প্রেমিক বলেছিলেন পেশায় তিনি পুলিশ অফিসার। প্রেমিকা এত দিন তা-ই জানতেন। কিন্তু ভাল করে খোঁজখবর করে তিনি জানতে পারেন, তাঁকে ঠকানো হয়েছে। এর পর প্রেমিকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন এবং বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ করেছেন ওই যুবতী। তার ভিত্তিতে পুলিশের হাতে গ্রেফতার অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের ঘটনা।
পুলিশ এবং আদালত সূত্রে খবর, পুলিশ অফিসার বলে পরিচয় দিয়ে এক যুবতীর সঙ্গে আলাপ-পরিচয় করেছিলেন কেতুগ্রাম থানার এক সিভিক ভলান্টিয়ার। ক্রমশ তাঁদের মেলামেশা বাড়ে। হঠাৎ এক দিন প্রেমিকা জানতে পারেন প্রেমিকের পেশা। তিনি বিশ্বাসভঙ্গ এবং শারীরিক সম্পর্কের পরে বিয়ের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগে প্রেমিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন থানায়। শনিবার অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁকে দু’দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় বর্ধমানের সিজেএম আদালত।
অভিযুক্তের বাড়ি কেতুগ্রাম থানা এলাকাতেই। কেতুগ্রাম থানার সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত বিষয় দেখাশোনা করতেন তিনি। গত শুক্রবার বর্ধমান শহরের কার্জন গেট এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে মহিলা থানার পুলিশ।
জানা যাচ্ছে, ৩০ বছরের এক যুবতী তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগকারিণী কর্মসূত্রে ভিন্রাজ্যে থাকেন। তাঁর দাবি, ২০২৩ সালের শেষের দিকে ফেসবুকে অভিযুক্তের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। কিন্তু ওই যুবক নিজের নাম এবং পেশা গোপন করেছিলেন। তিনি নাম বলেছিলেন সুমন মণ্ডল। এবং পেশায় পুলিশ বলে জানান। পরে দু’জনের মধ্যে প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দু’জন বেশ কয়েক বার দেখা করেন এবং ঘনিষ্ঠ হন।
অভিযোগকারিণীর দাবি, গত বছরের ডিসেম্বর তাঁকে হুগলির চন্দননগরে নিয়ে যান প্রেমিক। একটি হোটেলে ওঠেন তাঁরা। সেখানে শারীরিক সম্পর্ক হয়। বলেছিলেন, জলদি বিয়ে করবেন। কিন্তু নানা অছিলায় পরে বিয়ের প্রসঙ্গ এড়িয়ে যেতে থাকেন যুবক। এতে তাঁর সন্দেহ হয়। তিনি খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, প্রেমিক আদতে বিবাহিত এবং পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার। তা ছাড়াও নামও ভুল বলেছেন তাঁকে। আজাহার বিবাহিত। সে আদপে সিভিক ভলান্টিয়ার। যুবতীর কথায়, ‘‘পুলিশ লেখা বাইক নিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়াত ও। ওর দৌরাত্ম্যে এলাকাবাসী মুখ খুলতে চান না। আমি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করি।’’
আরও পড়ুন:
পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৯ ধারায় মামলা রুজু করেছে ধৃতের বিরুদ্ধে। তা ছাড়া বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক স্টেট মেডিসিন বিভাগে শারীরিক পরীক্ষার জন্য অভিযোগকারিণীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু মেডিকেল পরীক্ষা করাতে তিনি অস্বীকার করেন বলে খবর। পরে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তাঁর গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করিয়েছে পুলিশ। ধৃতের শারীরিক পরীক্ষা করানোর জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিক। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের সুপারকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন সিজেএম।