Advertisement
E-Paper

পোস্ত চাষ বন্ধে প্রচার কাঁকসায়

এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাঁকসার ক্যানালপাড় মোড় লাগোয়া এলাকা, দোমড়া, গাড়াদহ, প্রয়াগপুর-সহ কিছু জায়গায় চোলাইয়ের রমরমা কারবার রয়েছে। তার জেরে এলাকায় বা বাড়িতে নিত্য অশান্তি, এ-ও চেনা ছবি বলে জানান বাসিন্দারা।

ট্যাবলো নিয়ে প্রচার প্রশাসনের। নিজস্ব চিত্র

ট্যাবলো নিয়ে প্রচার প্রশাসনের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:৩০
Share
Save

অভিযোগ বেশি চোলাইয়ের কারবার নিয়ে। কিন্তু প্রশাসন বেশি সক্রিয়, পোস্ত চাষ বন্ধে। সম্প্রতি পোস্ত চাষ বন্ধে প্রশাসনের ট্যাবলো-প্রচার দেখে এমনই অভিযোগ করছেন কাঁকসার বাসিন্দাদের একাংশ এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বরা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাঁকসার ক্যানালপাড় মোড় লাগোয়া এলাকা, দোমড়া, গাড়াদহ, প্রয়াগপুর-সহ কিছু জায়গায় চোলাইয়ের রমরমা কারবার রয়েছে। তার জেরে এলাকায় বা বাড়িতে নিত্য অশান্তি, এ-ও চেনা ছবি বলে জানান বাসিন্দারা। কিন্তু সেই কারবার রুখতে প্রশাসনের তেমন সক্রিয় ভূমিকা দেখা যায়নি বলেই অভিযোগ। যদিও সেই কারবারের কথা স্বীকার করেনি আবগারি দফতর। তবে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে সম্প্রতি অভিযান চলে। কিন্তু, এক লিটার চোলাইও মেলেনি। আবগারি দফতরের ওসি (কাঁকসা) সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘কাঁকসায় অভিযান চালিয়ে চোলাইয়ের কোনও ঠেক মেলেনি। তবে বেআইনি ভাবে দেশি মদ বিক্রির খোঁজ পেয়েছি আমরা। এ বিষয়ে কড়া নজরদারি চলছে।’’

চোলাইয়ের খোঁজ না মেলার কারণও জানাচ্ছেন এলাকাবাসী। তাঁদের কথায়, অভিযান হবে, এমন খবর এলাকায় চাউর হয়ে গিয়েছিল আগেই। তা ছাড়া সেই অভিযান হচ্ছে দিনে-দুপুরে। তাই আগেভাগেই সতর্ক হয়ে যাচ্ছে চোলাই কারবারিরা। এলাকাবাসীর দাবি, অতর্কিতে অভিযান হলে অবশ্যই ঠেক খুঁজে পাওয়া যাবে।

চোলাই নিয়ে যেখানে এমন অভিযোগ, সেই এলাকাতেই শুক্রবার সকালে জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের ট্যাবলো দেখা যায়। তা ঘুরে বেড়ায় অজয়, কুনুর, দামোদরের পাড় লাগোয়া নানা এলাকায়। এমনকি, ‘তোমাদের করি মানা, জমিতে পোস্ত আফিম চাষ করো না/ সরকারি আদেশ বিনা, এ চাষ করা মানা/ করলে পরে হবে গো তার জেল ও জরিমানা’, এমন বার্তা দিয়ে বাউল গানের মাধ্যমে চলে পোস্ত চাষের বিরুদ্ধে প্রচারও।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একসময়ে নদীর চরে পোস্ত চাষের রমরমা ছিল। সাধারণ ভাবে, পরিণত পোস্ত ফলের খোলের চারপাশ ব্লেড দিয়ে চিরে দেওয়া হয়। সেখান থেকে সামান্য পরিমাণে আঠালো পদার্থ বার হয়। তা আফিম হিসেবে ব্যবহার করার জন্য চড়া দামে নিয়ে যায় মাদকের কারবারিরা। এমনকি, পোস্তর খোলও নেশার কাজে লাগে। অতীতে পানাগড় ও লাগোয়া জায়গায় বারবার পোস্তর খোলভর্তি বস্তাও উদ্ধার হয়েছে। এই রাজ্য তো বটেই, এমনকি ভিন্-রাজ্যের কারবারিরাও ধরা পড়েছে পানাগড়ে।

কিন্তু এলাকাবাসীর মতে, লাগাতার ধরপাকড়ের পরে গত কয়েক বছরে পোস্ত চাষের কারবারে যথেষ্টই ভাটা পড়েছে। যদিও তা একেবারে বন্ধ হয়নি বলেই অভিযোগ। শুক্রবার তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের ট্যাবলো বাসুদেবপুর, বিনোদপুর, শিবপুর, সারেঙ্গা, কুলডিহা, সিলামপুর-সহ নানা জায়গায় ঘোরে। তা দেখতে ভিড়়ও জমান এলাকাবাসী। কিন্তু তাঁদের একটা বড় অংশের বক্তব্য, পোস্ত চাষের বিরুদ্ধে যে সচেতনতা প্রচার চলছে, তা জরুরি। সুদীপ্তবাবুর কথায়, ‘‘এখন প্রচারের মাধ্যমে সচেতনতা তৈরির কাজ চলছে। এর পরেও কেউ পোস্ত চাষ করলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’

তবে এই সক্রিয়তা বেশি জরুরি চোলাইয়ের কারবার রোখার ক্ষেত্রে, মত এলাকাবাসীর। কাঁকসার সিপিএম নেতা বীরেশ্বর মণ্ডলও বলেন, ‘‘পোস্ত চাষের বিরুদ্ধে সচেতনতা প্রচার চলছে, ভাল কথা। কিন্তু এই মুহূর্তে চোলাইয়ের কারবার এলাকার মূল সমস্যা। তাই প্রশাসন এ বিষয়ে সক্রিয় হলে উপকৃত হবেন এলাকাবাসী।’’

Campaign Poppy Seed Hooch

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}