Advertisement
০৫ মে ২০২৪
প্রসব হাসপাতাল চত্বরেই
Guskhara

প্রসূতিকে ফেরানোর অভিযোগ

তাঁর পরিবারের দাবি, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নার্চ, চিকিৎসকের কাছে বারবার আবেদন করেও চিকিৎসা মেলেনি।

গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিক্ষোভ পরিজনেদের।

গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিক্ষোভ পরিজনেদের। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আউশগ্রাম শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৫৬
Share: Save:

প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন মহিলা। অভিযোগ, পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁকে ভর্তি করে না নিয়ে বর্ধমানে ‘রেফার’ করে দেওয়া হয়। এমনকি, রোগীর অবস্থা বিবেচনা না করে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বারও করে দেওয়া হয়। মিনিট পনেরোর মধ্যেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে থাকা বিশ্রামকক্ষে প্রসব করেন ভাতারের ওই মহিলা। তাঁর পরিবারের দাবি, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নার্চ, চিকিৎসকের কাছে বারবার আবেদন করেও চিকিৎসা মেলেনি। প্রসব হয়ে যাওয়ার পরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। তার পরে ওই প্রসূতি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়, দাবি তাঁদের। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার দেবতনু মাইতির অবশ্য দাবি, “প্রসূতির শারীরিক অবস্থা ভাল ছিল না। তাই তাঁকে রেফার করা হয়। তবে প্রসবের সময়ে কেন তাঁকে লেবার রুমে আনা গেল না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, ‘‘ঘটনার কথা শুনেছি। বিএমওএইচের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে ভাতারের মাহাতা পঞ্চায়েত এলাকার ঝর্না গ্রামের বাসিন্দা বছর তিরিশের পিঙ্কি হাওলাদারকে তাঁর শাশুড়ি ছন্দাদেবী এবং কয়েকজন প্রতিবেশী মিলে একটি টোটোয় করে সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসেন। রবিবার রাত থেকেই তাঁর প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়েছিল, দাবি তাঁদের।

প্রতিবেশী সৌরভ বিশ্বাসের অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছনোর সময় যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন পিঙ্কিদেবী। তাঁকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভিতরে নিয়ে যেতেই কর্তব্যরত নার্স দুর্ব্যবহার শুরু করেন। তাঁদের বাইরে অপেক্ষা করতে বলা হয়। পরে এক জন চিকিৎসক এসে প্রসূতিকে পরীক্ষা না করেই বর্ধমানে ‘রেফার’ করে দেন, দাবি তাঁদের। বর্ধমান যাওয়ার জন্য সেই সময়ে হাসপাতালে কোনও গাড়ি ছিল না। সে কথা জানানোর পরেও ওই প্রসূতিকে বার করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের সঙ্গে এসেছিলেন সান্ত্বনা বিশ্বাস নামে এক মহিলাও। নিজেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাই-মা দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘রোগীর অবস্থা খারাপ হচ্ছে বলা সত্ত্বেও কথায় কান দেননি ওই নার্স। বর্ধমান নিয়ে যাওয়ার জন্য ১০২ নম্বরে ডায়াল করে গাড়ি ডাকা হয়। কিন্তু গাড়ি আসার আগেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চত্বরে বিশ্রামাগারে প্রসব হয়ে যায়।’’

১৫ মিনিট পরেই যাঁর স্বাভাবিক প্রসব হচ্ছে, তাঁকে পরীক্ষা না করে কেন বর্ধমানে রেফার করা হল, প্রশ্ন তুলেছেন রোগীর আত্মীয়েরা। তাঁদের অভিযোগ, এতে রোগী এবং সদ্যোজাতের ক্ষতি হতে পারত। পিঙ্কিদেবীর শাশুড়ি ছন্দাদেবীর দাবি, ‘‘এটা বৌমার দ্বিতীয় সন্তান। রবিবার রাত থেকেই কষ্ট পাচ্ছিল। কিন্তু হাসপাতাল কিছু না শুনে, পরীক্ষা না করেই বার করে দিল!’’

অভিযুক্ত নার্স যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দাবি, প্রসবের পরে মা ও সদ্যজাতকে ভর্তি করানো হয়। সাফাই করা হয় বিশ্রামাগার। ঘটনার কথা শুনে গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান আউশগ্রাম ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রাজু সানা। রোগীর পরিজন, সংশ্লিষ্ট নার্স এবং চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তাঁর দাবি, “রোগীর পরিজনদের লিখিত ভাবে অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

pregnant primary health center Guskhara
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE