাখতে বলেছিল হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশই বহাল রাখতে বলেছেন ডিভিশন বেঞ্চ। এর ফলে শহরের মূল অংশে বাইরের কোনও বাস ঢুকবে না।’’ বর্ধমান শহরের স্টেশন, বীরহাটা, উল্লাস, তেলিপুকুর দিয়ে ছোট ও দূরপাল্লা মিলিয়ে প্রায় দেড়শো বাস চলাচল করে। হাই কোর্টের নির্দেশে ওই সব বাস আর শহরের ভিতর দিয়ে যেতে পারবে না। তবে কাটোয়া, কালনা রুটের বাস রেলসেতু-গোলাপবাগ হয়ে নবাবহাট বাসস্ট্যান্ডে যেতে পারবে।

২০২২ সালের ২ সেপ্টেম্বর হাই কোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ২০১৪ সালে কলকাতা গেজ়েটে বর্ধমান শহরের ট্রাফিক সংক্রান্ত নির্দেশিকা মান্যতা দেন। ২০১৪ সালের ৬ জুন তৎকালীন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন শহরের ভিতরে বাস চলাচল নিয়ে একটি নির্দেশিকা বার করেন। সে বছর ৩১ অক্টোবর কলকাতা গেজ়েট প্রকাশ করে জানানো হয়, শহরের ভিতরে টাউন সার্ভিস ও স্কুলবাস ছাড়া অন্য কোনও বাস চলাচল করবে না। তবে নবাবহাট বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার জন্য কাটোয়া, কালনা, নবদ্বীপ, কৃষ্ণনগর-সহ বেশ কিছু রুটের বাস রেল উড়ালপুল পার করে গোলাপবাগ মোড় হয়ে যেতে পারবে। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ডিসেম্বরে শহরের মাঝে থাকা তিনকোনিয়া বাসস্ট্যান্ড বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার আগেই শহরের পূর্ব দিকে উল্লাসে ও পশ্চিমে নবাবহাটে বাসস্ট্যান্ড খুলে দেওয়া হয়েছিল।

জেলাশাসকের নির্দেশ বাতিলের জন্য 'বর্ধমান ডিস্ট্রিক্ট বাস অ্যাসোসিয়েশন’ (বিডিবিএ) হাই কোর্টে মামলা করে। মোট ২৩টি মামলার শুনানি করে জেলাশাসকের নির্দেশ জারি রাখার জন্য সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দেশ দেয়। তার বিরুদ্ধে কয়েক জন বাস মালিক ডিভিশন বেঞ্চে পাঁচটি মামলা করেন। গত সপ্তাহে ডিভিশন বেঞ্চ সেই মামলাগুলি খারিজ করেছেন। অন্তর্বর্তী কোনও নির্দেশ থাকলেও তা খারিজ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে অভিযানে গিয়ে এআরটিও সুপ্রভাত দাস বলেন, ‘‘বাসগুলি যাতে হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে নির্দিষ্ট রুটে যাতায়াত করে, সেটাই বলা হচ্ছে।’’ মামলকারী সাজেদ আলি খান, নরোত্তম মজুমদারেরা বলেন, ‘‘প্রশাসনের কাছে আমাদের বক্তব্য জানাব। একই সঙ্গে উচ্চ আদালতে যাওয়া নিয়েও আলোচনা করা হবে।’’

শহরের ভিতরে বাস না ঢোকায় ভোগান্তিতে পড়েন অনেক যাত্রী। আলিশা, বীরহাটা, তেলিপুকুর মোড়ে বৃষ্টির মধ্যে অনেককে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। অনেকের অভিযোগ, বেসরকারি বাসগুলি আটকালেও, সরকারি বাসগুলি শহরের ভিতর দিয়েই যাতায়াত করেছে। আরটিও জানান, এসবিএসটিসি-কে হাই কোর্টের নির্দেশ জানানো হয়েছে। বর্ধমান টাউন সার্ভিস বাস মালিক সমিতির সম্পাদক বাবলু শর্মা বলেন, ‘‘যাত্রীদের ভোগান্তি হবে না। যথেষ্ট পরিমাণ টাউন সার্ভিসবাস রয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

School bus

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy