Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
দুর্গাপুর

দুঃস্থদের ২৩৩টি বাড়ির অনুমতি, ক্ষুব্ধ বিরোধীরা

পুরসভার হিসেব অনুযায়ী প্রয়োজন প্রায় ৫১ হাজার। কিন্তু কেন্দ্র প্রথম দফায় মঞ্জুর করেছে মাত্র ২৩৩টি। আদৌ সবার জন্য বাড়ি মিলবে কি না, সে নিয়ে সংশয়ে বস্তিবাসীরা। দুর্গাপুর পুরসভার অবশ্য দাবি, ধাপে-ধাপে সমস্ত বাড়ির অনুমোদনই মিলবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৬ ২৩:৫৮
Share: Save:

পুরসভার হিসেব অনুযায়ী প্রয়োজন প্রায় ৫১ হাজার। কিন্তু কেন্দ্র প্রথম দফায় মঞ্জুর করেছে মাত্র ২৩৩টি। আদৌ সবার জন্য বাড়ি মিলবে কি না, সে নিয়ে সংশয়ে বস্তিবাসীরা। দুর্গাপুর পুরসভার অবশ্য দাবি, ধাপে-ধাপে সমস্ত বাড়ির অনুমোদনই মিলবে। আপাতত যে ক’টির অনুমোদন এসেছে সেগুলি পুরসভার ৪৩টি ওয়ার্ডে ভাগ করে দেওয়া হবে।

‘সবার জন্য বাড়ি’ প্রকল্পে ২০১৫-র এপ্রিল থেকে ২০১৭-র মার্চের মধ্যে দেশের একশোটি শহরে সবার জন্য বাড়ি নিশ্চিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র। তার মধ্যে রয়েছে দুর্গাপুরও। ২০১৭ থেকে ধাপে-ধাপে দেশের বাকি শহরেও এই প্রকল্প ছড়িয়ে দেওয়া হবে। আর্থিক ভাবে অনগ্রসর বাসিন্দাদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য সমীক্ষা করেছে দুর্গাপুর পুরসভা। রান্নাঘর, শৌচাগার-সহ বাড়ি গড়ে দেওয়া হয় এই প্রকল্পে।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সবার মাথায় পাকা ছাদ নিশ্চিত করতে শহরে প্রায় ৫১ হাজার বাড়ি দরকার। তবে প্রথম ধাপে মাত্র ২৩৩টি বাড়ির জন্য অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্র। আপাতত তা ৪৩টি ওয়ার্ডে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভাগ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে।

প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, কেন্দ্র উপভোক্তাকে বাড়ি নির্মাণ বাবদ এক লক্ষ টাকা অনুদান দেবে। এ ছাড়া ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যাঙ্ক ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে প্রাপকের নিজস্ব জমিও থাকতে হবে। এখানেই আপত্তি বিরোধীদের। তাদের দাবি, বাম আমলে এই শহরে কেন্দ্রের জেএনএনইউআরএম, ভ্যাম্বে যোজনায় ভূমিহীন উপভোক্তাদের জমির ব্যবস্থা করে দিয়ে তাঁদের সুবিধা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল পুরসভা। তাই এ বারও ভূমিহীনদের জন্য পুরসভা বা রাজ্য জমির ব্যবস্থা করে দিক, দাবি তাদের। তাছাড়া প্রথমে ৬০ হাজারের উপরে বাড়ি তৈরির কথা বলে এখন যে ভাবে পুরসভা ওয়ার্ড পিছু মাত্র মাত্র ৫টি বাড়ি নির্মাণের কথা বলছে, সে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তারা। যদিও পুরসভার মেয়র পারিষদ (পূর্ত) প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরে যেমন যেমন অনুমোদন আসবে সে ভাবেই প্রকল্প এগোবে।’’

সিপিএমের দুর্গাপুর ২ পূর্ব জোনাল সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকারের দাবি, অনেক গরিব মানুষেরই নিজের জমি নেই। তাঁদের জমির ব্যবস্থা করে দেওয়ার দায়িত্ব পুরসভার। তা না হলে তাঁরা কেন্দ্রীয় একটি প্রকল্পের সুফল থেকে বঞ্চিত হবেন। তাঁর আরও দাবি, ব্যাঙ্ক ঋণ নিতে গেলে সুদ দিতে হবে উপভোক্তাকে। সেই অর্থ রাজ্য সরকার দেওয়ার ব্যবস্থা করুক। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বর্তমান পুরবোর্ড সব দিক থেকে শহরবাসীকে হতাশ করেছে। ব্যাঙ্ক ঋণের বদলে পুরসভা নিজে কতটা অর্থ দেবে, সেটা জানাক।’’ এই প্রকল্পের উপভোক্তা নির্বাচনের জন্য শাসক দলের অফিসে ফর্ম পূরণ ও জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বেছে বেছে বিরোধী কর্মী-সমর্থকদের অনেকের ফর্ম জমা নেওয়া হয়নি দাবি করে পঙ্কজবাবু বলেন, ‘‘প্রকল্পের সুফল আদৌ প্রকৃত দুঃস্থরা পাবেন কি না সে নিয়ে সংশয় আছে আমাদের।’’

পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতির দুর্গাপুর ২ পশ্চিম শহর কমিটির পক্ষে লখিরাম মুর্মু বলেন, ‘‘আমরা সম্প্রতি সমস্ত বস্তিবাসীর জন্য বাড়ি চেয়ে মেয়রের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি।’’ মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই প্রকল্পের কাজ এগোচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Central Government Durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE